Farhan Tariq / আগস্ট 9, 2020
অলস বসে না থেকে চাইলেই কিন্তু আমরা এমন অনেক কিছু করতে পারি যা আমাদের ভবিষ্যতের যাত্রাপথে বেশ কাজে দিবে। খুব কঠিন কিছু যে করতে হবে তা নয় কিন্তু দরকার অধ্যবসায় আর নিজেকে স্কিল্ড করে তোলার দৃঢ় প্রত্যয়। এখানে আমি ৫টি বিষয় নিয়ে কথা বলেছি যেগুলো খুব সাধারণ কিন্তু এদের প্রভাব আমাদের জীবনে অনেক বেশি।
আমরা জন্ম থেকেই বাংলাতে কথা বলছি আর লেখাপড়ার খাতিরে অল্প বিস্তর ইংরেজি তো সবাই পারি, কিন্তু কজন এই দুইটি ভাষার পাশাপাশি অন্য ভাষায় কথা বলতে বা লিখতে পারে?
বাসায় শুধু বসে না থেকে নতুন একটা ভাষা শেখা হতে পারে একটা দারুণ প্রোডাক্টিভ কাজ। বর্তমানে মাতৃভাষীর সংখ্যা অনুসারে ভাষাসমূহের তালিকায় প্রথম ৫টি দেশ হচ্ছে চীনা ভাষা, স্প্যানিশ, ইংরেজি, আরবি আর বাংলা ভাষা (উইকি)। এর মাঝে স্প্যানিশ হচ্ছে নতুন ভাষা হিসেবে বেছে নেয়া অন্যতম জনপ্রিয় ভাষা। এছাড়া আছে ফ্রেঞ্চ, ইটালিয়ান মেক্সিকান, জার্মান ইত্যাদি। অ্যানিমে লাভারদের আবার জাপানিজ, কোরিয়ান ভাষার প্রতি আলাদা টান থাকতে দেখা যায়।
ভাষা যেটাই হোক, একবার শিখে নিলে আপনার জন্য খুলে যাবে নতুন এক দুনিয়া। ভাষা শেখার জন্য ব্যবহার করতে পারেন Duolingo application. ৩৫ টারও বেশি ভাষা শিখতে পারবেন এখান থেকে তাও আবার একদম ফ্রি!
এতদিন কাজের চাপে বা আলসেমির জন্য হয়তো ইংরেজির চর্চাটা করা হয়নি আপনার কিন্তু এবার সুযোগ শুরু করে দেয়ার। প্রথমে ১০ মিনিট ১০ মিনিট করে আস্তে আস্তে ১ ঘন্টা, এরপর ২ ঘন্টা ইংরেজির চর্চা করা যেতে পারে।
ইংরাজির চর্চা মানে ইংরেজির চারটি পার্টঃ রিডিং, লিসেনিং, স্পিকিং আর রাইটিং এর চর্চা করা। রিডিং পার্টের জন্য বেশি করে ইংরেজি নিউজ পেপার, আর্টিকেল পড়া অনেক কাজে দিবে। মানে না বুঝলে ডিকশনারি তো আছেই। এরপর যা পড়লেন তা লিখে রাখার ট্রাই করলে আপনার রাইটিং প্র্যাকটিসের কাজে দিবে। আবার, গান শুনলে তা যদি আপনি মুখে মুখে বলার চেস্টা করেন তাহলে আপনার স্পিকিং টাও হয়ে যাবে অনেকাংশে। এছাড়া ফেসবুকে অনেক ইংরেজি শেখার গ্রুপ আছে যেখানে আপনি চাইলেই সময় করে অনেকের সাথে বা একজনের সাথে ইংরেজি চর্চা করতে পারেন।
মজার কথা হচ্ছে আপনি যদি এভাবে চর্চা করতে পারেন তাহলে অজান্তেই আপনি একভাবে IELTS এর প্রিপারেশন নিয়ে নিচ্ছেন!
