Jahan / নভেম্বর 8, 2020
বাঙালী হিসেবে বরাবরই আমরা কারুকার্য-পূর্ণ আসবাব ব্যবহারে আগ্রহী। প্রাচীন রাজা-বাদশাদের আমল থেকে শুরু করে বর্তমানের আসবাব, সব ধরণের আসবাবেই কারুকার্যের দেখা মেলে। এসব আসবাব যেমন ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তেমনি আভিজাত্যপূর্ণ রূচিরও পরিচায়ক। যদিও বর্তমানে নানান ধরণের আসবাব রয়েছে যা কাঠের তৈরি নয়, তবুও কাঠের আসবাবের চাহিদা বাঙালির চিরদিনের।
কাঠের আসবাবের পরিচর্যা করা স্টিল বা প্লাইউড এর তৈরী আসবাবের পরিচর্যার চেয়ে আলাদা। স্টিল এর তৈরি আসবাব চাইলে পানির সাহায্যে ধুয়ে ফেলা যায় এবং এগুলোর চাকচিক্য দীর্ঘদিন ধরে রাখতে তেমন বেগ পেতে হয়না। কিন্তু কাঠের তৈরী আসবাব না ধোয়া ই শ্রেয় এবং সঠিক উপায়ে কাঠের তৈরি আসবাব এর যত্ন না নিলে তার চাকচিক্য যেমন দ্রুত হারিয়ে যায় তেমনি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। খুব সামান্য কিছু উপায় অবলম্বন করলেই ঘরোয়া উপকরণের সাহায্যে এই আসবাবগুলোর সঠিক উপায়ে যত্ন নেওয়া সম্ভব। ঘরোয়া উপকরণের সাহায্যে আসবাবের যত্ন নিতে যা যা করণীয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো।
সমস্যা : কারুকাজ পূর্ণ কাঠের আসবাবের কারুকাজের ফাঁকে ফাঁকে ময়লা।
সমাধান ১ঃ
প্রথমে আসবাবপত্র কোনো নরম সুতি কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। এক্ষেত্রে পুরাতন গেঞ্জি কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি কোনো ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করা যায়। কেননা ব্রাশের সাহায্যে কারুকাজের নকশার ফাঁকের ময়লা যত ভালো ভাবে দূর করা যায় তা কাপড়ের সাহায্যে অনেকটাই সম্ভব হয়না।
প্রথম ধাপে ময়লা পরিষ্কার হয়ে গেলে দ্বিতীয় ধাপে একটি বোতলে সমান পরিমানে কেরোসিন এবং নারিকেল তেল নিতে হবে।ভালো ভাবে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণ নষ্ট হবার কোনো ভয় নেই। এবার তুলা বা ছোট কোনো কাপড়ের সাহায্যে মিশ্রণ নিয়ে কারুকাজের ফাঁকে ফাঁকে লাগাতে হবে। এতে তুলার সাথে সেসব ধুলো কনা বেরিয়ে আসবে যা ব্রাশ বা কাপড়ের সাথে বের হয়নি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে পুনরায় কাপড় দিয়ে যদি মোছা যায়, তাহলে প্রায় ৯৯ ভাগ ময়লা বেরিয়ে আসবে, সাথে চাকচিক্য ফিরে পাবে আসবাব।
সমাধান ২ঃ
অনেকের কেরোসিন এর গন্ধ সহ্য হয়না। তাদের ক্ষেত্রে অলিভ ওয়েল এবং সিরকা সমান পরিমানে নিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে ব্যবহার করা যেতে পারে। এ মিশ্রণ ও নষ্ট হওয়ার কোনো ভয় নেই। এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও একই ভাবে প্রথমে ব্রাশ বা সুতি কাপড়ের সাহায্যে মুছে তারপর মিশ্রণ ব্যবহার করতে হবে। কেরোসিন প্রয়োগে যেমন চাকচিক্য আসবে অলিভ অয়েল ব্যবহারে তার চেয়ে কোনো অংশে কম চাকচিক্য হবে না। এক্ষেত্রে যেহেতু কেরোসিন ব্যবহার করা হচ্ছেনা তাই বিকল্প উপায়ে গন্ধ ছাড়াই আসবাব পরিষ্কার করা সম্ভব।
সমাধান ৩ঃ
যদি ঘরে অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল না থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে তারপিন তেল, ভিনেগার বা সিরকা এবং সরিষার তেল সমান পরিমানে নিয়ে মিশ্রণ বানাতে হবে। তারপিন তেলের আলাদা এক গন্ধ থাকে এবং অনেকেরই তা সহ্য হয়না। এক্ষেত্রে যেহেতু ভিনেগার বা সিরকা ব্যবহার করা হয়েছে তা তারপিন তেলের সে গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে। এ মিশ্রণও নষ্ট হওয়ার ভয় নেই।
এভাবে খুব সহজেই আপনার প্রিয় কাঠের আসবাবটির যত্ন নেওয়া যায় খুব কম খরচে। আজ এ পর্যন্তই। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
FILED UNDER :অন্যান্য , লাইফস্টাইল
সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