stonefish

অভিতোষ চক্রবর্তী / আগস্ট 15, 2020

সবচেয়ে বিপজ্জনক ৫টি সামুদ্রিক জীব

শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সাথে

সমুদ্র সবসময়েই আমাদের জন্য এক অপার বিস্ময়ের নাম।প্রকৃতির অদ্ভুত সুন্দর এই আদিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। সমুদ্রে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ,অণুজীব এবং জলজ প্রাণী। কিছু কিছু সামুদ্রিক মাছ মানুষের খাবার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আবার একইসাথে পৃথিবীর বিশাল এই সমুদ্রে পাওয়া যায় এমন কিছু জলজ প্রাণী যারা মুহূর্তেই মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে। বিভিন্ন পৌরাণিক গল্প এবং রূপকথার কাহিনিতেও কিছু অত্যন্ত ভয়াবহ সামুদ্রিক জীবের উল্লেখ পাওয়া যায়। চলুন আজকে জেনে নেয়া যাক সেরকম সবচেয়ে বিপজ্জনক পাঁচটি সামুদ্রিক প্রাণীর ব্যাপারে।

সি ওয়্যাসপ্স

১/সি ওয়্যাসপ্স: এদেরকে এক প্রজাতির জেলিফিশ বলা যেতে পারে। দেহের আত্মরক্ষার জন্য নিডারিয়া পর্বের গভীর সমুদ্রের এই প্রাণীদের রয়েছে বেশ কয়েক স্তরের কর্ষিকা এবং লক্ষ লক্ষ নিডোসাইট। এই নিডোসাইটে স্পর্শ করা মাত্রই এরা কর্ষিকার মাধ্যমে কয়েক লক্ষ অতি সূক্ষ্ম বিষাক্ত হুল ফুটিয়ে দিতে সক্ষম। হুল ফোটানোর পর সাথে সাথে ব্যবস্থা না নিলে প্রচণ্ড ব্যথায় কাতর হয়ে যে কোনো মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে। প্রশান্ত মহাসাগরের এই জলদানবের লেজে যে পরিমাণ বিষ থাকে তাতে ২৫০ জন পর্যন্ত মানুষ মারা যেতে পারে।

পাফার ফিশ

২/পাফার ফিশ: দেখতে অনেকটা গোলাকৃতির এই প্রাণীটি তার অনিষ্টকারীর উপস্থিতি বা বিপদ আঁচ করতে পারলে নিজেকে রক্ষা করার জন্য নিজের দেহকে ফুলিয়ে একটি গ্লোবের মতো আকার ধারণ করে।শুধু তাই নয়, এরা সায়ানাইডের চেয়েও শক্তিশালী “ট্যাট্রোডক্সিনা” নামের এক ধরনের বিষ আক্রমণকারীর ওপর নিক্ষেপ করে। এদেরকে অনেকে “গ্লোব মাছ” বা “পটকা মাছ” নামেও চেনেন। আজকাল চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এই প্রাণীর দেহের যকৃত,ডিম্বাশয় এবং অণ্ডকোষ থেকে  প্রাপ্ত “ট্যাট্রোডক্সিনা” পদার্থটিকে বেদনানুভূতি নাশক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করেন।

স্টোন ফিশ

৩/স্টোন ফিশ: ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশে পাওয়া যায় এদের। সাধারণত পাথর কিংবা শিলার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ রং এর কারণে এদের উপস্থিতি নির্ণয় করা খুবই কঠিন। সমুদ্রের তলদেশের বিভিন্ন প্রস্তরখণ্ড ও শিলার আড়ালে নিজেদের লুকায়িত রাখতে ভীষণ পটু এই প্রজাতির প্রাণীরা। তাই এদেরকে অনেকে “ছদ্মবেশী প্রাণী” বলে আখ্যায়িত করেন।এদের দেহে ছড়িয়ে থাকা বিষাক্ত কাঁটা এদেরকে হাঙ্গরসহ অন্যান্য আক্রমণকারী থেকে রক্ষা করে। মানুষের দেহে এই বিষাক্ত কাঁটা বিঁধলে হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা লোপ পায় এবং দেহ দ্রুত নিস্তেজ ও অবশ হয়ে আসে। চিকিৎসা বিলম্বিত হলে স্টোন ফিশের কাঁটার আঘাতপ্রাপ্ত রোগীকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব।

বক্স জেলিফিশ

৪/বক্স জেলিফিশ: সমুদ্রতলের ভয়ঙ্কর ও বিষাক্ত এই জেলিফিশের কারণে প্রতিবছর বেশ কিছু মানুষের মৃত্যু হয়। ফিলিপাইনে প্রতিবছর প্রায় ৩০ জন মানুষ বক্স জেলিফিশের সংস্পর্শে এসে মৃত্যুবরণ করেন।এই প্রাণীটি মানুষের স্পর্শে এলেই দেহে বিষ প্রবেশ করিয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে রোগীর দেহে প্রচণ্ড যন্ত্রণা শুরু হয়। পরবর্তীতে রোগী শ্বাসকষ্ট ও জ্ঞান হারিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

ব্লু রিং অক্টোপাস

৫/ ব্লু রিং অক্টোপাস: সাধারণ অবস্থায় বিপজ্জনক এই সামুদ্রিক প্রাণীটি হালকা বাদামি রংয়ের। কিন্তু আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায় এদের গায়ে উজ্জ্বল নীল রংয়ের বলয় দেখা যায়। মানুষকে কামড়ালে এদের বিষাক্ত লালা স্নায়ুতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং মানুষটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিষক্রিয়ায় মারা যায়। এখনো পর্যন্ত এই অক্টোপাসের  বিষের থেকে বাঁচানোর ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। তবে সাধারণত এরা উত্তেজিত না হলে আক্রমণ করেনা।

(Visited 529 times, 7 visits today)


শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সাথে

Comments

Comments are closed.