দুঃখী থাকার ৫টি কারণ ও প্রতিকার!

(লেখা কপি করার কারণে এই লেখক কে বাংলা ভাইব থেকে ব্যান করা হয়েছে। আর এই লেখার মূল সোর্স এই ভিডিও (https://www.youtube.com/watch?v=zB7irBd9M4w)। আমাদের অগোচরে প্লাগারাইজড কন্টেন্ট সাইটে পাবলিশ হয়ে যাওয়াতে আমরা অডিয়েন্সের কাছে আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।)

“জীবনটা দিন দিন বোরিং হয়ে যাচ্ছে। সব সময় মনে উঁকি দিয়ে উঠছে যেন, কি একটা মিসিং। কিন্তু সেই মিসিং জিনিসটা আসলে কি? সেটাইতো বুঝতে পারিনা।”

5 reasons and remedies to be sad!

যদি এগুলো আপনারও মনের কথা হয়, তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য। কারণ, আজ এই লেখাতে সেই মিসিং জিনিসগুলোকেই আপনার সামনে তুলে ধরতে চলেছি। যাতে আপনি সেগুলোর প্রতি একটু সতর্ক হয়ে, নিজের লাইফটাকে বোরিং থেকে ইন্টারেস্টিংয়ে কনভার্ট করতে পারেন। আর হ্যাঁ, শুধু মিসিং জিনিসগুলোকে খুঁজেই দেবো না, সেগুলোর কিভাবে সমাধান করা সম্ভব, তার জন্য কিছু ইজি টিপসও এই লেখাতে আপনার সঙ্গে শেয়ার করবো। তো চলুন শুরু করা যাক-

১. সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাডিকশন

সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের আর কিছুই না, অন্যদের লাইফের সাথে আমাদের নিজেদের লাইফে কিভাবে কম্পেয়ার করতে হয়, সেটা শেখাচ্ছে।

‘আরে ওর লাইফে কত মজা! প্রতিদিন কত জায়গায় ঘুরতে যায়, কতো ভালো ভালো খাবার খায়, আর আমার লাইফটা? সারাদিন ঘরে বসে থাকতে হয় আমায়।’

সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের প্রতিনিয়ত এটা শেখাচ্ছে যে, কিভাবে নিজের যা আছে তাতে খুশি না থেকে অন্যকে দেখে আরো আরো চাইতে হয়। আর যার ফলে, আমাদের সবসময় দুঃখী থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ, আপনার লাইফ যতোই মজাদার হোক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনি এমন কাউকে না কাউকে পেয়ে যাবেন, যাকে দেখে আপনার নিজের লাইফটাকে বোরিং বলে মনে হবে। এখানে মজার ব্যাপারটা হলো, যাকে দেখে আপনার মনে হচ্ছে ওর লাইফটা ভীষণ ইন্টারেস্টিং! আসলে, সেও নিজের লাইফটাকে বোরিং হিসেবেই মানে।

তার মানে, এই না যে, আমি সোশ্যাল মিডিয়া ইউজ করার একদম বিপক্ষে। ড্রাগস যদি লিমিটে নেওয়া হয় সেটা ওষুধের কাজ করে, কিন্তু লিমিট ছাড়া নিলে সেই ড্রাগ-ই আবার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সোশ্যাল মিডিয়া আজকের দিনে খুবই পাওয়ারফুল একটা টুল। যদি আমরা সেটাকে সঠিক ভাবে ইউজ করতে পারি। হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ডিফল্ট স্ট্যাটাসটা থাকে- “হেই দিয়ার, আইএম ইউজিং হোয়াটসঅ্যাপ।”? কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে তারা যেভাবে হোয়াটসঅ্যাপের নেশায় পড়ে যায়, তাদের আসলে তখন স্ট্যাটাসটা হয়ে যাওয়া উচিত- “হেই দিয়ার, হোয়াটসঅ্যাপ ইজ ইউজিং মি।”? তো এটা যেন কখনোই না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা দরকার।

