ঘরোয়া উপকরণে বাগান পরিচর্যা

ঘরে কিংবা ঘরের বাইরে,সবুজের ছোঁয়া না থাকলে পরিবেশ পূর্ণতা পায় না। ছোট বেলায় আমাদের অনেকেই My Favorite Hobby অনুচ্ছেদে বাগান করা লিখেছি। হয়তো অনেকে বাগান করতে গিয়েছিও,কিন্তু কারো গাছের পাতা হলুদ হয়ে গিয়েছে তো কারো গাছ মরে গিয়েছে, কারো গাছ ঠিকভাবে বেড়ে উঠছে না। এমন নানান সমস্যা আমাদের প্রায় ই হয়। নিজের লাগানো কোনো গাছের ফল খেয়ে যে তৃপ্তি পাওয়া যায় তার সাথে কোনো কিছুর তুলনা চলেনা তা একটা মরিচ হোক বা কোনো বৃক্ষ হোক।এছাড়া ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করায় ছোট ফুল গাছের তুলনা হয়না। শহরের বাসা বাড়িতে জায়গা কম হওয়ায় বারান্দায় বাগান করায় আগ্রহী অনেকেই, অনেকে আবার বাড়ির ছাদে।

অনেকেই টবে গাছ লাগায় ,অনেকের বাসায় পুরাতন বোতল বা মাটির হাড়ি ব্যবহার করে টব হিসেবে ব্যবহার করে। আজ জেনে নেব বাগান করার কিছু সমস্যা ও তাদের সমাধান। সমাধান এর ক্ষেত্রে এমন কিছু সাধারণ জিনিস ব্যবহার করব যা আমাদের হাতের কাছেই আছে।

সমস্যা ১ঃ  গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়া ও ঠিকভাবে বেড়ে না ওঠা।

 

কলার খোসা

সমাধানঃ আমাদের সবার বাসাতেই আমরা কলা খেয়ে থাকি। খাওয়া শেষে কলার খোসা ফেলে দেই। এই খোসা ফেলে না দিয়ে কাজে লাগানো যায় আপনার বাগানে। করণীয় হলো একটি পাত্রে পানি নিয়ে তাতে কলার খোসা ছোট করে কেটে দিয়ে ফুটিয়ে নিন। পানি কালো রং ধারণ করবে কিছু সময়ের মধ্যেই। ১৫-২০ মিনিট ফোটানোর পর ঠান্ডা করুন।ঠান্ডা হয়ে গেলে একটা ছাকনির সাহায্যে কালো রঙের পানি আলাদা পাত্রে নিয়ে নিন।এই পানি আপনার বারান্দার টবে লাগানো গাছে কিংবা বাগানে লাগানো গাছের গোড়ায় দিন।গাছের পাতা ঝরে যাওয়া,পাতা হলুদ হয়ে যাওয়া বন্ধ হবে এবং গাছ বেড়ে উঠবে খুব দ্রুত।

সমস্যা ২ঃ বীজ থেকে চারা গাছ উৎপন্ন না হওয়া

ডিমের খোসা
চা পাতা

সমাধানঃ বীজ থেকে চারা গাছ না হওয়ার পিছনে মূলত মাটির গুনাগুন ভালো না হওয়া এবং খারাপ মানের বীজ দায়ী। এক্ষেত্রে বীজ বপনের আগে মাটির সাথে ডিমের খোসা গুড়ো করে মিশিয়ে দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ডিমের খোসার পাশাপাশি আরও একটি জিনিস ব্যবহার করা যেতে পারে মাটির যত্নে যা আমাদের হাতের কাছেই আছে,তা হলো চা পাতা। আমরা চা খাওয়ার পর চা পাতা ফেলে দেই।এটা না ফেলে দিয়ে ডিমের খোসার মতন মাটির সাথে মেশানো হলে মাটির গুনাগুন বৃদ্ধি পায়। এ দুটি উপাদান মাটির সাথে মিশিয়ে তারপর বীজ বপন করলে চারা গাছ দ্রুত বেড়ে উঠবে।

সমস্যা ৩ঃ গাছে নেতিয়ে যাওয়া

সমাধানঃ আমরা জানি গাছ আলো বাতাস পূর্ণ স্থানে রাখতে হয়। কিন্তু এর মানে এই নয় যে সব সময় রোদে রাখতে হবে।আপনার বারান্দায় লাগানো গাছ এমন জায়গায় রাখুন যাতে আলো বাতাস পর্যাপ্ত পরিমাণে পায়। সাধারণত ফুল গাছের এক বেলা রোদ ই যথেষ্ট। বেশি রোদে অনেক সময় গাছ নেতিয়ে যায়।

সমস্যা ৪ঃ পোকার আক্রমণ

সমাধান: পোকার আক্রমণ ও দূর করব ঘরোয়া জিনিস দিয়েই। বেশির ভাগ সময় পাতার নিচের অংশে পোকার আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। এসব পোকা পাতা খেয়ে ফেলে। দূর করার জন্য লাল মরিচের গুড়া, সামান্য ডিটারজেন্ট এবং পেঁয়াজ এর রস পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন।
এছাড়াও গাছে নিয়মিত পানি দেয়ার দিকে খেয়াল রাখতে হবে যেন গাছের গোড়া শুকনো না থাকে। ক্ষুদ্র কিছু পদক্ষেপ নিলেই আপনিও গড়ে তুলতে পারেন নিজের বাগান এবং আপনার অবসর সময়কে আরও আনন্দময় করতে পারেন।

Similar Posts

One Comment

  1. বাগান করার ক্ষেত্রে এই জিনিসগুলো অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। জিনিসগুলো সম্বন্ধে মোটেও আইডিয়া ছিলো না। এই আর্টিকেলের মাধ্যমেই তা অবগত হয়ে গেলাম। থ্যাংকস অথার!

Comments are closed.