টুভালু : অজানা এক স্বর্গ

টুভালু !!! নাম শুনে হয়তো মনে হতে পারে কোন  খাবার বা হোটেল অথবা কোন অজানা খেলার কথা! প্রশান্ত মহাসাগরের এক ক্ষুদ্র দেশ যার নাম হয়তো আমরা অনেকই না শুনে থাকবো। এলিস দীপপুঞ্জ নামে পরিচিত এই অঞ্চল পূর্বে বৃটিশ উপনিবেশ ছিল। ১৯৭৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করা এই ক্ষুদ্র দীপ দেশের রাজধানী হল ফুনাফুতি

Tuvalu: An unknown paradise

টুভালু

২৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই ছোট্ট  দেশটির জনসংখ্যা  প্রায় সাড়ে দশ হাজার। আয়তনে বিশ্বের চতুর্থ ছোট দেশ এবং সবচেয়ে কম ভ্রমন করা দেশগুলোর ভিতর এটি একটি। দেশটির একটি  মাত্র এয়ারপোর্ট এর রাজধানীতে অবস্থিত। একটি  মাত্র  উড়োজাহাজ তাও তিনদিন পর পর আসে! বলতে পারেন যান্ত্রিকতা থেকে মুক্ত এক শান্ত এলাকা যার আছে অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। জনসংখ্যা  কম হওয়ায়  অধিবাসিরা একে ওপরের সাথে  ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। তবে এখানকার  মানুষ  স্বাস্থ্যসেবা  সঠিকভাবে  পায় না। যেহেতু দ্বীপরাস্ট্র, তাই অধিবাসিরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কৌটা জাত খাদ্যদ্রব্য গ্রহন করতে বাধ্য হয় এবং স্থুলতা  ও হৃদরোগে  বেশি আক্রান্ত হয়।

 

টুভালুর ঐতিহ্যবাহি খেলা হলো কিলিকিটি ( Kilikiti)  যেটা অনেকটা  ক্রিকেটের মত।  এছাড়াও  এখানে ফুটবল, ভলিবল ও অন্যান্য খেলা  প্রচলিত আছে।

এখানকার নাগরিকদের  একটা বড় গুণ হলো তারা আপ্যায়ন প্রিয়।  হয়তো সাগরে পাশের মানুষের মন সাগরের  মতই হয়!  এদের নিজস্ব  ভাষা থাকলেও বেশিরভাগ  লোকই ইংরেজিতে  কথা বলতে পারে। এদের জীবন  জীবিকা  খুবই  সাধারণ।  তবে এরা হাতের  তৈরি  জিনিস  যেমন মালা, নেকলেস , তারা এগুলা তাদের ঐতিহ্যের  অংশ করে নিয়েছে। মাছ ধরাও তাদের অন্যতম একটা পেশা।

ভ্রমন করতে অনেক কম লোকের  দেখাই পাওয়া যায় এখানে, তবে কেউ ভ্রমনে গেলে তাকে অবাক হতে বাধ্য করে টুভ্যালু তার সৌন্দর্য  দিয়ে।  এখানকার  একমাত্র  এয়ারপোর্টটি বিকালবেলা  হয়ে যায় সবার খেলার মাঠ। সামনে সাগরের গর্জন, আর পড়ন্ত বিকালে একটু ফুটবল খেলা রানওয়েতে, ভাবতেই  কেমন শিহরন অনুভব  করা যায়।

সর্পিল আকৃতির এই দ্বীপ দেশটির নয়নাভিরাম  দৃশ্য যে কোন ভ্রমন পিপাসুদের  জন্য স্বর্গ মনে হতে পারে। তবে দুঃসংবাদ  হলো এই যে, আমরা মানবজাতী এতটাই শিল্পায়নের দিকে এগিয়েছি যে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর বিষয়টা যে কতটা ভয়াবহ তা আমরা বুঝতে পারি না। এই ছোট্ট সুন্দর দেশটি গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার জীবন্ত  উদাহরণ।

উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের বরফ প্রতি বছর গলে যে অনেক এলাকা সমুদ্র পৃষ্ঠে বিলিন হয়ে যাচ্ছে তা হয়তো আমরা চার দেয়ালের  ভিতর  বসে বুঝতে পারি না। এদেশের মানুষ এর বাস্তব উদাহরণ দেখছে ও ভয়াবহতা  বুঝতে পারছে।

টুভালু
টুভালু

মাত্র  সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৪.৫ মিটার উঁচু এই দেশের  অনেক এলাকা  ইতিমধ্যে  সমুদ্রের  পৃষ্ঠে  বিলীন  হয়ে গেছে। ধারনা করা হয় আগামী  ৩০-৫০ বছরে পুরো দেশটাই হয়তো বিলীন হয়ে যাবে। হয়তো বিশ্ব ম্যাপে আর খুঁজে পাওয়া যাবেনা এই নয়নাভিরাম দেশটাকে। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রাথর্না করি এমনটি যেন না হয়।

আমরা যেন আমাদের পৃথিবীটাকে আমাদের বসবাসের উপযোগী করে রাখতে পারি।  তাই আমাদের  উচিত এই গ্লোবাল  ওয়ার্মিং  এর বিষয়ে যে যার অবস্থান  থেকে সোচ্চার  হওয়া ও পরিবেশ রক্ষা করা

Similar Posts