আধুনিক যুগে কম্পিউটার যে কতটা ভূমিকা পালন করে এটা আশা করি আর বলতে হবে না। তাই চাইলে আজকেই শুরু করে দিতে পারেন কম্পিউটারের ট্রেনিং নেয়া। বেসিক ট্রেনিং ৪-৬ মাসের মধ্যেই করে ফেলা সম্ভব। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, পাওয়ার পয়েন্ট আর এক্সেল এর কাজ গুলো আপনার আজীবন কাজে লাগবে তাই প্রথমেই এগুলো শিখে ফেলুন ভালো করে।
এরপর চাইলে এক ধাপ দিয়ে কোনো প্রফেশনাল কোর্স করে নেয়াটা হবে আরো বুদ্ধিমানের কাজ। তবে ভয় নেই, এগুলোর জন্য বাইরে যেতে হবে না, বাসায় বসেই করে ফেলতে পারেন সব কোর্স একদম ফ্রিতে তাও সার্টিফিকেট সহ! বিস্তারিত জানতে ঢু মারতে পারেন edX.org, coursera.org, lynda.com এর মত ওয়েবসাইটে। বোনাস আর অনেক কিছু পাবেন তা বলাই বাহুল্য।
অনেকেরই শোনা যাচ্ছে এখন তাদের ঘুমের টাইমটেবিল নাকি পালটে গেছে। আজকালের ট্রেন্ড হচ্ছে রাত জেগে ওয়েব সিরিজ দেখে দিনে অনেক দেরিতে ওঠা। চাইলেই কিন্তু এ টেন্ড ব্রেক করা যায়। এ জন্য কোন মোটিভেশন না বরং দরকার সেলফ কেয়ার মনোভাব। শুধু কি ঘুম, অনেকে তাদের রুমটা আগোছালো করে রাখে সারাদিন, এক কাপড় পরে থাকে অনেকদিন। এগুলো ত্যাগ করতে পারলে যেমন মন ভাল থাকবে তেমনি কাজে আসবে গতি।
এগুলো ছাড়াও নিয়মিত ব্যায়াম করা শুরু করতে পারেন। যারা ডায়েট করবেন বলে ঠিক করেছিলেন তারা চাইলে এ সময়টা কাজে লাগাতে পারেন। আর কিছু হোক না হোক, কোন পার্টানারের সাথে ইংরেজি চর্চা করার সময় এগুলো কথা বলার অনেক রসদ তো দেবেই।
নতুন অভ্যাসের পাশাপাশি এমন কিছু করতে পারেন যা আপনি আগে করেননি। যেমন হয়তো আগে আপনি কখনো রান্না করেননি। তাই এসময়টা আপনি রান্না শিখে রাখতে পারেন। রান্না না হলে আঁকিবুঁকি রঙে আগ্রহ থাকলে মেতে উঠতে পারেন ক্যানভাস আর রঙতুলির আঁচড়ে। বই পড়ার অভ্যাস না থাকলে এটাও বিসমিল্লাহ বলে শুরু করে দিন। অথবা বারান্দায় শুরু করতে পারেন ছোট একটা বাগান। এটাও না হলে হাতের ফোনের ক্যামেরা দিয়েই আরম্ভ করে দিতে পারেন ইনডোর ফটোগ্রাফি। আজকাল অনেক গ্রুপেই ফটোগ্রাফি কন্টেস্ট হয়। কে জানে হয়তো আপনার পরের ছবিটিই হতে পারে সম্ভাব্য বিজয়ী!
আশা করা যায় আপনি এই ৫টি কাজের কোন না কোনটি কাজে লাগিয়ে হয়ে যাবেন অনেক বেশি প্রোডাক্টিভ।
FILED UNDER :অন্যান্য , পাঁচ মিশালী , লাইফস্টাইল
Comments are closed.
One Comment
ফাতেমা says
ধন্যবাদ, লেখাটি অনেক ভালো লেগেছে।