Md. Jahid Al Azom / এপ্রিল 26, 2020
বিশ্ব এখন সংকটময় মুহূর্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের প্রকোপে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে এসে গেছে পবিত্র রমজান মাস। ধর্মীয় বিধি-বিধানের পাশাপাশি এসময় সুস্থ থাকা জরুরী। রোজা রাখার কারণে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে হয়। এ সময় জীবন-যাপনে ও নিয়মিত কাজে কর্মে কিছুটা পরিবর্তন আসে। এজন্য সাহরি ও ইফতারিতে স্বাস্থ্যকর খাদ্য দ্রব্য বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ।
একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ রোজা রেখে কিভাবে স্বাস্থ্য ঠিক রাখবেন বা রোজার সময় কোন ধরনের খাদ্যদ্রব্য বেশি পরিমাণে খাদ্য তালিকায় রাখবেন এবং কোন ধরণের খাদ্যদ্রব্য খাদ্য তালিকা থেকে পরিহার করবেন তা জানা প্রয়োজন।
রোজা রেখে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম থেকে যেমন বিরত থাকতে হবে, তেমনি খাদ্য তালিকায় এমন খাবার রাখতে হবে যা সহজে হজম হয়। তবে, একবারে খুব বেশি খাওয়া ঠিক হবে না।
সারাদিন রোজা রাখার ফলে শরীরে পানির অভাব হয়, তাই সেহরী ও ইফতারিতে পানি জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। পানীয় জাতীয় খাবের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও ফলের রসই বেশি কাজে লাগে।
ঘরে তৈরি খাবার দিয়ে ইফতার করা সবচেয়ে নিরাপদ। বেশি তেলে ভাজা বাজারের মুখরোচক ইফতার শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর ।
তাই ইফতারিতে তৈলাক্ত ও ভাজা পোড়া খাবার বর্জন করুন। এর পরিবর্তে ফলমূল, খেজুর বেশি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
মাছ, ডাল, ভাত আদর্শ খাবার। ভোররাতে গরুর মাংস এড়িয়ে চলুন। এর পরিবর্তে মুরগির মাংস খেতে পারেন।
তবে শাকসবজি ও ডাল শরীরের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে।
খাদ্য তালিকায় পানি, চিড়া, রুটি, ভাত, সবজি, ডাল, ডিম, হালকা খিচুড়ি ও ফলমূল রাখতে পারেন। এসব খাবার শরীরে শক্তি বাড়ায়।
বেশি তেল ও মশলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন। তবে ডাল, ভাত, ফলমূলের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে ইফতারির পর হালকা কম তেলযুক্ত তেহারি খেতে পারেন।
নিয়মিত যেসব খাবার খান রোজার সময়ে সেই খাবারগুলোই যথেষ্ট। তবে সারাদিন রোজা রাখার পরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে।
একেবারে অলস থাকা যেমন ক্ষতিকর, তেমনি অতিরিক্ত পরিশ্রমও ক্ষতিকর। তাই শারীরিক পরিশ্রম কমানোর চেষ্টা করুন। এর সাথে সাথে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন।
আপনাকে বুঝতে হবে কোন খাবারগুলো সহজে হজম হয় এবং কোন খাবারগুলো সহজে হজম হয় না।
যেসকল খাবার সহজে হজম হয় সেইসকল খাবারকেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। যেসব খাবার হজমে সমস্যা করে সেগুলো না খাওয়াই ভালো।
অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। পরিমাণ মতো ফল ও সবজি দিয়ে ইফতার করার চেষ্টা করুন।
খাবার ধীরে ধীরে ভালো করে চিবিয়ে খাবেন। ইফতারির শুরুতে পানি শরীরের জন্য উপকারী। তাই বেশি বেশি পানি পান করুন।
এর পাশাপাশি খেজুর খেতে পারেন। খেজুর শরীরে শক্তির যোগান দেবে।
রোজার সময় সারাদিন পর স্যুপ শরীরকে সতেজ রাখতে সহায়তা করবে। এটি আপনার হজম প্রক্রিয়াও ঠিক রাখবে।
পুষ্টিবিদদের মতানুসারে, শাক সবজি, বাঁধাকপির পরিবর্তে ফুলকপির স্যুপ বা লেটুস পাতার স্যুপ অনেক উপকারী। লেটুস পাতায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় না।
খাবার ঠিক রাখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। ইফতারের পর বা সেহরির পর ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে রোজা রেখে ওষুধ সেবন করা যায়। এসময় ওষুধ সেবনে সতর্ক হতে হবে। বিশেষ করে যাদের দুর্বলতা, ক্লান্তি, অ্যাসিটিডি, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা কিডনি জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যা আছে তাদের সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। এসব বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
এই রমজানে পরিমিতি বজায় রেখে খাওয়া উচিত। যেই সংযমের কথা রমজানের মূল নীতিতেও আছে । এই রমজানে নিয়ম মেনে খাওয়া দাওয়া করুন, সুস্থ থাকুন।
FILED UNDER :লাইফস্টাইল
Comments are closed.
Comments
Mehedi Hasan Khan says
ভালো লিখেছেন। রোজা আসলেই শুরু হয়ে গ্যাসের সমস্যা।
tasnim says
ভালো ছিল। তবে সেহরির পর নাকি অতিরিক্ত পানি না খাওয়াই ভালো। রোগ হওয়ার আশংকা দেখা যায়।