শিক্ষার্থীদের লকডাউন : ৫টি উপায়ে পার করুন অলস সময়

কথায় বলে, অলস মস্তিষ্ক শয়তানের আড্ডাখানা। এর প্রমাণও পেলাম কিছুদিন আগে। এমনও মানুষ রয়েছে যারা লকডাউনের এই অলস সময় কাটাতে ইউটিউব দেখে দেখে বোমা পর্যন্ত বানানোর চেষ্টা করেছে! ভাবতে পারেন এই অলস সময়টাও কতটা ভয়াবহ হতে পারে ?

আমরা যারা স্টুডেন্ট, তাদের জন্য এই সময়ের মূল্য অপরিসীম। ভবিষ্যৎ জীবনটা কেমন হবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করে আমরা এখন কিভাবে সময় পার করছি তার উপর। আমার আজকের লেখাটি সেই সব শিক্ষার্থীদের জন্য, যারা লকডাউনের সময়টাকে গঠনমূলক কাজে ব্যাবহার করতে চান। তো চলুন জেনে নেই এই সময়কে কাজে লাগানোর পাঁচটি উপায়।

stay-productive-in-lockdown

গল্পের বই ও পাঠ্যবই :

ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধ কিন্তু বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর এখন অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। সুতরাং পাঠ্যবই এখন একটু হলেও পড়াই লাগে। এছাড়া গল্পের বই পড়ে সময় কাটানো যায়। গল্পের বই  এর হার্ডকপি না থাকলে পিডিএফ পড়া শুরু করতে পারেন। মনে রাখবেন যত পড়বেন, আপনি ততোই জানবেন, ততোই এগিয়ে থাকবেন।

স্কিল ডেভেলপ :

এমন কোনো না কোনো কাজ অবশ্যই আছে যেটা আপনি ভালো পারেন। গান, নাচ, কবিতা আবৃত্তি, ছবি আঁকা, রান্না করা, গল্প/কবিতা লেখা, সেলাই করা— এছাড়াও অনেকের আরও অনেক রকম শখ রয়েছে। আপনি যেটা করতে পারেন, সেটাই নিয়মিত চর্চা করুন।

আমি নিজেও এখন একটু বেশিই লেখালেখি করছি। আপনারাও আপনাদের পছন্দের কাজগুলি নিয়মিত করতে থাকুন, দেখবেন সময়ও কাটছে, আবার সেই কাজে আপনার স্কিল ডেভেলপমেন্টও হচ্ছে।

অনলাইন কোর্স :

লকডাউনের কারণে অনেক অনলাইন প্রতিষ্ঠান তাদের অনলাইন কোর্সগুলো ফ্রি করে দিচ্ছে, কোথাও কোথাও আবার দিচ্ছে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়! এসব অনলাইন কোর্সগুলো করে রাখতে পারেন। এসব কোর্স করে যদি কয়েকটা অনলাইন সার্টিফিকেটও নিয়ে নিতে পারেন, তবে তা পরবর্তীতে আপনার সিভিতে যোগ করতে পারবেন। এগুলো আপনার ক্যারিয়ার গড়তে সহায়তা করবে।

অনলাইন টিউশন :

ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টদের শতকরা নব্বই ভাগই পার্টটাইম জব হিসাবে টিউশনি বেছে নেন। হাতখরচ জোগাড় করার জন্য এর থেকে সহজলভ্য উপায় আর হয়না। লকডাউনে যারা স্টুডেন্টদের বাসায় যেয়ে পড়াতে পারছেননা, তারা টিউশনি করাতে পারেন অনলাইনে। এতে যেমন সময় কাটবে তেমনি মাস শেষে হাতখরচটাও চলে আসবে।

শরীর চর্চা ও রূপচর্চা :

অনেকেই ঘরে বসে থাকতে থাকতে ডিপ্রেশনে চলে যান। কিছুই করতে ভালো লাগেনা। এসব ক্ষেত্রে নিজের একটু যত্ন নিলেই দেখবেন কেমন রিলাক্স লাগে। বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম, ইয়োগা করলে শরীর মন দুটোই বেশ ঝরঝরে মনেহয়। মাঝেমধ্যে একটু রূপচর্চা করা, ছাদে হাঁটাহাঁটি করা, পরিবারের অন্য সদস্যদের সময় দেওয়া, ঘর গোছানো— কাজগুলো তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে না হলেও এই ছোট ছোট কাজগুলোই কিন্তু দিন শেষে আপনাকে স্বস্তি দিতে পারে।

সবশেষে বলবো, সময় বদলায়। একদিন নিশ্চয়ই এমন সময় আসবে, যখন আমরা নির্ভয়ে বাড়ি থেকে বের হবো, একসাথে বসে আড্ডা দেবো আর অনেক ঘোরাঘুরি করবো। কিন্তু সেইদিন আসার আগ পর্যন্ত আমরা ঘর থেকে বের হবোনা। আমাদের নিজেদের জন্য, পরিবারের জন্য আমরা শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকার চেস্টা করবো। তাহলেই আমরা আবার মুক্ত হতে পারবো।

 

Similar Posts