টেলিপ্যাথি
টেলিপ্যাথি প্রথম আবিষ্কার ও গবেষণাঃ টেলিপ্যাথি শব্দটি ১৮৮২ সালে ‘সোসাইটি ফর ফিজিক্যাল রিসার্চ ‘- এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ফ্রেডরিখ ডব্লিউ এইচ মায়াস সর্বপ্রথম আবিষ্কার ও গবেষণা করেন। এরপরে আরো অনেক গবেষণা চললেও জোড়ালো ভাবে গবেষণা শুরু করে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক এস.জি. সোয়াল। তিনি প্রায় একশ ষাট জনকে নিয়ে গবেষণা করেন। প্যারাসাইকোলজি এর ক্ষেত্রে, টেলিপ্যাথি আর ইউএসপি সাই-গামা ক্যাটাগরিতে পড়ে। টেলিপ্যাথি ক্ষমতা নিয়ে অনেক গবেষণা হলেও বিজ্ঞানীরা এখনো আসল রহস্য উদঘাটন করতে পারে নি। তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা মানুষের এই ক্ষমতার একটা নির্দিষ্ট সীমা আছে। যারা এই সীমার উপরে আছেন তারা নিতান্তই সুপার ন্যাচারাল ক্ষমতা সম্পন্ন।
টেলিপ্যাথির প্রকারভেদঃ টেলিপ্যাথি তিন ভাগে ভাগ করা যায়-
১. দৈহিক- ক্ষুধাবোধ, ব্যাথা,অসুস্থতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে।
২. মানসিক-দুটি প্রাণীর মধ্যে কোন প্রকার শারীরিক মাধ্যম ব্যতিরেকে যোগাযোগ ঘটে।
৩.আবেগিক- প্রাণীগত বিভিন্ন ব্যাখ্যাতীত ধরণের অবসাদ,ভয় বা উত্তেজনা অনুভব করতে পারে।
![](https://banglavibe.com/wp-content/uploads/2020/07/237230-500x333-telepathy-concept.jpg)
টেলিপ্যাথি পরীক্ষাঃ গবেষণার ফলাফল হতে দেখা যায় যে জমজ সন্তানারে জন্মের আগ থেকেই একসাথে থাকে বলে তাদের অনেকের মধ্যেই টেলিপ্যাথি কাজ করে।প্রথম দিকে একজন ব্যক্তির মধ্যে টেলিপ্যাথি স্বতঃপ্রবৃত্ত দেখা দেয়। চর্চার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার টেলিপ্যাথি ক্ষমতা বাড়াতে পারেন।টেলিপ্যাথি ক্ষমতা আপনার আছে নাকি তার পরীক্ষা করারও উপায় আছে।
একটি বিশেষ ধরণের কার্ডের মাধ্যমে এ পরীক্ষা করা হয়। প্রত্যেকটি কার্ডেই বিভিন্ন ছবি আঁকা থাকে। যেমনঃ বৃত্ত, বর্গ,তারা ইত্যাদি। যার টেলিপ্যাথি পরীক্ষা করা হবে তার সামনে এই কার্ডের উল্টা পিঠ ধরা হবে যাতে সে দেখতে না পায় যে কার্ডে কি ছবি আঁকা আছে। এরপর তাকে প্রশ্ন করা হয় কার্ডে কি ছবি আছে। যদি সেই ব্যক্তি ২৫ টি কার্ডের মধ্যে ১০ টি কার্ডের ছবি চিহ্নিত করতে পারেন তবে তার টেলিপ্যাথি ক্ষমতা আছে। যদি আরও বেশি চিহ্নিত করতে পারেন তবে তার টেলিপ্যাথি ক্ষমতা আরো বেশি। এই পরীক্ষাটি একাধিক বার করা হয় যাতে প্রথমবারে কাকতালীয় ভাবে কোন কার্ডের ছবি সঠিকভাবে সে বলতে না পারে।যে কোন ব্যক্তি বারবার কার্ডের পরীক্ষা করে তার টেলিপ্যাথি ক্ষমতা বাড়াতে পারেন। ছবির বদলে বর্ণ,সংকেত,রঙ ইত্যাদি দিয়েও বারবার পরীক্ষার মাধ্যমে এরকম সাইকিক ক্ষমতা অর্জন করা যায়।
টেলিপ্যাথি ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়ঃ টেলিপ্যাথি ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় হলো একটি কক্ষে দুইজন ব্যক্তি বসে থাকবে। একজন প্রেরক অন্যজন প্রাপক। দুজনের কেউ কোন বিষয় নিয়ে চিন্তা করবে না। তারা দুজনেই একে অপরের পিঠের দিকে মুখ দিয়ে বসে থাকবে যাতে কেউ কারো মুখ দেখতে না পায়। একটা নির্দিষ্ট সময় প্রেরক কোন কার্ড,ছবি বা কিছু চিন্তা করবে আর গ্রাহক সেই একউ কার্ড, ছবি নির্বাচন করবে অথবা প্রেরক যে বিষয়ে চিন্তা করছে তা বলতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে এভাবে চর্চা করতে থাকলে অনেকেই তার টেলিপ্যাথি ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি করতে পারে।
এছাড়াও মনোসংযোগ বাড়াতে হবে। যে ব্যক্তির সাথে আপনি টেলিপ্যাথি করতে চান তার সাথে চলাচল করুন, তার চিন্তা,ভাবনা,ধ্যান ধারণা নিয়ে ভাবুন। নিজে ধ্যান করুন। এভাবে আপনি অনেক কিছুই কাবু করতে পারবেন। আপনার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জাগ্রত করতে পারবেন।
টেলিপ্যাথির কিছু ঘটনাঃ
১.কথিত আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা ও ব্রিটেন এই টেলিপ্যাথি নিয়ে বিশেষ গবেষণা করেছিল। এবং আজও মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে এক বিশেষ স্থান রয়েছে এই টেলিপ্যাথির যাকে বলে “সাই-এজেন্ট”।
২.১৯৪০ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেবি রাইন তার স্ত্রী লুসিয়া রাইনের উপর ৫০ টি পরীক্ষার মধ্যে ৩৩ টিতে সফল হন।