যেভাবে চাপমুক্ত জীবন পরিচালনা করবেন!

(লেখা কপি করার কারণে এই লেখক কে বাংলা ভাইব থেকে ব্যান করা হয়েছে। আর এই লেখার মূল সোর্স এই ভিডিও (https://www.youtube.com/watch?v=7vaVHz0j__k)। আমাদের অগোচরে প্লাগারাইজড কন্টেন্ট সাইটে পাবলিশ হয়ে যাওয়াতে আমরা অডিয়েন্সের কাছে আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।)

একটি উদাহরণ দিয়ে শুরু করা যাক – ধরুন, আমি একটা পানি ভর্তি গ্লাস হাতে তুলে নিয়ে আপনার কাছে জিজ্ঞেস করি- এই গ্লাসটার ওজন কত হতে পারে? আপনার উত্তর হয়তো ৫০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রামের মধ্যে কোনো একটা চয়েজ হবে। কিন্তু ফ্যাক্ট হল- এতে কিছু যায় আসে না, যে এই পানির গ্লাসের অ্যাবসোলুট ওয়েট কত? বরং এটা বেশি ম্যাটার করে যে কতক্ষণ অবধি টানা এই গ্লাসটাকে আমি এভাবেই ধরে রাখতে চলেছি। যদি আমি কিছু সেকেন্ডের জন্য এটাকে এভাবেই ধরে রাখি, তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু যদি আমি এক ঘন্টার জন্য এটাকে এভাবে ধরে রাখি, তাহলে আমার হাত ব্যাথা করতে শুরু করবে। আর যদি পুরো একদিন টানা এরকম করে ধরে রাখি, তাহলে হয়তো অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে হতে পারে।

এই একই ওয়েট কিন্তু যত বেশি সময়ের জন্য আমি এটাকে একটানা হোল্ড করে রাখবো, ততবেশি এটা আরো ভারী লাগতে থাকবে। তাহলে আমায় কি করতে হবে? মাঝেমাঝে এই গ্লাসটাকে নিচে নামিয়ে রাখতে হবে। একটু রেস্ট নেওয়ার পর আবার আমি আরামসে ওটাকে ওঠাতে পারবো। ঠিক এভাবেই লাইফে স্ট্রেস থেকে বাঁচার জন্য, মাঝেমধ্যেই আমাদের নিজের মাথা থেকে সব বোঝাগুলোকে সরিয়ে একটু রিফ্রেশ হয়ে নেওয়া উচিত। যাতে আমরা আবার ঐ বোঝাগুলোকে খুব সহজেই বেশ কিছুক্ষণের জন্য ক্যারি করতে পারি। এবার প্রশ্নটা হচ্ছে- ভাই এই বোঝাগুলোকে নামাবো কি করে? এর উত্তর- আজ আপনার সঙ্গে Mark McKeon-এর বই “Get in the Go Zone” থেকে শেয়ার করতে চলেছি।

Mark বলেছেন, স্ট্রেস থেকে বাঁচার জন্য শুধু টাইমকে ম্যানেজ করলেই চলবে না, বরং আমাদের টাইম ক্রিয়েট করতে হবে। আপনাকে আপনার পুরো দিনটাকে তিনটা Zone-এ ভাগ করতে হবে।

    1. Go Zone
    2. No Zone
    3. Slow Zone

Go Zone

Go Zone হলো সেই স্টেট, যেখানে আপনি আপনার পারফরম্যান্সের শীর্ষে থাকেন। এই টাইমটা কারো জন্য আর্লি মর্নিং, তো কারোর জন্য আবার লেট নাইট। প্রতিদিন কম করে দু’ঘণ্টা এই Go Zone-এ আপনাকে এন্টার করতে হবে। এখানে অজুহাত বা ডিস্ট্রাকশন জিরো থাকবে। নো মোবাইল, নো টিভি, নাথিং। শুধুমাত্র দু’ঘণ্টার জন্য আপনাকে সবকিছু ভুলে পুরো মনোযোগ দিয়ে শুধুমাত্র একটা কাজই করতে হবে। যে কাজটা আপনার জীবনে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। হতে পারে, সেই কাজটা পড়াশোনা বা কোনো প্রজেক্টে কাজ করা বা অন্য কিছুও হতে পারে। এবার ফ্যাক্ট হলো- আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ লোকের জন্য এই কাজটা একের চাইতে বেশি। আর এই জন্য আমরা ঐসব কাজগুলোকে একসাথে করার চেষ্টা করি। মানে পড়তে পড়তে হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটও অন রয়েছে, ওদিকে ইউটিউবে একটা নতুন ভিডিও আসছে.. ওটাও দেখে নিলাম। মানে একসাথে দশ-বারোটা জিনিসে মাথা খাটানো শুরু করে দেওয়া আর কি!

