সদ্য বিবাহিত দম্পতিদের জন্য বাসা সাজানোর টিপস ও ট্রিকস

বিয়ে মানে নতুন সম্পর্ক, নতুন মানুষ, নতুন সংসার। যদি বিয়ের পর যদি স্বামীর পরিবারের সাথে থাকা হয় তাহলে নতুন করে ঘর সাজানোর দায়িত্ব নিতে হয় না। শুধুমাত্র নিজের বেডরুমটা সাজাতে হয়। আর যদি স্বামী নিজের চাকরি বা ব্যবসার খাতিরে পরিবার থেকে দূরে থাকে তবে নতুন সংসার গোছানোর আগে নিজেদের বাসা গুছিয়ে নিতে হয়।


বিয়ের পর নিজেদের ঘর মনের মতো করে সাজানো বিবাহের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশগুলির মধ্যে একটি, তবুও এটি সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং। ডজন খানেক হোম ডেকোরেটর ওয়েবসাইটের মধ্যে দিয়ে যাওয়া, আপনার পছন্দ হলে স্ত্রীর পছন্দ না হওয়া আবার তার হলে আপনার না হওয়া। এক এক জিনিসের জন্য এক এক দোকান ঘুরে বেড়ানো আবার বাজেটের সমস্যা।
ঘর সাজাতে হলে এই কষ্টটুকু আপনাদের করতে হবেই। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে নব দম্পতিদের জন্য রয়েছে ঘর সাজানোর চমৎকার কিছু টিপস ও ট্রিকস।

বাড়ি নির্দিষ্ট করাঃ
ঘর সাজানোর আগে অবশ্যই প্রথমে যা নির্ধারণ করা দরকার তা হ’ল আপনি কোথায় থাকবেন এবং কী ধরণের বাড়ি থাকবেন। কিছু দম্পতিরা বাড়িটি সনাক্ত করার আগে আসবাবপত্র কিনে রাখে এবং তারপরে তারা বুঝতে পারে যে তাদের আসবাবগুলি তাদের বাড়ির সাথে মেলে না বা সেগুলো রাখার পর্যাপ্ত পরিমাণের জায়গা নেই। নতুন দম্পতিদের আগে দেখতে হবে তারা যে ঘরে বাস করতে যাচ্ছে সেটি কেমন তারপর আসবাবপত্র কেনার ব্যাপারে সচেতন হওয়া।

নিজেদের পছন্দ ও রুচির কথা খেয়াল রাখাঃ
বাড়ি পছন্দের পর আপনার পার্টনারের সাথে আলোচনা করতে হবে ঘর সাজানোর প্ল্যান নিয়ে। ধরুন, আপনার পছন্দ কাঠের আলমারি আর তার স্টিলের। তাই দুজন আগেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করে নিন। কারণ, আসবাবপত্র সাধারণত দীর্ঘদিন ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে ক্রয় করা হয়। এমন নয় যে, আসবাবপত্র দিয়ে পুরো ঘর ভরিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসবাবপত্র ঘরের অনেক সময় ঘরের শোভা নষ্ট করে ফেলে। নিজেদের বানানো বাড়ি হলে খুব একটা সমস্যা হয়না কিন্তু যদি ভাড়া বাড়ি হয় তবে বাড়ি পাল্টানোর সময় সবচেয়ে ঝামেলাপূর্ণ ও বিরক্তর কারণ হয়ে দাঁড়াবে অতিরিক্ত আসবাবপত্র।

বাড়ি নির্বাচন ও ঘর সাজানোর আগে যে জিনিসটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে আপনার বাজেট। নতুন সংসার শুরুর খরচটা সাধারণত বেশি হয়। তাই আপনি যদি জানেন যে বিয়ের পর আপনার নিজের আলাদা একটি সংসার হবে তবে এই সংসার সাজানোর আয়োজনটা আপনাকে অনেক আগে থেকেই করতে হবে। চলুন দেখে নেওয়া ঘর সাজানোর কিছু উপায়ঃ

বেডরুমঃ
বাড়ির প্রতিটি কক্ষটি গুরুত্বপূর্ণ এবং যত্ন সহ সজ্জিত করা দরকার কিন্তু নিজেদের বেডরুম সাজানোর প্রতি সকলের আগ্রহটা বেশী কাজ করে কারণ, দিনের শুরু ও শেষ এই রুম থেকে হয়। যদি আপনার বেডরুমের আয়তন বড় হয় তবে একটি বিছানা, আলনা, ড্রেসিং টেবিল, ওয়ারড্রব রাখতে পারেন। যদি ঘরের সাইজ মাঝারি হয় তবে বিছানার সাইজটা ছোট হওয়া ভালো বা ম্যাট্রেস ব্যবহার করতে পারেন। ড্রেসিং টেবিলের পরিবর্তে দেওয়ালে আয়না টাঙ্গাতে পারেন। আলনার পরিবর্তে ছোট সাইজের প্লাস্টিকের ওয়ারড্রব ব্যবহার করতে পারেন। সাথে আরো যোগ করতে পারেন ঘড়ি, ফোটফ্রেম।

ড্রয়িংরুমঃ
বসার ঘরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে সোফা।সোফা ঠিক কতসেট রাখবেন সেটি নির্ভর করছে আপনার রুমের সাইজ ও আপনার বাজেটের উপর। সাথে যোগ করতে পারেন টিভি, টি-টেবল, ফুলদানি, বুক সেলফ, সো-কেস, ওয়াল পেপার, ওয়াল স্টিকার। বুক সেলফ অনেকে বেড রুমে রাখতে পছন্দ করেন।

ডাইনিং রুমঃ
সব ঘরে ডাইনিং রুম থাকেনা বিশেষ করে ভাড়া বাড়িতে। সেক্ষেত্রে বসার ঘরকে ডাইনিং রুম হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। আর যদি থেকে থাকে তবে সে রুমের জন্য চাই ডাইনিং টেবল। সেটি হতে পারে ফোর সিটেড কিংবা সিক্স সিটেড। যদি জায়গার সংকুলন হয় তবে ফোল্ডিং টেবিল ব্যবহার করা উত্তম। ফ্রিজ সাধারণত ডাইনিং রুমে রাখা হয়। জায়গা না থাকলে বেডরুম বা রান্নাঘরের সামনে বৈদ্যুতিক সংযোগ আছে এমন কোন জায়গায়।

ঘর সাজানোর আগে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস গুলোর লিস্ট বানিয়ে নেওয়া উচিত। যেমনঃ ঘড়ি, লাইট, ফ্যান, ঝাড়ু, বাথরুমের যাবতীয় জিনিসপত্র যেমন -ব্রাশ-পেস্ট রাখার র‍্যাক, বালতি, মগ রান্নাঘরের সরঞ্জাম যেমন -গ্যাসের চুলা,কড়াই, চামচ, থালাবাসন, গ্লাস,মসলাদানী, প্রেসার কুকার, রাইসকুকার, মাইক্রো ওভেন। তাছাড়া রয়েছে বেডশিট, পর্দা, বালিশের কভার,পাপোষ, সু র‍্যাক, আয়রন । তবে ঘর সাজানোর পাশাপাশি নিজেদের ব্যালকনিতে রাখতে পারেন ছোট সাইজের ফুলের টব।

Similar Posts