বাজে খরচ কমানোর ৪টি উপায়!

(লেখা কপি করার কারণে এই লেখক কে বাংলা ভাইব থেকে ব্যান করা হয়েছে। আর এই লেখার মূল সোর্স এই ভিডিও (https://www.youtube.com/watch?v=k-es1qNERxs)। আমাদের অগোচরে প্লাগারাইজড কন্টেন্ট সাইটে পাবলিশ হয়ে যাওয়াতে আমরা অডিয়েন্সের কাছে আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।)

যদি আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করি, গতমাসে আপনি কিসের পিছনে কত টাকা খরচ করেছেন? তবে ৯০% সম্ভাবনা রয়েছে আপনি তার কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না। একটা বিশাল বড় জাহাজের তলায়ও যদি একটা ছোট্ট ছিদ্র থেকে যায়, তবে সেই বিশাল জাহাজটাও কিন্তু পানিতে ডুবে যেতে পারে।

four-ways-to-reduce-waste

এরকমই আপনি যদি আপনার বাজে খরচগুলোর প্রতি এখনই সতর্ক না হন, ভবিষ্যতে হয়তো এর কারণেই আপনাকে অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে পারে। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক- কিভাবে আমরা আমাদের বাজে খরচগুলো কমাতে পারি..

১. আপনার ব্যয়গুলি রেকর্ড করুন

নিজের বাজে খরচগুলোর প্রতি সতর্ক হওয়ার একমাত্র উপায়, প্রতি মাসের সমস্ত খরচ কোথাও একটা রেকর্ড করে রাখা। এবার এই রেকর্ড করে রাখার কাজটা সিম্পল করার জন্য, আপনি নিজের স্মার্ট ফোনটাকে ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, আপনার স্মার্টফোনটিই হলো বর্তমানে আপনার সবসময়ের সঙ্গী। একটা অ্যাপ রয়েছে Monefy নামে। এখনই অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

 

যেটা ব্যবহার করে খুব সিম্পলভাবে এবং খুব সহজেই আপনি যখনই কোনো টাকা খরচ করবেন, তখনই ক্যাটাগরি অনুযায়ী সেই খরচটা আপনি এই অ্যাপে এন্ট্রি করে নিতে পারবেন। এর ফলে, যখন মাসের শেষে আপনি দেখতে পাবেন, আপনার ইনকামের প্রায়ই ২০% বা হয়তো তারও বেশি টাকা, শুধুমাত্র বাজে জিনিসের পেছনে খরচ হয়ে গেছে, যেগুলো সত্যি বলতে কোনো প্রয়োজনই ছিল না, তখনই আপনার মধ্যে একটা সর্তকতা আসবে। নতুবা আপনি কোনোদিন জানতেও পারবেন না যে প্রতিমাসে কত কত টাকা আপনার বাজে খরচে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর যার ফলে কোনোদিন এই বিষয়ে আপনি সতর্কও হয়ে উঠতে পারবেন না।

২. প্রশ্ন এবং ধৈর্য ধরে পরিক্ষা করুন

টাকা সঞ্চয়েরর পথে সবথেকে বড় যেটা বাঁধা, সেটা হলো বাজে খরচগুলা আইডেন্টিফাই করতে পারা এবং আইডেন্টিফাই করে ফেললেও, তারপর সেগুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখা। এক্ষেত্রে আপনাকে যে টেকনিকটা সাহায্য করবে, সেটা হলো ASK & WAIT।

আমরা অনেক সময় অ্যাডভার্টাইজমেন্টের শিকার হয়ে বা ডিসকাউন্টের লোভে পড়ে, এমন কিছু জিনিস কিনে ফেলি, যেগুলো সত্যি বলতে আমাদের কোনো প্রয়োজনই ছিল না। তাই যখন আপনি এমন কোনো জিনিস কিনছেন, যেটা নিয়ে আপনি কনফিউজড যে হয়তো এটা আপনি বাজে খরচ করে ফেলবেন, তখন সে জিনিসটা কেনার আগে আপনাকে দুটো স্টেপ সব সময় ফলো করতে হবে।

প্রথম স্টেপ হল- ASK (প্রশ্ন করা)। নিজেকে প্রশ্ন করুন, সত্যি কি আমার এই জিনিসটা দরকার? নাকি অন্য কোনো কারণে বা জাস্ট দেখানোর জন্য আমি জিনিসটা কিনতে যাচ্ছি। যদি উত্তর আসে- না, সত্যি বলতে কোনো দরকার নেই, তাহলে তো জিনিসটা কেনার কোনো দরকারই নেই। কিন্তু যদি উত্তর আসে হ্যাঁ, সত্যি দরকার, তাহলে নেক্সট স্টেপ এ আসুন।

যেটা হলো WAIT (অপেক্ষা করা)। তিন দিন ওয়েইট করুন এবং আবার নিজেকে সেই একই প্রশ্নটা করুন। সত্যি কি এখন আমার এই জিনিসটা কেনা দরকার? এবারও যদি হ্যাঁ উত্তর আসে, তবেই জিনিসটি কিনুন।

