ক্যাপচা(CAPTCHA) কী এবং কেন?
আমরা যারা নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করি তাদের কাছে ক্যাপচা (CAPTCHA) শব্দটি কোনো নতুন নয়। বর্তমানে প্রায় সব ওয়েবসাইটেই ক্যাপচা এর ব্যাবহার দেখতে পাওয়া যায়।
আজকের লেখায় আমরা ক্যাপচা কী এবং এর কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে জানবো।
ক্যাপচা (CAPTCHA) কি?
CAPTCHA একটি ইংরেজি শব্দ যার পূর্ণরূপ – Completely Automated Public Turing test to tell Computers and Humans Apart।
অর্থাৎ, ক্যাপচা হলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানুষ এবং কম্পিউটার এর মধ্যে পার্থক্য যাচাইকরণের একটি প্রক্রিয়া।
কোনো সিস্টেম ক্যাপচা ব্যাবহারের মাধ্যমে কোনো প্রক্রিয়ায় স্প্যাম রোবট সংযুক্ত আছে কিনা তা নির্ধারণ করে। এ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা, লেখা কিংবা এমন কিছু তথ্য দেখে দেখে ইনপুট করতে বলা হয় যা কেবল মানুষের দ্বারাই করা সম্ভব। সাধারণত, রোবট ক্যাপচা পূরণ করতে পারেনা।
ক্যাপচা (CAPTCHA) কাজ করে কীভাবে ?
ইন্টারনেট এবং কম্পিউটার এ প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করা হয়। কারণ এগুলো মানব ভাষা বুঝতে পারে না। ক্যাপচা আবিষ্কারের উদ্দেশ্য ছিলো স্প্যামি সফটওয়্যার দ্বারা কমেন্ট পোস্ট করা ঠেকানো। ক্যাপচাতে সাধারণত কিছু বিকৃত অক্ষর ও সংখ্যাযুক্ত চিত্র দেয়া থাকে। এছাড়াও নির্দিষ্ট ছবি থেকে নির্দিষ্ট বিষয়যুক্ত অংশগুলো আলাদা করতে বলা হয়। যা স্প্যামি সফটওয়্যার আইডেন্টিফাই করতে পারে না।
ক্যাপচা (CAPTCHA) -র ইতিহাস
ক্যাপচা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা ব্যবহারকারী মানুষ নাকি রোবট তা যাচাই করে। ক্যাপচা শব্দটি কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা ২০০০ সালে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন।
প্রথম ক্যাপচা ব্যবহার করা হয়েছিল অনলাইন পোল যাচাই করার জন্য । SlashDot, ১৯৯৯ সালে একটি সমীক্ষা তৈরি করেছিল যা ভিজিটরদের কম্পিউটার বিজ্ঞানের জন্য সেরা প্রোগ্রামযুক্ত গ্রাজুয়েট স্কুলটি বেছে নিতে বলতো।
কার্নেগি মেলন এবং এমআইটি বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুলে বারবার ভোট দেওয়ার জন্য কিছু অটোমেটিক প্রোগ্রাম অর্থাৎ বট তৈরি করেছিল।
উক্ত সমীক্ষাতে এই বিদ্যালয়গুলো হাজার হাজার ভোট পায়, যেখানে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো মাত্র কয়েকশো করে ভোট পায়। ব্যবহারকারীরা যেন এই ভোটদান প্রক্রিয়ার সুযোগ নিতে না পারে সেজন্য ক্যাপচা ব্যাবহার করা হয়েছিল।
ইয়াহু মেইল বা জিমেইল এর মত সাইটগুলো, যেখানে বিনামূল্যে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যায় সেখানে ক্যাপচার সর্বাধিক ব্যাবহার লক্ষ্য করা যায়। এখানে বটগুলোর অধিকহারে স্প্যাম ইমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরীর প্রক্রিয়াকে ক্যাপচা বাধাগ্রস্থ করে।
টিকেট বিক্রির ওয়েবসাইটগুলোও টিকেট দালালদের বেশি টিকেট কেনা থেকে আটকানোর জন্য ক্যাপচা ব্যবহার করে থাকে।
ক্যাপচা হাজার হাজার টিকেটের অর্ডার দেওয়া থেকে বটগুলোকে রুখে দেয় এবং বৈধ গ্রাহকদেরকে সুষ্ঠভাবে টিকেট কেনার অনুমতি দেয়।
এছাড়াও ওয়েবপেজ ও ব্লগে মেসেজ বোর্ড বা কন্টাক্ট ফর্মগুলোতে আসা স্প্যাম মেসেজ এবং কমেন্ট রুখতে ক্যাপচা ব্যবহার করা হয়। এটি সাইবার বুলিং প্রতিরোধ করে না, তবে অটোমেটিকভাবে মেসেজ বা কমেন্ট করা থেকে বটগুলিকে প্রতিরোধ করে।
ক্যাপচা (CAPTCHA) এর কার্যকরিতা
প্রতিদিন প্রযুক্তি এবং ক্ষতিকর হ্যাকাররা আরো উন্নত হওয়ার সাথে সাথে তাদের স্ক্যামিং এর কৌশলগুলোরও পরিবর্তন ও উন্নতি হচ্ছে।
ক্যাপচা অনেকটাই নিরাপদ হলেও, বর্তমানে সাইবার অপরাধীরা তাদের স্ক্যামগুলোকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে তাদের প্রতারণামূলক ওয়েবসাইটগুলোতেও ক্যাপচা অন্তর্ভুক্ত করতে শুরু করেছে।
ক্যাপচা (CAPTCHA) এর ব্যবহার
ক্যাপচা ওয়েবসাইট এবং ব্যবহারকারীদের সুরক্ষিত রাখতে ব্যপকভাবে ব্যবহৃত হয়। যেসব ক্ষেত্রে ক্যাপচা অধিক কার্যকর এবং সর্বাধিক পরিমাণে ব্যবহার করা হয়-
- ইমেইল সেবাকে প্রতারক থেকে রক্ষা করতে
- ওয়েবসাইট নিবন্ধন পদ্ধতি সুরক্ষিত রাখতে
- অনলাইন পোলিং রক্ষা করতে
- স্প্যাম মেইল/জাঙ্ক মেইল থেকে থেকে রক্ষা করতে
- ডিকশনারি এট্যাক প্রতিরোধে
- অনলাইনে কমেন্ট স্প্যামিং প্রতিরোধে
এছাড়াও আরো অনেক ক্ষেত্রেই নিরাপত্তার জন্য ক্যাপচা ব্যবহার করা হয়।
এই ছিলো ক্যাপচা নিয়ে আলোচনা। আশা করি আপনারা ক্যাপচা সম্পর্কে বেসিক ধারণা পেয়েছেন। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন থাকুন, ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ ভাই!
পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ ভাই
ক্যাপচা সম্পর্কে এতকিছু আজকেই জানলাম। ভালো লিখেছেন ভাই।
ধন্যবাদ ভাই। পাশে থাকবেন।
ক্যাপচা নিয়ে আগ্রহী ব্যাক্তিরা এই পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে সক্ষম হবে। ধন্যবাদ আপনাকে।
পাশে থাকার জন্য আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ। শেয়ার করে বন্ধুদের জানাতে সাহায্য করতে পারেন।