mohammadrifat / মে 4, 2020
সবাই সবসময়ই আমাদেরকে বলে চিন্তা করে কাজ করতে। কোনো কিছু করার আগে চিন্তা করে শুরু করাটা অবশ্যই বুদ্ধিমান এর কাজ। কিন্তু কখনো কখনো এই চিন্তা যখন আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখনি শুরু হয় নানা সমস্যা। এই অতিরিক্ত চিন্তা আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। একই সাথে আমাদেরকে নতুন কিছু করা থেকেও দূরে ঠেলে দেয়। অনেক ডাক্তারদের মতে নিদ্রাহীনতা সহ অনেক মানসিক রোগের কারণ অতিরিক্ত চিন্তা করা। তবে কিছু সাধারণ পন্থা অবলম্বন করে আমরা চাইলেই আমাদের অতিরিক্ত চিন্তা করার সমস্যা কে কমিয়ে আনতে পারি। চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক।
আপনি যদি অতিরিক্ত চিন্তা করার এই অভ্যাস থেকে বের হতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে বুঝতে হবে কখন আপনি অতিরিক্ত চিন্তা করছেন। যখনি মনে হবে আপনি কোনো একটি বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করছেন তখনি আপনাকে থামতে হবে আর বুঝার চেষ্টা করতে হবে যে কখন আপনি অতিরিক্ত চিন্তা করছেন। সচেনতন ভাবে চিন্তা গুলোকে পর্যবেক্ষণ করা থেকেই আপনি ধীরে ধীরে নিজের চিন্তার উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে পারবেন।
মাত্রাতিক্ত চিন্তার পিছনে সবসমই একটা জিনিস থাকে তা হচ্ছে ভয়। আমরা যখনি কোনো একটা বিষয় নিয়ে এর ভুলগুলো ভাবতে শুরু করি তখনি আমরা ভয় এর এক ফাঁদে পরে যাই আর তা থেকে চিন্তার শাখা-প্রশাখা গজাতে থাকে। তাই যখনি মনে হবে আপনি এই চিন্তার ফাঁদে পরে যাচ্ছেন তখন সচেতন ভাবে থামার আর চিন্তা গুলোকে কোন জিনিস গুলো ঠিক আছে সে দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
যখনি মনে হবে আপনি কোনো কিছু নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করছেন তখন চেষ্টা করুন নিজের পছন্দের কোনো কাজ করতে। ধরা যাক আপনি আঁকাআঁকি করতে পছন্দ করেন।তাহলে চেষ্টা করুন নিজের সাথে সবসময় একটি পেন্সিল আর কাগজ রাখতে। যখনই মনে হবে চিন্তা নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাচ্ছে তখন থেমে আঁকাআঁকির দিকে মনোযোগ নিয়ে যান।
যখন মনে হবে কোনো কিছু আপনার অতিরিক্ত চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তখন বিষয়টিকে ভিন্ন কোনো দিক থেকে দেখার চেষ্টা করুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন যে বিষয়টি আসলেই অতটুকু গুরুত্বপূর্ণ কিনা যতটুকু আপনি দিচ্ছেন। এই একটি প্রশ্ন আপনার চিন্তাকে অন্য কোনো দিকে ঘুরিয়ে দিতে পারে।
নিখুঁত ভাবে কাজ করা নির্ধিদ্বায় ভালো গুন। কিন্তু আমরা যখন সবসময় সব কাজে নিখুঁত হওয়ার চিন্তা করা শুরু করি তা বরং আমাদেরকে কাজটা না করার দিকে নিয়ে যায়। তাই আমাদের বুঝার চেষ্টা করতে হবে যে মানুষ মাত্রই ভুল। তাই সবসময় নিখুঁত ভাবে করার থেকে আমাদেরকে কাজটি করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
আপনি একবার কোনো একটি কাজ করতে পারেননি দেখে যে কখনো পারবেন না তা কিন্তু নয়। তাই নতুন কিছু করতে যেয়ে আগের কথা চিন্তা করে ভয় না পেয়ে বরং কাজটি করার দিকে মনোযোগ দিন। একটি নতুন সুযোগ মানে সবকিছু নতুন ভাবে শুরু করার আর একটি সুযোগ তাই আগের কথা ভেবে নতুন সুযোগকে হাতছাড়া করা বুদ্ধিমানের কাজ না।