৩. সেভিংস করুন

একটা সার্ভে থেকে জানা গেছে, প্রায় ৫৬% মানুষ এমার্জেন্সি ফান্ড হিসেবে কোনো টাকাই আলাদা করে সরিয়ে রাখেন না। কিন্তু এদিকে আবার প্রতিটা মানুষের জীবনেই একবার না একবার হলেও, ফাইনান্সিয়াল এমার্জেন্সি দেখা দেয়ই। সেটা চাকরি হারানোর ফলেই হোক, বা কোনো মেডিকেল ইমার্জেন্সিই হোক। তাই ফাইন্যান্স এক্সপার্টরা সবসময় সাজেস্ট করেন- আমাদের সবসময় উচিত, নিজের মিনিমাম ছয় মাস জীবন-যাপনের খরচ সম্পূর্ণ আলাদা করে এমার্জেন্সি ফান্ড হিসেবে সরিয়ে রাখা। যাতে জীবনের যেকোনো রকমের এমার্জেন্সিতেই আমরা স্ট্রেস এবং দুশ্চিন্তায় ভেঙে না পড়ি।

আর এই টাকাটা সম্পূর্ণ আলাদা একটি ব্যাংক একাউন্টে, যেটার কোনো ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকবে না, সেরকম একাউন্টে সরিয়ে রাখা উচিত। যাতে একমাত্র কোনো সত্যিকারের এমার্জেন্সি ছাড়া আমরা ঐ টাকায় হাত না দিই। তাই যদি আপনিও ঐ ৫৬% লোকেদের মধ্যে একজন হন, আমি আপনাকে সাজেস্ট করবো, আজই একটা নতুন ব্যাংক একাউন্ট খুলুন এবং একটা প্ল্যান বানিয়ে, ধীরে ধীরে অন্তত নিজের ছয় মাসের জীবন-যাপনের খরচ, ঐ একাউন্টে জমিয়ে সরিয়ে রাখুন। এটা আপনার জীবনের সবথেকে খারাপ সময়ে, আপনাকে সবথেকে বেশি সাহায্য করবে। কারণ, যখন আপনি কোনো কাজ করতে পারবেন না, তখন আপনার সেভিংস আপনার হয়ে কাজ করবে।

৪. আগে সংরক্ষণ করুন এবং পরে ব্যয় করুন

টাকা সঞ্চয়ের ব্যাপারে আমাদের অনেকেরই ধারনাটা কিছুটা এরকম- মাসের সমস্ত খরচগুলো সেরে, তারপর যেটুকু টাকা বেঁচে থাকবে, সেটা আমাদের সঞ্চয় করে রাখা উচিত।

কিন্তু বিশ্বের অন্যতম সফল ইনভেস্টর Warren Buffett কিন্তু এর ঠিক উল্টোটাই সাজেস্ট করেন। উনার মতে আমাদের উচিত, আগে টাকা সঞ্চয় করা এবং তারপর বাদ-বাকিটা খরচ করা। আমাদের উচিত- সবার প্রথমে নিজেকে পে করা, তারপর অন্যদের।

তাই স্যালারি পাওয়ার পরই প্রথম কাজটা হলো- স্যালারির অ্যাটলিস্ট মিনিমাম ১০% টাকা সেভিংস ফান্ডে তুলে সরিয়ে রাখা। এরপর স্যালারির আরেকটা মিনিমাম ১০% টাকা ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডে তুলে সরিয়ে রাখা। যে টাকাটা সঠিক সময়ে ও সঠিক সুযোগ-বুঝে আমাদের ইনভেস্টমেন্টের কাজে লাগানো উচিত। বাদ-বাকি ৮০% টাকা দিয়ে আমাদের মাসের বাদ-বাকি খরচ ম্যানেজ করে নেওয়া উচিত।

এটা সঠিকভাবে করার জন্য আপনাকে প্রথমে মিনিমাম একমাস নিজের সমস্ত খরচগুলোর রেকর্ড করতে হবে। তারপর সেই অনুযায়ী প্ল্যান করতে হবে। সমস্ত বাজে খরচগুলো বাদ দিলে, আপনার পক্ষে নিজের স্যালারির ঠিক কতটা ১০% নাকি তার বেশি সেভ করা সম্ভব, সেই মতে মাসের শুরুতেই সেই পার্সেন্টেজ টাকাটা সেভ করে আলাদা সরিয়ে ফেলতে হবে।

উপরের টিপস গুলো ফলো করলে আশা করি আপনার বাজে খরচের পরিমাণ অনেকংশেই কমে আসবে । পাশাপাশি একটি ভালো এমাউন্টের সেভিংসের মালিক হয়ে যেতে পারবেন কয়েক বছরের মধ্যেই। আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।

Similar Posts