যত সমস্যা দুশ্চিন্তায়

দুশ্চিন্তা শব্দটা আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রায় সবারই কোন না কোন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা লেগেই থাকে। দুশ্চিন্তা জিনিসটা আমাদের জন্য সত্যিই খারাপ। এই দুশ্চিন্তা যতোটা না মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করে ততোটাই শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে। হ্যাঁ, ঠিক শুনছেন। শারীরিক দিকেও এটি বেশ কুপ্রভাব ফেলে। চলুন মানসিক ও শারীরিক ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তার কুফল গুলো দেখে নেওয়া যাক-

কমে যেতে পারে আত্নবিশ্বাস-

দুশ্চিন্তায় মগ্ন ব্যাক্তির আত্নবিশ্বাস খুব একটা থাকে না বললেই চলে। তারা কাজ করার আগেই কাজের পরিণাম নিয়ে ভাবে। আর স্বাভাবিক ভাবেই তারা কাজের ফলাফলের ক্ষেত্রে সফলতা থেকে ব্যার্থতাকেই আপন করে নেয়। তাই দুশ্চিন্তা মগ্ন মানুষের আত্নবিশ্বাস থাকে না বললেই চলে। আর আত্নবিশ্বাস না থাকলে কোনো কাজ ঠিকভাবে করা সম্ভব হয় না।

দেখা যেতে পারে শারীরিক যত সমস্যা-

দুশ্চিন্তায় ভোগা ব্যাক্তির বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে , যেমন – ক্ষুধামান্দ্য, নিদ্রাহীনতা, উচ্চরক্তচাপ, মাথাব্যথা, বহুমুত্র, হৃদরোগ ইত্যাদি।
কখনো অতিরিক্ত টেনশনের কারণে”টেনশন হেডেক” বা অতিরিক্ত মাথাব্যথা দেখা দেয়,যার ফলে ঘাড় ও চোখের ব্যাথাও হয়।

ভেঙে যেতে পারেন অল্পতেই-

সাধারণত দুশ্চিন্তা তারাই করেন যারা নিজেদের কাজ বা কাজের ফলাফলে সন্তুষ্ট নন। এমনকি তারা ব্যার্থতাকে ভয় পেয়ে থাকেন। যদি দেখা যায় ফলাফল ভালো না হয়ে খারাপ হলো তবে তিনি মানসিকভাবে একেবারে দুমড়ে মুচরে যান। বেশ কিছুদিন লেগে যায় তার ঠিক হতে।

হতে পারে মানসিক সমস্যা-

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় হতে পারে দুনিয়ার যত মানসিক সমস্যা।যেমন – খিটখিটে মেজাজ, হতাশা,সকল অথবা প্রিয় যেকোনো কিছুতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলা, অল্পতেই রাগান্বিত হওয়া, বিভিন্ন অসামাজিক আচরণ করা, সহজ কাজও অনেক সময় কঠিন হয়ে যাওয়া (যা পরিবার ও কর্মক্ষেত্র উভয়েই ক্ষতিকর), কোনোকিছু ভালো না লাগা, পরিবারের কেউ কিংবা নিজের খুব কাছের মানুষকেও সহ্য না করতে পারা, শুধু শুধু নিজে কষ্ট পাওয়া।

দুশ্চিন্তা থেকে পরিত্রাণ পেতে-

১.দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির জন্য সর্বপ্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো ইতিবাচক চিন্তা বা পজিটিভ থিংকিং। সবচেয়ে ভালো হয় এমন মনোভাব রাখা যে, যা হবে দেখা যাবে। কারণ আপনি কাজটা করে ফেলেছেন। এখন যদি সেই কাজের ফলাফল নিয়ে দিনরাত দুশ্চিন্তা করে মাথার চুল সাদা করে ফেললেন তাহলে এতে কোনো লাভ তো নেই-ই উল্টো ক্ষতি হচ্ছে। তাই কাজের ফলাফলের ক্ষেত্রে যারা অসন্তোষে ভোগেন তাদের উচিৎ “যা হবে দেখা যাবে এমন মনোভাব প্রকাশ করা”।

২.” সবসময় ভালো হতেই হবে” এই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসুন। ভালো খারাপ নিয়েই তো জীবন। তাই জীবনের প্রতিটি ধাপে দেখা মিলবে ভালো খারাপ উভয়ের সাথেই। আপনার কাজের ফলাফল খারাপ হলে ‘লোকে কি ভাববে’ এটাও যদি আপনি ভাবেন তাহলে লোকে কি ভাববে? লোককে তাদের মতো ভাবতে দিন না, লোক আপনার রক্ত সম্পর্কের তো কেউ না। শুধু শুধু কেন তাদের কথা ভেবে নিজেকে কষ্ট দিবেন।

৩.সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস রাখুন। তার উপর ফলাফলের ভার চাপিয়ে দিন, বাকিটা তিনি দেখে নেবেন।

৪.আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন। কথায় কথায় রাগ হবেন না। আবার কথায় কথায় কাঁদবেনও না। নিজের একটা ব্যাক্তিত্ব ধরে রাখুন।

৫.নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। ফিটনেস বজায় রাখুন।

দুশ্চিন্তা ছেড়ে দিন। অযথা দুশ্চিন্তা করলে ফলাফল কখনো ভালো হয় না। নিজের জন্য সময় রাখুন। অবসরে প্রিয় পোষা প্রাণীদের সাথে সময় কাটান। দেখবেন ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।

Similar Posts

2 Comments

  1. খুবই প্রয়োজনীয় একটা পোষ্ট যা মানুষেরা দুশ্চিন্তাকে প্রতিনিয়ত আসক্ত বানিয়ে নিয়েছে।
    – ধন্যবাদ লেখিকা!

Comments are closed.