রিয়াদ / নভেম্বর 7, 2018
নেপাল দেশটাকে বিভিন্নভাবে ঘুরে আসা যায়। কেউ শুধু ট্যুরিস্ট স্পটগুলো ঘুরে দেখে আসে, কেউ আবার র্যাফটিং, বাঙ্গি জাম্প, প্যারাগ্লাডিং আর স্পা’র প্রলোভনে নেপাল যায়, আবার কেউ সরাসরি অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প আর হিমালয়ের কোল থেকে ঘুরে আসে। কিভাবে বন্ধুবান্ধব-ফ্যামিলি নিয়ে বা একা ট্যুরিস্ট স্পটগুলো ঘুরে আসা যায় এবং নেপাল নিয়ে কিছু খুঁটিনাটি ও পরামর্শ নেপাল ভ্রমণ গাইড সিরিজে জানানোর চেষ্টা করব।
নেপালে আমরা দুই ভাবে ভ্রমণ করতে পারি আকাশপথে (বিমানে) বা সড়কপথে (ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিয়ে)। বিমান যোগে কিছুটা সহজ তাই এটি বর্তমানে খুব জনপ্রিয় কিন্তু সড়কপথে একটু কষ্ট হলেও বাজেট ট্রাভেলাদের জন্য পছন্দের একটা মাধ্যম। আমরা এই পোষ্ট দুইটি আলোচনা করব।
বাংলাদেশ থেকে বিমানে নেপাল ভ্রমণ খুব সহজ এবং জনপ্রিয়। বাংলাদেশ-নেপাল রোডে যে সব বিমান নিয়মিত Biman Bangladesh Airlines (Everyday); Us-Bangla Airlines (Sunday, Tuesday, Thursday) আসা-যাওয়া করে।
সার্কভুক্ত দেশ থেকে নেপাল অন-এরাইভাল (অর্থ্যত তাৎক্ষণিক) ভিসা দেয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে নেপালের এমব্যাসিতে একটি ফর্ম পূরণ করে পাসপোর্ট জমা দিয়ে পরের দিন ভিসা সহ নেওয়া যায়। অথবা আপনি চাইলে সরাসরি নেপালের ত্রিভূবন বিমান বন্দরে হাজির হয়ে একটি ফর্ম পূরণ করে ভিসা’র আবেদন করে তাৎক্ষণিক ভাবে ভিসা নিতে পারেন। ভিসার জন্য ১টি বোর্ডি কার্ড, ১টি ভিসা ফর্ম আর ১ কপি ছবি লাগে, অনেক সময় এয়ারহোস্টসরা এগুলো বিমানে দিয়ে থাকে এইক্ষেত্রে বিমান বসে ফিলাপ করে নিলে আপনার সময় বাঁচবে।
নেপাল ত্রিভূবন এয়ারপোর্ট থেকে নেমে ভিতরে গেলেই দেখবেন সার্কভুক্ত দেশের লাইনে দাড়িয়ে যান সাথে এক বছরে একবার ভিসার ফি ছাড়া ভিসা লাগিয়ে নেন ১ মাসের।
নেপালে যদি কেউ সড়কপথে ভ্রমণ করতে চান সেক্ষেত্রে প্রথমে পাসপোর্ট ভারতের ভিসা থাকতে হবে মানে আগে ভারতে গিয়েছেন সেটার প্রমাণ থাকতে হবে। তারপর নেপালের ভিসা থাকতে হবে বা নিতে হবে। ধরে নিলাম আপনি আগে ভারতে একবার ভ্রমণ করে আসছেন। তাহলে আপনার এখন নেপালের ভিসা জন্য আবেদন করা করতে হবে বা নিতে হবে।
প্রথমে আপনার যেসব পেপারস রেডি করে লাগবে জাতীয় পরিচয় পত্র/জম্ম নিবন্ধন এর কপি; ২ কপি ছবি; নাগরিক সনদপত্রের কপি, ঢাকা টু বুড়িমারি বাস রির্টান টিকিটের কপি; নেপালের হোটেল বুকিং কনফার্মেশন কপি। তারপর নেপাল ভিসা এম্বাসির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ফর্ম ডাউনলোড করে ফিলাপ করে নিবেন। এবার ফর্ম আর সকল পেপারস এবং মেইন পাসপোর্ট এর সাথে জমা দিবে নেপালের এম্বাসিতে। আপনার সব কিছু ঠিক থাকলে ১/২ দিনের মধ্যে ভিসা পেয়ে যাবেন।
ধরে নিলাম ৩০ দিনের জন্য নেপালের ভিসা পেয়ে গেলেন। এবার আপনাকে লাগবে ভারতের ট্রানজিট ভিসা। ভারত সরকার ভুটান এবং নেপালের জন্য সাধারণত ১৫/৩০ দিনের ট্রানজিট ভিসা দিয়ে থাকে।
প্রথমে আপনার যেসব পেপারস রেডি করে লাগবে জাতীয় পরিচয় পত্র/জম্ম নিবন্ধন এর কপি; ২ কপি ছবি (২X ২
); নাগরিক সনদপত্রের কপি, বিদ্যুত বিলের ফটোকপি, ব্যাংক স্টেইটমেন্ট (১৫০ ডলার সমমূল্যের ব্যালেন্স থাকা জরুরি); ৬০০ টাকা ভিসা ফি; ঢাকা টু বুড়িমারি বাস রির্টান টিকিটের কপি; নেপালের হোটেল বুকিং কনফার্মেশন কপি। তারপর ইন্ডিয়া ভিসা এম্বাসির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ফর্ম ফিলাপ করে ডাউনলোড করে নিবেন। এবার ফর্ম আর সকল পেপারস এবং মেইন পাসপোর্ট এর সাথে জমা দিবেন গুলশান-১ ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার(IVAC)। আপনার ডেলিভারি স্লিপের তারিখ অনুযারী ১৫/৩০ দিনের ইন্ডিয়া ট্রানজিট ভিসা সংগ্রহ করে নিন।
নেপালের জন্য ভারতীয় ট্রানজিট ভিসা পাওয়ার মূল শর্ত আগে একবার ইন্ডিয়া ভ্রমণ করা থাকতে হবে এবং ভারতের ট্রানজিট জন্য এপ্লাই করার পূর্বে নেপালের ভিসা থাকতে হবে বা করে নিতে হবে। আর সকল কাগজপত্রে কোন ভুল না থাকলে কোন চিন্তা ছাড়াই পেয়ে যাবেন সড়কপথে ভারত হয়ে নেপাল যাওয়ার ট্রানজিট ভিসা।
দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা করব কিভাবে বিমানে বা বাই রোডে কাঠমান্ডুর অবস্থান করবেন।
অবশ্যই এই পর্ব আপনাদের কেমন লেগেছে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আর হ্যাঁ, আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে জানাবেন।
আমাদের নেপাল ভ্রমণ গাইড সিরিজ পোস্ট এর এটা ১ম পোস্ট। এর পরের পোষ্ট পোস্ট এর লিঙ্কঃ
FILED UNDER :ভ্রমণ
Comments are closed.
Comments