উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ ।। পর্ব-২
দল বিন্যাস: উয়েফার সদস্য ৫৫টি রাষ্ট্র। উয়েফা প্রতিটি দেশের ঘরোয়া লীগের উপর ভিত্তি করে প্রতিটি লীগগুলোকে মার্কিং এর আওতায় আনে। মার্কিং করার জন্য লীগের অনেক গুলো বিষয়কে বিবেচনা করা হয়। যেমন: লীগে প্রতিদ্বন্দিতা, অবকাঠামো গত উন্নতি, খেলোয়াড়, কোচ, মাঠ, ক্লাবের সম্পদ ইত্যাদি। এই মার্কিং সিস্টেমকে উয়েফা কর্তৃপক্ষ “উয়েফা দেশ গুনাঙ্ক” হিসেবে সঙ্গায়িত করে। উয়েফা দেশ গুনাঙ্ক-এর নিয়ম অনুসারে উয়েফার এসোসিয়েট দেশের র্যাঙ্কিং করা হয়, যার মাধ্যমে নির্ধারিত হয় এই প্রতিযোগিতায় কোন এসোসিয়েট দেশ হতে কতটি দল অংশগ্রহণ করবে।
প্রথম ৪টি এসোসিয়েট দেশ হতে প্রত্যেকটির ঘরোয়া লীগের প্রথম ৪টি দল অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। এভাবে ১৫ নম্বর দেশ পর্যন্ত একের অধিক দল অংশগ্রহণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে যেসব দেশ থাকে, ওইসব দেশ হতে শুধুমাত্র ঘরোয়া লীগ জেতা দলই অংশ নিতে পারে। একটি এসোসিয়েট দেশ হতে সর্বোচ্চ ৫টি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে।
এছাড়া শেষবারের উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের বিজয়ীদল ও উয়েফা ইউরোপা লীগের বিজয়ীদলের এই আসরে সরাসরি খেলার একটা সুযোগ আছে। ইউসিএল ও ইউইএল বিজয়ী শর্তসাপেক্ষে তারা যদি তাদের ঘরোয়া লীগের মাধ্যমে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন না করেও এই আসরে খেলতে পারবে। কারণ একটি এসোসিয়েট দেশ হতে সর্বোচ্চ ৫টি দল চ্যাম্পিয়নস লীগে খেলতে পারে, যদি চ্যাম্পিয়নস লীগের বিজয়ী এবং ইউরোপা লীগের বিজয়ী উভয়ই উয়েফার শীর্ষ ৪ সদস্য রাষ্ট্রের যেকোনো একটির অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তাদের নিজস্ব ঘরোয়া লীগে তারা শীর্ষ ৪-এর বাহিরে থেকে লীগ শেষ করে তবে উক্ত লীগের ৫ম দল হিসেবে তারা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।
কিন্তু যদি এমন হয় যে, গত আসরের বিজয়ীদল ইত্যঃমধ্যে নিজের দেশের ঘরোয়া লীগে প্রথম দিকে অবস্থান করায় তার আর অতিরিক্ত প্রবেশাধিকারের প্রয়োজন হচ্ছে না, তাহলে উক্ত স্থানে পরবর্তী এসোসিয়েট দেশে থেকে একটি বাড়তি দল অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।
লীগের প্রথমেই আসে বাছাইপর্ব। বাছাইপর্বের কয়েকটি স্তর থাকে। প্রাথমিক, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বাছাইপর্ব।
প্রাথমিক বাছাইপর্ব: ৫২ থেকে ৫৫ নং এসোসিয়েট দেশের ঘরোয়া লীগের ৪টি বিজয়ী দল এ পর্বে অংশ নিবে এবং ১টি বিজয়ী দল পরবর্তী পর্বে খেলার সুযোগ পাবে।
প্রথম বাছাইপর্ব: ২০ থেকে ৫১ নং এসোসিয়েট দেশের ঘরোয়া লীগের ৩২টি বিজয়ী দল ও প্রাথমিক বাছাইপর্বে বিজয়ীদল এ পর্বে অংশ নিবে এবং প্রথম ১৬টি দল পরবর্তী পর্বে খেলার সুযোগ পাবে।
দ্বিতীয় বাছাইপর্ব: এ পর্ব থেকে প্লে-অফ পর্ব পর্যন্ত দুটি করে উপপর্ব থাকে। চ্যাম্পিয়নস উপপর্ব ও লীগ উপপর্ব। চ্যাম্পিয়নস উপপর্বে ১৬ থেকে ১৯ নং এসোসিয়েট দেশের ঘরোয়া লীগের ৪টি বিজয়ী দল ও প্রথম বাছাইপর্ব থেকে উত্তীর্ণ ১৬টি দল এই স্তরে অংশ নিবে এবং প্রথম ১০টি দল পরবর্তী পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। আর লীগ উপপর্বে ১২ থেকে ১৫ নং এসোসিয়েট দেশের ঘরোয়া লীগের ৪টি রানার্স-আপ দল এই উপপর্বে অংশ নিবে এবং প্রথম ২টি দল পরবর্তী পর্বে খেলার সুযোগ পাবে।
তৃতীয় বাছাইপর্ব: চ্যাম্পিয়নস উপপর্বে ১৪ এবং ১৫ নং এসোসিয়েট দেশের ঘরোয়া লীগের ২টি বিজয়ী দল ও দ্বিতীয় বাছাইপর্বের চ্যাম্পিয়নস পথ থেকে উত্তীর্ণ ১০টি দল এই পর্বে অংশ নিবে এবং প্রথম ৬টি দল পরবর্তী পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। আর লীগ উপপর্বে ৭ থেকে ১১ নং এসোসিয়েট দেশের ঘরোয়া লীগের ৫টি রানার-আপ দল, ৬ নং এসোসিয়েট দেশের লীগ টেবিলের ৩য় দল এবং দ্বিতীয় বাছাইপর্বের লীগ উপপর্বের প্রথম ২টি দল এই স্তরে অংশ নিবে এবং প্রথম ৪টি দল পরবর্তী প্লে-অফ পর্বে প্রবেশ করবে।
প্লে-অফ পর্ব: চ্যাম্পিয়নস উপপর্বে ১২ এবং ১৩ নং এসোসিয়েট দেশের ঘরোয়া লীগের ২টি বিজয়ী দল ও তৃতীয় বাছাইপর্বের চ্যাম্পিয়নস উপপর্ব থেকে উত্তীর্ণ ৬টি দল এই পর্বে অংশ নিবে এবং প্রথম ৪টি দল পরবর্তী পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। আর লীগ উপপর্বে তৃতীয় বাছাইপর্বের লীগ উপপর্বের ৪টি দল এই পর্বে অংশ নিবে এবং প্রথম ২টি দল পরবর্তী গ্রুপ পর্বে প্রবেশ করবে।