ইফতারের আকর্ষন মুচমুচে জিলাপির রেসিপি
রমজান মাসে ইফতারের অন্যতম আকর্ষন হল জিলাপি। বেশিরভাগ বাঙ্গালীরই জিলাপি ছাড়া যেনো ইফতারই হয়না ৷ তাই দুপুরের পর থেকেই, গলিতে গলিতে মোড়ে মোড়ে বসে অস্থায়ী ইফতারের দোকান, যেখান থেকে ভেসে আসে জিলাপির সুস্বাদু গন্ধ। আর ইফতারের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত থাকে মানুষের ঠেলাঠেলি আর জিলাপি কেনার ধুম।
কিন্তু এই বছরের চিত্রটা একটু ভিন্ন। আমরা প্রায় সবাই জানি এর কারন। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এক মহামারী ভাইরাস যার নাম করোনা। সারা বিশ্বে এখন এক আতংকের নাম৷ এই সময়ে ঘরের বাহিরে যাওয়াই যেখানে বিপজ্জনক, সেখানে বাইরে থেকে কিছু কিনে খাওয়াও কম বিপদের নয়। তাই এই বছর বলতে গেলে আমাদের প্রিয় জিলাপি ছাড়াই ইফতার করতে হচ্ছে।
কিন্তু, কেমন হয় বলুন তো, যদি বাসায় কোনো ঝামেলা ছাড়াই কম সময়ে জিলাপি বানিয়ে নেওয়া যায়? তাহলে শুধু শুধু বসে আফসোস করে লাভ কি? তাই আমি আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, সুস্বাদু মুচমুচে জিলাপির রেসিপি, যার মাধ্যমে আপনারা কম সময়ে সহজেই বাসায় বানিয়ে উপভোগ করতে পারেন মজাদার জিলাপি।
উপকরণঃ
জিলাপি বানানোর মূল উপকরণ গুলো হচ্ছে, ময়দা/আটা, চালের গুড়া, বেকিং সোডা, সামান্য লবন, চিনি, দারচিনি(ঐচ্ছিক), এলাচ(ঐচ্ছিক)।
এই সবগুলো উপকরন হাতের কাছে থাকলে এখুনি বসে পড়ুন জিলাপি বানাতে। নিচে আমি পরিমান গুলো বলে দিচ্ছি।
জিলাপির জন্যঃ
১.ময়দা এক কাপ
২.চালের গুড়া ১/২ কাপ
৩.খাবার সোডা ৩/৪ চামচ
৪.সামান্য খাবার লবন
শিরার জন্যঃ
১.চিনি ৪ কাপ
২.দারচিনি ২ টুকরো
৩.এলাচ ২টুকরো
শিরা তৈরিঃ
যেকোনো পাতিল বা অন্য পাত্রে, ৪ কাপ চিনি এর মধ্যে ১ কাপ পানি, দারচিনি ও এলাচ দিয়ে জ্বাল দিয়ে নিন। একবার জ্বাল হলেই চুলা বন্ধ করে দিন।
জিলাপি তৈরিঃ
প্রথমে, একটি বড় পাত্রে ময়দা, চালের গুড়া, বেকিং সোডা, এক চিমটি খাবার লবন চেলে নিন, যাতে কোনো দলাবদ্ধ অংশ না থেকে যায়, এরপর এই শুকনো আইটেম সবগুলো কে ভালো করে মিক্স করে নিতে হবে। এরপর এতে অল্প অল্প করে পানি দিয়ে মিশিয়ে নিন। মিক্সচার টার ঘনত্ব এমন হতে হবে যেনো সেটা খুব বেশি লিকুইড না হয়, আবার শক্তও না হয়। একটু ঘন করে লিকুইড রেখে দিতে হবে। পানি আপনার সুবিধা অনুযায়ী বুঝে ব্যবহার করবেন৷ যদি মিক্সচার টা পাতলা হয়ে যায় তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। সেক্ষেত্রে ভাজার সময়, জিলাপির শেইপ টা আনতে একটু কষ্ট হতে পারে। এই মিক্সচার টা মেশানোর সময় আপনাকে একপাশ থেকে টেনে টেনে হাত ঘুরিয়ে এবং উপর থেকে নিচে বারবার হাত দিয়ে ফেলে মেশাতে হবে। ভালো করে মিশানো হয়ে গেলে মিক্সচার টা আধা ঘন্টার জন্য রেখে দিন।
একটি ফ্রাইপ্যানে তেল দিয়ে মাঝারী আচে চুলা জ্বালিয়ে দিন। তেল এর পরিমান এমন হতে হবে যেনো জিলাপি একটু ডুবো তেল এ ভাজা যায়। জিলাপি দেওয়ার সময় তেলের নিচে চলে যাবে এবং পরে ফুলে উপরে উঠবে। তেল মাঝারী গরম হয়ে গেলে, তাতে ডিজাইন করে জিলাপি ছেড়ে দিন। জিলাপি ছাড়ার জন্য, আপনারা চাইলে দোকানের মত কাপড় ব্যবহার করতে পারেন অথবা পাইপিং ব্যাগ, অথবা নরমাল সসের বোতলেই ব্যবহার করতে পারেন। চুলার আচ টা সবসময় কম থেকে মাঝারি থাকতে হবে, বেশি আচ হলে সহজেই জিলাপি পুড়ে যাবে। এভাবে একদিকে গোল্ডেন ব্রাউন হওয়া পর্যন্ত ভাজুন, এরপর উল্টিয়ে আরেকপাশ ভেজে নিন। আপনাদের পছন্দ মত মুচমুচে হলে, চুলা থেকে নামিয়ে শিরায় ভিজান। শিরায় এক মিনিট ডুবিয়ে রেখে উঠিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
আশা করি সবাই এই রেসিপি ফলো করে চটজলদি জিলাপি বানিয়ে ফেলতে পারবেন। রেসিপির কোথাও বুঝতে সমস্যা হলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন এবং বানানোর পর জিলাপি কেমন হল, সেটাও কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!
রেসিপি পড়ে জিলাপি অর্ধেক খাওয়া হয়ে গেলো!
ধন্যবাদ আপনাকে
রেসিপি দেখে এখনই খেতে মন চাচ্ছে!
বানানোর চেষ্টা করবো।
সেই রোজার শুরু থেকে ভাবছি জিলাপি বানাবো। বানানোই হচ্ছেনা ? দেখি আপনার রেসিপিটা ফলো করে বানায়া ফেলবো একদিন।
রেসিপি টুকে নিলাম। এখন আম্মুকে দেখানোটা শুধু বাকি। রেসিপি দেখেই মুখে পানি এসে গেলো। খেতে না জানি কত মজা হয়। জিলাপি ছাড়া ইফতার ভাবাই যায় না সত্যি বলতে।