কোনো কাজ করতে গেলে শুরুতেই একটি সময় ঠিক করে ফেলুন যেই সময়ের ভিতরে আপনাকে কাজটি শেষ করতে হবে। এমন কি কোনো কিছু চিন্তা করতে হলেও নিজেকে একটি সময় বেঁধে দিন যে আপনি এই সময়ের বাইরে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবেন না। চিন্তা করা হলে চেষ্টা করুন বিষয়গুলোকে লিখে ফেলতে। তাহলে আপনি বাড়তি কোনোকিছু নিয়ে ভাবার সুযোগ পাবেন না।
আপনি যখনই একটি কাজ নিয়ে ভবিষ্যতে কি হবে না হবে তা ভাবতে শুরু করেন তখন কাজটি সময় মতো হওয়ার জায়গার আরো পিছাতে থাকে। ভবিষ্যতে কি হবে না হবে তা আপনি কখনই ঠিক ভাবে অনুমান করতে পারবেন না। যে জিনিসটাকে আপনি আপনার চিন্তার মধ্যে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছেন তা ভবিষ্যতে যেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নাও হতে পারে। ভবিষ্যৎকে অনুমান করা আপনাকে শুধু ভয় এর মধ্যে ফেলে দিবে তাই চেষ্টা করুন এর থেকে বের হয়ে এসে বর্তমানে কাজটি করার দিকে মনোযোগ দিতে।
আপনাকে একটি জিনিস বুঝতে হবে যে পৃথিবীর সবকিছু আপনি চাইলেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। আপনার অংশটুকুই শুধু আপনার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। তাই যে জিনিস গুলো আপনার হাতে নেই ঐসব ভেবে সময় নষ্ট না করে যেই গুলো আপনার নিয়ন্ত্রণে আছে তার দিকে মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করুন।
যা নেই তা নিয়ে চিন্তা না করে যা আছে তা খুঁজতে শুরু করুন। দেখবেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার মতো অনেক কিছুই খুঁজে পাবেন। প্রতিদিন কিছু সময়দিয়ে নিজের কাছে যা আছে তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার চেষ্টা করুন। দেখবেন আপনার দৃষ্টিভঙ্গী সময়ের সাথে সাথে অনেকটাই বদলে গেছে।
বর্তমান সময়ের অন্যতম বড় সমস্যা হতাশা। আর এর পিছনের একটি বড় কারণ অতিরিক্ত চিন্তা করা। অতিরিক্ত চিন্তা করা আমাদেরকে যেমন কোনো ভালো ফলাফল দেয় না তেমন এটি আমাদের মানসিক শান্তিকেও নষ্ট করে দেয়। তাই চলুন প্রতিদিন একটু একটু চেষ্টা করে এই ছোট ছোট অভ্যাস গুলো তৈরী করি যা আমাদেরকে অতিরিক্ত চিন্তা করা থেকে বের করে আনবে।
FILED UNDER :অন্যান্য , লাইফস্টাইল , স্বাস্থ্য কথন
Comments are closed.
Comments
Rana says
অতিরিক্ত চিন্তা ধ্বংস করে দেয় মানুষকে। যেভাবেই হোক অহেতুক চিন্তাকে দূরে সরিয়ে রাখা উচিত।
Kader says
জি ভাই!
Kader says
ইনশা আল্লাহ, চেষ্টা করব যাতে এই অভ্যাসগুলো গড়ে তুলতে পারি।
অতিরিক্ত চিন্তা একটি মানুষকে ডিপ্রেশন এবং ফ্রাস্টেটেড করে তুলে। তাই সকলেরই অভ্যাসগুলো ফলো করা উচিত!
Kader says
ধন্যবাদ ভাই!
tasnim says
অতিরিক্ত চিন্তা মানুষকে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। তাই সবকিছুর চাপ নিজের উপর না নিয়ে সৃষ্টিকর্তা তথা নিয়তির উপর ছেড়ে দেওয়াও ভালো। তবে কাজে চেষ্টার ক্রুটি রাখা চলবে না৷ শুধুমাত্র ফলাফলটার জন্য উপরওয়ালার উপর নির্ভরশীল থাকলেই চলবে।
Royal CBD says
Nice post. I learn something new and challenging on blogs I stumbleupon every day.
It’s always exciting to read through articles from other writers and
use a little something from other websites.
Mehedi Hasan Khan says
আমার আম্মুর এই সমস্যা। যেকোনো কিছু নিয়েই খুব চিন্তিত হয়ে পড়ে। করোনা ভাইরাসের চিন্তায় এখন তো রাতে ঘুমাতেও পারেনা ঠিকঠাকমতো। আমি আর আব্বু ঠিক এর উল্টো। যাই হোক, চিন্তা নাই 😇
air max says
This really answered my drawback, thank you!