নোটিফিকেশন আর বোরডাম (Boredom) এই দুটো জিনিস আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাডিকশন এর মূল ট্রিগার হিসেবে কাজ করে। তাই এই দুটো ট্রিগারকে অভয়েড করার জন্য, সবার আগে নোটিফিকেশন সেটিংসে গিয়ে নোটিফিকেশনটা বন্ধ করতে হবে, আর সবসময় নিজেকে কোনো না কোনো কাজে বিজি রাখতে হবে। লক্ষ্য করে দেখবেন, যেদিন আপনি কোনো কাজে বিজি থাকেন, সেদিন আপনার সোশ্যাল মিডিয়া চেক করার কথা মাথায় থাকে না। তাই অ্যাডিকশন থেকে বেরিয়ে আসুন আর নিজের লাইফটাকে নিয়ে খুশি থাকতে শিখুন। কারণ, অন্য কারোর লাইফের সাথে নিজের লাইফকে কম্পেয়ার করা, আমার মতে নিছক বোকামি। কারণ, এটা অনেকটা মাছের সাথে পাখিকে কম্পেয়ার করার মতো। যেখানে দুজনেরই লাইফ সম্পূর্ণ আলাদা।

২. অলসতা

বৈজ্ঞানিক দিক থেকে দেখলে, আমাদের পুরো শরীরটা একটা ওয়েল ব্যালেন্স কেমিক্যালস সুপ (Soup)। যেখানে আমাদের ফিজিক্যাল স্ট্রাকচার থেকে শুরু করে মেন্টাল স্ট্রাকচার, সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে কেমিক্যাল সুপ দ্বারা। আপনি হয়তো জানেন, আমাদের সমস্ত ইমোশনগুলোর পিছনে রয়েছে আমাদের শরীরে ক্ষরণ হওয়া বিভিন্ন হরমোনস। এরকমই এন্ডর্ফিনস (Endorphin) নামে একটি হরমোন রয়েছে, যেটা আমাদের ভালো লাগার অনুভূতিটাকে নিয়ন্ত্রণ করে। কখনো খেয়াল করবেন, যখন অলসতার চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়, তখন এমনি এমনিই কোনো কারণ ছাড়াই মন খারাপ লাগতে শুরু করে। এর কারণ হলো, আমাদের শরীরে এন্ডর্ফিনস জাতীয় হরমোনের অনুপস্থিতি। অলসতা এন্ডর্ফিনস হরমোন ক্ষরণে বাঁধা দেয় এবং এক্সারসাইজ, ইয়োগা- এগুলো এন্ডর্ফিনস হরমোন ক্ষরণে সহায়তা করে। কাজেই যতো আপনি অলসতা করবেন, ততো আপনার কারণে-অকারণে মন খারাপ থাকতে শুরু করবে।

৩. লক্ষ্যহীন জীবন

ধরুন, আপনাকে একটা রাস্তায় নিয়ে গিয়ে বলা হলো, ‘এই রাস্তা ধরে সোজা হাটতে থাকো। কেন? কি জন্য? এতে কী হবে? কিছুই আপনাকে বলা হলো না।’ তাহলে তখন আপনার সেই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে কেমন লাগবে? নিশ্চয়ই বোরিং লাগবে। কিছু সময় পর মন খারাপ লাগতে শুরু করবে। এবার ভাবুন, আপনাকে একটা স্পেসিফিক গোল দিয়ে দেয়া হলো যে, ‘যদি তুমি দশ মিনিটের মধ্যেই এই রাস্তা ধরে হেঁটে এক কিলোমিটার পার করতে পারো, তাহলে তুমি এই রাস্তার ধারে একটা সোনার বাক্স পাবে।’ তাহলে তখন আপনি কেমন এনার্জির সাথে সে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে শুরু করবেন। ঠিক এরকমই, লাইফটাকে মিনিংফুল বানানোর জন্য, একটা রিজেন এবং একটা ক্লিয়ার গোল থাকা খুবই দরকার। হ্যাঁ, আমাদের সবার লাইফে কিছু গোল থাকে, কিন্তু সেটা ক্লিয়ার না। যেমন কারোর কারোর গোল থাকে, অনেক টাকা কামানোর। কিন্তু সেই অনেক মানে ঠিক কতটা? আর কত সময়ের মধ্যে? এটা খুব কম মানুষের ক্লিয়ার থাকে। কারোর আবার গোল থাকে ফিট থাকা। ফিট মানে কতটা ফিট? মেরাথনে (Merathon) দৌড়ানোর মতো ফিট? নাকি সিঁড়ি চড়তে যাতে কষ্ট না হয় সেটুকু ফিট? গোল ক্লিয়ার না থাকলে ভিতর থেকে সেই এনার্জিটা আসবে না, যার ফলে, কোনোদিন দিনই সেই গোল অ্যাচিভও হবেনা। তাই সে ক্ষেত্রে সবসময় দুঃখী দুঃখী মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক।

