Swapnil / আগস্ট 21, 2020
ছাত্রজীবন থেকে কর্মস্থল প্রতিক্ষেত্রেই ইন্টারভিউ বোর্ড ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। এই ইন্টারভিউ বোর্ডের মাধ্যমে কারো কপাল খুলে যায় স্বপ্নের চাকরি পেয়ে, তো কারো কপাল পোড়ে। ইন্টারভিউ বোর্ডে ভালো করার জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা উচিত, যা সাধারণত ফ্রেসারদের জানা থাকে না।
আজ আপনাদের সামনে সেই কৌশলগুলোই তুলে ধরবো:
১. প্রবেশ পর্যায়ঃ দরজা দিয়ে ঢুকে সোজা এগিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে আপনার সামনে থাকা ইন্টারভিউয়ারদের সালাম দিন। তাদের চোখে চোখ রাখুন, এরপর ভদ্রভাবে, আত্মবিশ্বাস নিয়ে হ্যান্ডশেক করুন।
২. মার্জিত পোশাকঃ
শেখ সাদী বলেছিলেন, পোষাক মানুষকে মহান করে না। কথা সত্য হলেও এটা ইন্টারভিউ বোর্ডের বিপরীত। অমার্জিত এবং ক্যাজুয়াল ড্রেসে ইন্টারভিউতে যাওয়া ঠিক নয়। আপনাকে মার্জিত পোশাক পরে ইন্টারভিউতে যেতে হবে। ফরমাল শার্ট, প্যান্ট, জুতো, টাই পরে ইন্টারভিউতে গেলে শুরুতেই আপনার ভাবমূর্তি অন্য পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াবে।
৩. মনোযোগ দিয়ে প্রশ্ন শুনুনঃ
প্রত্যেকটি কথা খুবই মনোযোগ দিয়ে শুনুন যাতে আপনার বুঝতে সমস্যা না হয় আর তাকেও যাতে পুনরায় বলতে না হয়। তিনি যদি ইংরেজীতে কথা বলে আপনিও ইংরেজিতে বলুন। বাংলায় বললে আপনিও বাংলায় বলুন।
৪. সঠিক/ভুল উত্তরঃ
প্রশ্নকর্তা যা প্রশ্ন করবে তার সঠিক উত্তর দিন। এটা স্বাভাবিক যে আপনি সব প্রশ্নের উত্তর জানবেন না, তবে যেসব উত্তর জানবেন না তা নিয়ে দ্বিধা থাকলে আন্দাজে কোন উত্তর দিবেন না। আপনার একটি আন্দাজ উত্তর আপনাকে অনেক নিচে নামিয়ে দিতে পারে। না পরলে সরি বলবেন তবে ভুল উত্তর দিবেন না।
৫. সবজান্তা ভাব দেখানো পরিহার করুন
ইন্টারভিউ বোর্ডে নমনীয় ভাব বজায় রাখুন। আপনি যদি বেশি জেনেও থাকেন তবুও ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিন। বাড়িয়ে কিছু বলবেন না।
৬. কিছু স্বভাব পরিহার করা
একই কথা বারবার বলা, বারবার ওকে/ ঠিকাছে; পা নড়ানো, তোতলানো,ভীত-সন্ত্রস্ত ভাব এসব এড়িয়ে চলতে হবে। আপনাকে সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সাথে সেই ১৫ থেকে ২৫ মিনিট অতিবাহিত করতে হবে।
৭. প্রমিত ভাষায় কথা বলুন
ইন্টারভিউয়ের সময় আপনাকে প্রমিত ভাষায় কথা বলতে হবে। আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা যাবে না। অপ্রাসঙ্গিক কোন কিছু বলা যাবে না।
৮. ধারণা রাখা ও নিজের সম্পর্কে জানাঃ
কারেন্ট এফেয়ার্স পড়ুন। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে জানুন। ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রশ্ন কর্তাদের প্রিয় বিষয় হলো এই সমসাময়িক বিষয়। এর দ্বারা উনারা এটা দেখতে চান যে ক্যান্ডিডেট বর্তমানের সাথে কতটা তাল মিলিয়ে চলছে। নিজের ব্যাপারে জানার অর্থ হলো নিজের জন্মস্থান নিয়ে জানা। তারা আপনাকে আপনার জেলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞেস করবে, কোন ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে জানতে চাইবে। এসবপ্রশ্নের উত্তর যদি দিতে না পারেন তবে তা লজ্জার ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।
৯. ভাইভা পরীক্ষায় আরো কিছু বর্জনীয় বিষয়
অনেক সময়ই দেখা যায় যে ভাইবা বোর্ডে ঢোকার আগে যে অপেক্ষার স্থানে বসতে হয় সেখানে বসে অনেকে জোরে জোরে কথা বলছে, অনেকে জোড়ে জোরে পড়ছে; আবার অনেকে হেডফোন কানে লাগিয়ে গান শুনছে। এসব অবশ্যই বর্জনীয়। অপেক্ষা রুমে যদি আপনার কোন বন্ধুর সাথেও দেখা তবুও আপনি তার সাথে ঐ সময়ে বন্ধুসুলভ আচরণ করবেন না। সে যদি আপনার আগে ভাইবা বোর্ডে থেকে বের হয় তবে অবশ্যই আপনি তাকে জিজ্ঞেস করবেন না ভেতরে কি কি জিজ্ঞেস করেছিল। এই সব কিছুই মনিটরিং হয়। আপনি অবশ্যই ইন্টারভিউ বোর্ডে কারো সাথেই ঝগড়ায় জড়াবেন না, তর্ক করবেন না।
উপরের বিষয়গুলি খেয়াল রাখলে আশা করা যায় এই পনের থেকে বিশ মিনিট আপনার জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দেবে।
FILED UNDER :অন্যান্য , পাঁচ মিশালী
Comments are closed.
Comments
আবদুল কাদের says
মাশা আল্লাহ ভাই, আপনি তো দারুণ লিখেছেন। বিশেষ করে অনেক জিনিস এখানে শেখার আছে যেগুলো হয়তো জানা ছিল না। খুব সুন্দর ও গোছানোভাবে আপনি বুঝিয়ে দিলেন বিষয়টা। অনেক অনেক ধন্যবাদ!
Swapnil says
ধন্যবাদ। এমন অনুপ্রেরণা পেলে ক্যারিয়ার বিষয়ক আরো লেখব। আপনার আর কিছু জানার থাকলে জিজ্ঞেস করতে পারেন; পরবর্তী আর্টিকেলে সে বিষয় তুলে ধরব।