ভাবুন, প্রথমে আপনাকে এক হাতে একটা কাচের প্লেট ধরার জন্য বলা হলো, তখন আপনার স্ট্রেস লেভেল কতটা হবে? আর তারপর যদি আপনার আরেক হাতে আরেকটা প্লেট, তারপর আপনার মাথার উপর আরেকটা, তারপর আপনার নাকের উপর, আর তারপর যদি মুখ দিয়ে আরেকটা প্লেট একসঙ্গে ধরতে বলা হয়, তাহলে তখন আপনার স্ট্রেস লেভেল কতটা হবে? মজার কথা হল- আমরা সারাদিনই এটাই করতে থাকি। একসাথে দশ-বারোটা জিনিস মাথায় নিয়ে ব্যালেন্স করার চেষ্টা করি। এটাই স্ট্রেসের আসল কারণ। আপনি অ্যাট-অ্যা-টাইম শুধুমাত্র একটা কাজ করুন। কোথায় স্ট্রেস? যদি থাকেও তাহলে সেটা মিনিমাম। আমরা মাল্টিটাস্কিংয়ের নামে অনেকগুলো কাজ একসাথে করার চেষ্টা করি। যেখানে আসলে মাল্টিটাস্কিং জিনিসটাই একটা ভার্চুয়াল কনসেপ্ট। যেটা শুধুমাত্র কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের জন্য ইউজ হয়। রিয়েলিটিতে, মাল্টিটাস্কিং নামে কোনো জিনিসই হয়না। এই Go Zone-এ ঢোকার পর আপনার নিজেকে পুরোপুরি এই সো-কলড মাল্টিটাস্কিং থেকে নিজেকে নিষিদ্ধ করে দিতে হবে। ‘ওয়ান জব অ্যাট-অ্যা-টাইম’, যদি একের বেশি কাজ হয়, তো একটা শেষ করার পর আরেকটা, তার আগে না।

No Zone

এবার প্রতিটা Go Zone- এর শুরুর আগে আপনাকে নিজেকে নিজে একটা এক ঘন্টার No Zone রিওয়ার্ড দিতে হবে। এটা সেই সময়, যখন আপনি আপকামিং Go Zone-এর জন্য নিজেকে রিফ্রেশ করে তুলবেন। আজকের সময়ে আমাদের জীবনে স্ট্রেসের কোনো অভাব নেই। যদি কোনো জিনিসের অভাব থাকে, তাহলে সেটা হলো রিকোভারির। এই No Zone-এও আপনাকে ফোকাস থাকতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ফোকাস থাকবে, Go Zone -এর একদম অপজিট ডাইরেকশনে। এই No Zone-এ কোনো কাজের ব্যাপারে ভাবা বা কোনো কাজ করা একদমই অ্যালাউড নয়। এই Zone-টা টাইমের একদম প্রপার সেলফিশ ইউজ করার জন্য। এখানে আপনার সবসময় লক্ষ থাকবে রিফ্রেশ হওয়া। মানসিক এবং শারীরিক দু’ভাবেই। এর জন্য আপনি মেডিটেশন করতে পারেন, বা ইয়োগা করতে পারেন, বা কোনো রিফ্রেশিং টাইপের যেকোনো কিছু করতে পারেন। যাতে আপনি একটু রিফ্রেশ ফিল করেন।

Slow Zone

No Zoneআর Go Zone-এ এন্টার করার জন্য Slow Zone একটা ট্রানসলিশনের কাজ করে। Slow Zone মানে আমাদের সবার ডিফল্ট Zone। যেটাকে আমরা কমফোর্ট জোনও বলি। এখানে আপনি লেস অ্যাক্টিভ আর লো প্রোডাক্টিভ থাকেন। যেমন- আমার জন্য এই Slow Zone-টা দুপুরে লাঞ্চ করার পর আসে। এখানে আপনার স্বাধীনতা আছে নিজের ইচ্ছামতো সব কাজ করার। আপনি যদি চান তো টিভি দেখতে পারেন, বা গেমস খেলতে পারেন, বা ইউটিউবও দেখতে পারেন। যেটা আপনার ইচ্ছা। কিন্তু এই Zone-এ থাকাকালীন কোনো ইম্পর্টেন্ট কাজ করা, বা কোনো ইম্পর্টেন্ট ডিসিশন নেওয়া- একদমই অ্যালাউড নয়। Slow Zone- ছয় ঘণ্টা থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।

 

এবার এই কথাগুলো শুনে যদি আপনি আজ থেকে এটাকে একদম পার্ফেক্টলি এপ্লাই করার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। কেননা, এটা একদিনে হওয়ার জিনিস নয়। Go Zone-এ আপনাকে পারফরম্যান্সের শীর্ষে কাজ করার জন্য, আগে আপনাকে কিছুদিনের জন্য এই সিস্টেমটাকে পরিশ্রম করে প্র্যাকটিস করতে হবে। তারপর এটা একটা হ্যাবিটে পরিণত হয়ে যাবে। আর এই সময় আপনাকে একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে- যে যাতে কখনো এই তিনটা Zone-এর মধ্যেকার বর্ডারগুলো মিশে না যায়। যদি কোনো এমার্জেন্সি এসে যায়, তাহলে No Zone থেকে ডাইরেক্ট Go Zone-এ এন্টার করার আগে আপনাকে নিজেকে বলতে হবে- “লেটস গেট ইন দ্যা Go Zone” যাতে এই বর্ডারসগুলো কখনো মিশে না যায়। স্ট্রেস এমন একটা রোগ- যেটা মানুষের জীবনের সফলতার সাথে সাথে বাড়তে থাকে। এই জন্যই USA-এর বেশিরভাগ লোক স্ট্রেসে ভোগে।

যদি আপনি এই রোগটাকে ইগনোর করেন, এটাকে ম্যানেজ করার জন্য কোনো স্টেপ না উঠান, তাহলে একটা কথা খুব ভালো করে জেনে নিন- এই রোগটা আপনার জীবনও কেড়ে নিতে পারে।

Similar Posts