৪. অবহেলা

দিনের-পর-দিন ওজন বেড়ে চলেছে, আপনি জানেন আপনার খাবারের প্রতি নজর দেওয়া উচিত আর রোজ একটু হলেও এক্সারসাইজ করা দরকার। কিন্তু আপনি প্রতিনিয়ত নিজেকে নিজে কিছু না কিছু এক্সকিউজ দিয়ে, এই প্রয়োজনটাকে অবহেলা করে এড়িয়ে যাচ্ছেন। আপনি জানেন, আপনি নিজেকে নিজে ঠকাচ্ছেন। এতে আর কিছুই না, আপনার সেল্ফ-ইস্টীম (Self-esteem) দিন দিন লো হতে থাকছে। সেল্ফ-ইস্টীম কথার অর্থ হল- আপনার নিজের চোখে নিজের সম্মান কতটা। মানে আপনি নিজেকে নিজে কতটা পছন্দ করেন। এবার ভাবুন, আপনাকে সারা দিন যদি এরকম একজনের সাথে থাকতে হয়, যাকে আপনার অপছন্দ। তাহলে কি আপনার পক্ষে খুশি থাকা সম্ভব? তখন মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাবে, অল্পতেই মাথা গরম হয়ে যাবে। তাই নিজের সেল্ফ-ইস্টীমকে বাড়াতে এই জিনিসগুলোতে অবহেলা করা আপনাকে বন্ধ করতে হবে। যে কাজটা আপনি ভিতর থেকে জানেন আপনার জন্য ঠিক, কিন্তু কোন-না-কোন এক্সকিউজ দিয়ে কাজটা করা থেকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। খুশি থাকতে হলে, এক্সকিউজ দেওয়া বন্ধ করে সেই কাজগুলোই এবার করতে শুরু করতে হবে।

৫. নো শেয়ারিং

আপনি জীবনে যতোই সাকসেসফুল হয়ে যান না কেন, যতোদিন না আপনি আপনার সাকসেসটাকে অন্যদের সাথে শেয়ার না করছেন, ততোদিন অবধি আপনি কোনোদিন কসলেস (Causeless) হ্যাপিনেস বলতে যে জিনিসটা হয়, সেটা অনুভব করতে পারবেন না। এখন আপনার খুশি হওয়ার জন্য কিছু না কিছু দরকার। ‘এটা হলে আমি খুশি হতাম, ওটা হলে আরো খুশি হতাম।’ কিন্তু যখন আপনি কোনো একটা কাজে সাকসেসফুল হয়ে গেছেন, তারপর আপনার সেই সাকসেসটাকে যদি আপনি অন্যদের সাথে শেয়ার করতে শুরু করেন, তাহলে তখন আপনার খুশি হওয়ার জন্য কোনো কারণের দরকার পড়বে না।

ধরুন, আপনি একজন কুকিং এক্সপার্ট। সেটা থেকে আপনি অনেক সফলতাও পেয়েছেন। এরপর আপনি যতক্ষন না আপনার কুকিং-এর সেই নলেজ, সেই স্কিল অন্যদের সাথে মন খুলে শেয়ার না করছেন, ততক্ষন আপনার লাইফে কিছু-না-কিছু একটা মিসিং বলে মনে হতে থাকবে। কারণ, শেয়ারিং আমাদের লাইফকে মিনিংফুল বানায়। শেয়ারিং করলে তবেই ভেতর থেকে এই অনুভূতিটা আসে যে না আমার জীবনটা বৃথা না। কিছুটা হলেও আমি কন্ট্রিবিউট করতে পেরেছি। আর তা না হলে সারাজীবন খুশিটা কোনো না কোনো কিছুর ওপর ডিপেন্ডেড হয়ে থাকবে। আর আপনি এন্ডলেস রেসে দৌড়াতে থাকবেন। তাই যদি আপনি অলরেডি কোনো কিছুতে এক্সপার্ট হন, তাহলে সেটা শেয়ার করতে শুরু করুন। এতে আপনার লাইফের মিসিং পার্টটা আপনি খুঁজে পেয়ে যাবেন।

Similar Posts

2 Comments

  1. অবিকল আমার স্বভা‌বের সা‌থে মি‌লে যায়। বি‌শেষ ক‌রে অন‌্যদের সা‌থে ক‌ম্পেয়া‌রিং আর অলসতার প‌্যারাগু‌লো!

Comments are closed.