নেপাল ভ্রমণ গাইড (শেষ পর্ব)

আমরা নেপাল ভ্রমণ গাইড এর গত পর্বে আলোচনা করেছি কিভাবে পোখারা শহরের আশেপাশে সাইটসিয়িং করবেন, এডভেঞ্চার একটিভিটি সারাংকোট ঘুরা নিয়ে কিছু পরমার্শ এবং এডভেঞ্চার একটিভিটি নিয়ে ধারণা। আজকে নেপাল ভ্রমণ গাইড সিরিজ শেষ পর্বে আলোচনা করব কিভাবে পোখারা শহর থেকে কাঠমান্ডু আসবেন, মানাকামানা ক্যাবল কার নিয়ে কিছু পরমার্শ এবং পোখারা থেকে কিভাবে সরাসরি কাকরভিটা বর্ডার হয়ে বাংলাদেশ আসার কাহিনী।

পোখারা থেকে কাঠমান্ডু বাই বাসঃ

যেহেতু আপনি কাঠমান্ডু থেকে পোখারা গেলেন তাই পোখারা থেকে কাঠমান্ডু কিভাবে ফিরবেন নতুন করে বলার কিছু নেই। একি কথা সকল বাস একযোগে সকাল ৭ থেকে ৭.৩০ মধ্যে ছেড়ে যায় কাঠমান্ডু উদ্দ্যেশে। বাসের কোন সাইটে বসবেন এবার আপনি বুঝে যাবেন।

মানাকামানা ক্যাবল কার

কিন্তু একটা কথা বলা হয়নি পোখারা যাওয়া-আসার মাঝপথে মানাকামানা ক্যাবল কার পড়বে।ফ্যামিলি সাথে না থাকলে মানাকামানা ক্যাবল কার মিস করা ঠিক হবে না।

মানাকামানা ক্যাবল কারঃ

নেপাল রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখারা বা পোখারা থেকে কাঠমান্ডু আসা-যাওয়ার পথে মানাকামানা মন্দির অবস্থিত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, টুরিস্ট বাস আপনাকে মাঝপথে নামিয়ে দিলেও ঐখান থেকে আর তুলবে না। এক্ষেত্রে আপিনাকে লোকাল বাস ফিরতে হবে, তবে এই লোকাল বাস বাংলাদেশের লোকাল বাস না, পথে যাত্রী না পেলেও থামবে না। “টুরিস্ট বাস” ছাড়াও অনেক বাসে “টুরিস্ট কার” লেখা থাকে মানাকামানা থেকে ফেরার সময় এমন একটা বাসে উঠে পড়বেন।

মানাকামানা ক্যাবল কার
ছবিঃ মানাকামানা ক্যাবল কার

মানাকামানা ক্যাবল কারে উঠতে হলে নেপালি দুই হাজার রূপি লাগবে। আর সাথে কাঠমান্ডু থেকে পোখারা বা পোখারা থেকে কাঠমান্ডু যাওয়ার পুরো যাত্রা পথে সড়কের পাশে ত্রিশূলি নামে যে পাথুড়ে নদীটা দেখবেন, মানাকামানা নামলে এই নদীর ঠান্ডা পানিও ছোঁয়া পাবেন। সাথে লোকাল গাড়ীতে উঠলে নেটিভ নেপালিদের সাথে মেশার সুযোগ পাবেন।

আসতে আসতে ৪-৫ টা বাজবে আর মানাকামানা মন্দির ঘুরে আসেন কয়েকঘন্টা বেশি লাগতে পারে। এসে থামেল/নিউ বাস স্টপ যেকোন একটা হোটেল উঠে ফ্রেস হয়ে নিন। আর রাতে টুকটাক কিনাকেটা থাকলে করে নিন।

পুনারায় কাঠমান্ডু/থামেলঃ

নেপাল টুরিস্ট হার্ব এলাকায় কিভাবে থাকবেন কিভাবে ঘুরবেন তা প্রথমে আলোচনা করা হয়েছে তাই নতুন করে বলার কিছু নেই।আপনার রির্টান টিকেট মোতাবেক থামেল থেকে ত্রিভূবন এয়ারপোর্ট এসে বাংলাদেশ উদ্দ্যেশে যাত্রা করুণ।

যদি আপনি বাংলাদেশ থেকে ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিয়ে বাই রোডে নেপাল ভ্রমণ করে থাকেন আর মানকানামা ক্যাবেল কার ছড়তে না চান এই ক্ষেত্রে আপনি সরাসরি পোখারা থেকে কাকরভিটা বর্ডার যাওয়ার সরাসরি গাড়ী পাবেন। কাকরভিটা বর্ডার এবং পানিট্যাংকি বর্ডার সকল ফর্মালিটি শেষ করে আগের মত বা বাংলাদেশের উদ্দ্যেশে যাত্রা করুন।

সর্বশেষ আমি যতটুকু পারি কাঠমান্ডু, পোখারা, নাগারকোট ও সারাংকোট এর ট্যুরিস্ট স্পটগুলো কিভাবে ঘুরে দেখতে হয় এবং  কিভাবে এডভেঞ্চার একটিভিটি করতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করলাম। এখন আপনাদের কাজ হলো প্রথমে আপনারা বিমানে যাবেন নাকি বাই রোডে নেপাল ভ্রমণ করবেন সেটা ফিক্সড করা এবং যেভাবে যান তার জন্য সকল পর্মালিটি শেষ করা। তারপর কয় দিন থাকবেন আর কোন কোন জায়গাই ঘুরবেন সাথে কোন কোন এডভেঞ্চার করবেন তা ফিক্সড করে সুন্দর একটি প্লানিং তৈরি করে একা কিংবা বন্ধুবান্ধব বা ফ্যামিলি নিয়ে রাওনা হিমালয়ের রানী নামে খ্যাত সেই নেপাল। ইনশাআল্লাহ্‌ নেক্সট হিমালয়ের বিভিন্ন পর্বত নিয়ে আলোচনা করব সাথে নেপালের ভ্রমণ আরো সহজ করতে মাঝে মাঝে আপনাদের জন্য কিছু টিপস নিয়ে আসব।

আমাদের সবগুলো পর্ব দেখে আপনার কেমন লেগেছে জানাতে ভুলবেন আর কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই জানাবেন। আপনি যদি কোন ট্রাভেল হেল্প নিয়ে নেপাল ভ্রমণ করতে চান এইক্ষেত্রে TourMate হেল্প নিতে পারেন।

অবশ্যই এই পর্ব আপনাদের কেমন লেগেছে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আর হ্যাঁ, আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে জানাবেন।

আমাদের নেপাল  ভ্রমণ গাইড সিরিজ পোস্ট এর এটা ৪র্থ পোস্ট। এর আগে বা পরের পোস্ট এর লিঙ্কঃ

Similar Posts