গ্লোবাল ভিলেজ কি ও কেন?
Village বা গ্রাম হলো একটি ছোট গোষ্ঠী অথবা কতকগুলো বাড়ির সমষ্টি। নির্দিষ্ট এলাকায় সীমিত আয়তনে একটি গ্রামের অবস্থান বিধায় গ্রামে বসবাসকারী সবাই সবাইকে চেনে। গ্রামে কোন তথ্য প্রকাশিত হলে তা মুহূর্তেই মুখে মুখে জানাজানি হয়ে যায়। গ্রামে যে কোন মুহুর্তে একজন আরেকজনের কাজে সহযোগিতা করে থাকে।
গ্লোবাল শব্দের অর্থ হলো বিশ্ব। আর গ্লোবাল ভিলেজ অর্থ বিশ্ব গ্রাম। গ্লোবাল ভিলেজ হলো প্রযুক্তিনির্ভর একটি বিশ্ব, যাতে বিশ্বের সব দেশ, সব জাতি একসাথে গ্রামের মতো করে সুবিধা পায়।
![](https://banglavibe.com/wp-content/uploads/2020/09/20200903_000012.jpg)
দেশের প্রতিটি প্রান্তে গ্রামের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। কতকগুলি গ্রামের সমন্বয় শহর, কতকগুলি শহরের সমন্বয়ে একটি জেলা বা অঞ্চল, কতগুলি জেলা অঞ্চলে সমন্বয়ে গড়ে ওঠে একটি দেশ। আবার অসংখ্য দেশের সম্মিলিত ভৌগোলিক অবস্থান কে বিশ্ব বলে বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বের পরিধি আজ ছোট হয়ে এসেছে। বৃহৎ প্রেক্ষাপটে সে হিসেবে বিশ্বটাই হলো একটি গ্রাম। অন্যথায় “পৃথিবী একক একটি পরিবার”।
বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজ বলতে সাধারণত এমন একটি ধারণা কে বোঝানো হয়, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন পরস্পরের সাথে খুব সহজে যাতায়াত ও ভ্রমণ, গণমাধ্যম ও ইলেকট্রনিক যোগাযোগের মাধ্যমে যুক্ত থাকে এবং একক কমিউনিটি তে পরিণত হয়। বিভিন্ন ধরনের মিডিয়া বিশেষ করে ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েব (WWW) এর ব্যাপক ব্যবহার ও প্রভাবের কারণে আজ বিশ্বের কোনো এক দেশের এক প্রান্তের লোকজন অন্য প্রান্তের অন্য যেকোনো লোকের সাথে খুব সহজে যোগাযোগ করতে পারছে। তথ্যের আদান-প্রদান বিষয়টাকে এতটাই কাছে নিয়ে এসেছে যে বিশ্ব এখন একটি গ্রাম বা ভিলেজ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে অবস্থানকারী কোনো ব্যক্তি এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী কোনো ব্যক্তির সাথে তাৎক্ষণিকভাবে অনলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন। টেলিফোন, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সহ আরও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মাধ্যমে এদের দূরত্বের ব্যবধানকে ঘুচিয়ে দিয়েছে।
বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজে এর কারণে আজকাল বিশ্বের একপ্রান্তের লোকজন অন্য প্রান্তের লোকজনদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আজকের বিশ্বে আমরা মূলত একটি বিষয় গ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজে বসবাস করেছি। যোগাযোগ, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, গবেষণা, অফিস-আদালত, বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ বিনিময়ের ক্ষেত্রে বহুল প্রভাব লক্ষ করা যায়।
গ্লোবাল ভিলেজ এর সুবিধা সমূহ,
• মুহুর্তের মধ্যে বিশ্বের যেকোনো স্থানে যেকোনো ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা যায়।
• দূরত্ব অনুভূত হয় না অর্থাৎ ভৌগোলিক দূরত্ব কমে যায়।
• এর ব্যবস্থাপনা খরচ অনেক কম।
• বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা যায়।
• ঘরে বসে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ কেনাকাটাও করা যায়।
• টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে বিশ্বের নামকরা চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবা নেওয়া যায়।
• ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোর্সিং করে অর্থ উপার্জন করা যায়।
গ্লোবাল ভিলেজ এর অসুবিধা সমূহ,
• ইন্টারনেট হ্যাকিং করে তথ্য চুরি হয়। অর্থাৎ তথ্যের গোপনীয়তা প্রকাশ পায়।
• অসত্য তথ্য বা গুজব এর মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
• ইন্টারনেটে বেশি সময় দেয়া কারণে সত্যিকারেএ বন্ধু থেকে ভার্চুয়াল বন্ধুর সংখ্যা বাড়তে পারে। এতে করে মানুষের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
• ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডেটা চুরি হতে পারে।
• পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে সামাজিক অবক্ষয় সৃষ্টি হয়।
• সাইবারক্রাইম বা বিভিন্ন ধরনের হ্যাকিং এর শিকার হতে হয়।
• প্রযুক্তির বেশি ব্যবহারের ফলে যেমন শারীরিক সমস্যা হয়। তেমনি বেকারত্ব বৃদ্ধি পায়।