উত্তরবঙ্গের অন্যতম দর্শনীয় স্থান : রবীন্দ্র কাচারী বাড়ি

বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে “রবীন্দ্র কাচারী ” বাড়ি অন্যতম। রবীন্দ্র কাচারী বাড়ি রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর হিসাবেও পরিচিত যা রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলার অন্তর্গত শাহজাদপুরে অবস্থিত। এটি ছিল ঠাকুর পরিবারের আড়ম্বরপূর্ণ বাড়ি এবং রাজস্ব অফিস।

১৮৪০ সালে, কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা দ্বারকানাথ ঠাকুর এই সম্পত্তিটি ইংরেজদের থেকে কিনেছিলেন; সেই সময়ে জীবনের ব্যস্ত দিক থেকে বাঁচতে রবি-ঠাকুর প্রায়ই এই স্থানটি পরিদর্শন করতেন এবং অবসরের কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্যময় সময় কাটাতেন। ১৮৯০ থেকে ১৮৯৬ মোট ৭ বছর  তিনি জমিদারির কাজে শাহজাদপুরে আসা-যাওয়া এবং অবস্থান করেছেন। এখানে থাকাকালীন তিনি অনেক অসাধারণ কালজয়ী  সাহিত্যকর্ম  রচনা করেছিলেন। এই জায়গাটি পরিদর্শন করার মাধ্যমে, দর্শনার্থীরা যেমন  তৎকালীন জমিদারদের জীবনধারা ও কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে  পারবেন তেমনি রবি-ঠাকুরের জীবদ্দশায় তার ব্যবহারকৃত বিভিন্ন জিনিসও দেখে আসতে পারবেন ।

শাহজাদপুরে থাকাকালীন সময়ে রবীন্দ্রনাথের রচিত বিশেষ রচনাবলী
শাহজাদপুরে থাকাকালীন সময়ে রবীন্দ্রনাথের রচিত বিশেষ রচনাবলী

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 


যেভাবে যাবেনঃ

আপনি বাস অথবা  ট্রেনের মাধ্যমে স্থানটিতে যেতে পারেন। এছাড়া কেউ চাইলে ব্যক্তিগত গাড়ি করেও যেতে পারেন। ঢাকার গাবতলী থেকে ঢাকা-পাবনা হাইওয়ে অনুসরণ করতে হবে। সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বিসিক পর্যন্ত যেতে হবে। রাস্তায় যানযট না থাকলে ৩.৫ ঘন্টা থেকে ৪ ঘন্টার মধ্যেই পৌছাতে পারবেন। বিসিক থেকে যে কাউকে জিজ্ঞাস করলেই রবীন্দ্র কুঠি বাড়ির রাস্তা দেখিয়ে দিবে।

বাস সার্ভিসঃ

বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের বাস গুলো মুলত ঢাকার কল্যানপুর,টেকনিক্যাল, গাবতলী থেকে ছেড়ে যায়। আপনি টেকনিক্যালেই বাস গুলোর কাউন্টার পেয়ে যাবেন। ঢাকা পাবনা রুটে যেসব বাস চলাচল করে তার মধ্যে শাহজাদপুর ট্রাভেলস,আলহামরা, সি-লাইন,পাবনা এক্সপ্রেস ইকোনোমি ক্লাসে ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে। ভাড়া পড়বে এসিঃ৬০০-৮০০ টাকা/জন প্রতি ,নন এসিঃ৪০০ টাকা/জন প্রতি। উল্ল্যেখ্য শাহজাদপুর ট্রাভেলস স্ক্যানিয়া বাসের মাধ্যমে বিজনেস ক্লাসে সার্ভিস দিয়ে থাকে। আপনি উল্লেখিত বাসের  কাউন্টারে যেয়ে শাহজাদপুর পর্যন্ত টিকিট বুকিং করবেন।এরপর বাসে ওঠার পর সুপারভাইজার কে অবহিত করবেন যে আপনি শাহজাদপুর বিসিকে নেমে যাবেন। যদি যানজট না থাকে  তাহলে বাসে প্রায় ৪-৪.৫ ঘন্টা লাগবে। যাত্রাপথে বাসগুলো সিরাজগঞ্জের হাটিকুম্রুলে অবস্থিত ফুড ভিলেজে যাত্রা বিরতি দিয়ে থাকে। বিসিক এ নেমে রিক্সা করে রবীন্দ্র কুঠি বাড়ি যেতে হবে । এতে রিক্সা ভাড়া ২০-৩০ টাকা লাগবে ।

 ট্রেন সার্ভিসঃ

ঢাকা রাজশাহী রুটে যেসব আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে যেমনঃ পদ্মা এক্সপ্রেস,সিল্ক সিটি  এসব ট্রেনে করে আপনি যেতে পারেন। এর জন্য অনলাইনে অথবা কমলাপুর কাউন্টার থেকে টিকিট বুকিং করতে পারেন। অনলাইন এ বুকিং এর ক্ষেত্রে মূল ভাড়ার সাথে  অতিরিক্ত ২০ টাকা  ব্যাংক চার্জ দিতে হবে। এছাড়া আপনি চিত্রা ,লালমনি এক্সপ্রেসের মাধ্যমে ও যেতে পারেন। আপনাকে উল্লাপাড়া কাউন্টার পর্যন্ত টিকিট বুক করতে হবে ।  ভাড়া পড়বে শোভন চেয়ারঃ ২৪০-২৪৫ টাকা/জন প্রতি, স্নিগ্ধাঃ৪৫০-৪৭০ টাকা/জন প্রতি।

উল্লাপাড়া স্টেশন এ নেমে আপনাকে সি এন জি এর মাধ্যমে শাহজাদপুর বিসিক পর্যন্ত আসতে হবে । সি এন জি তে জন প্রতি ৩০ টাকা ভাড়া নিবে। তারপর একই ভাবে রিক্সা করে রবীন্দ্র কুঠি বাড়ি যেতে হবে ।

থাকবেন কোথায়ঃ

ভ্রমনের আগে যে বিষয় টা সর্বপ্রথম আমাদের মাথায় আসে তা হচ্ছে থাকার জায়গা। শাহজাদপুরেই আপনি বিভিন্ন আবাসিক হোটেল পেয়ে যাবেন । হোটেল ভাড়াও হাতের নাগালের মধ্যেই থাকবে।আবাসিক হোটেল গুলোর মধ্যে সুইটি আবাসিক, হোটেল মোহনা,সিরাজ হোটেল অন্যতম। তাছাড়া থাকার জায়গার পাশাপাশি ভালো খাবার হোটেলের ও ব্যবস্থা আছে। উল্লেখ্য এখানকার মিষ্টি জাতীয় খাবার ও ঘি অনেক জনপ্রিয়।

 

Similar Posts