সাইকোপ্যাথদের সাইকোলজি
সাইকোপ্যাথ হলো এক ধরনের পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারে ভোগা মানুষ। সাইকোপ্যাথি যেকোনো লিঙ্গের মানুষেরই হতে পারে। উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী পৃথিবীর প্রায় এক শতাংশ মানুষ এই পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারে ভুগছে।
সাইকোপ্যাথরা সাধারণত ইগোয়েস্টিক, অসামাজিক এবং অন্যদের প্রতি আবেগহীন প্রকৃতির হয়ে থাকে। ম্যানিপুলেশন পাওয়ার অসম্ভব বেশি এদের। চোখে চোখ রেখে এরা স্পষ্টভাবে মিথ্যা বলার ক্ষমতা রাখে।
অনেকের মতে সাইকোপ্যাথদের আলাদা করে চিহ্নিত করা খুবই কঠিন কাজ। এমনকি সাইকোলজিস্টদের মধ্যেও এ নিয়ে মতপার্থক্য আছে। তবে অধিকাংশ সাইকোলজিস্টের মতে, সাইকোপ্যাথদের মধ্যে সাধারণত দুইটি বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
- নির্ভীক আধিপত্য
- আত্মকেন্দ্রিক আবেগপ্রবণতা
সাইকোপ্যাথরা নিজেদের খুব বড় কিছু ভাবে, অহেতুক ঝুঁকি গ্রহণ করতে পছন্দ করে, সামাজিক রীতিনীতির তোয়াক্কা করে না এবং নিষ্ঠুর প্রকৃতির হয়ে থাকে।
সাইকোপ্যাথির সাথে সংযুক্ত কিছু বিষয়:
১. যেসব পেশায় সাইকোপ্যাথ বেশি-
CEO, আইনজীবী, পুলিশ অফিসার, মিডিয়ার সাথে সম্পৃক্ত মানুষ, সার্জন এসব পেশার মানুষরা বেশি সাইকোপ্যাথ হয়ে থাকে।
এরমানে এই না যে প্রতিটা সি.ই.ও, পুলিশ অফিসার কিংবা আইনজীবী সাইকোপ্যাথ। এটাও সরাসরি বলা যাবেনা যে সাইকোপ্যাথিক টেনডেন্সি থাকাটা এই পেশায় যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করে (হতেও পারে!)।
২. ভয়ংকর সাইকোপ্যাথ চিহ্নিত করা-
Ms Nora Schütte এর নেতৃত্বে এক গবেষণায় দেখা গেছে সাইকোপ্যাথরা দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি সাইকোপ্যাথ।
প্রাইমারি সাইকোপ্যাথরা কিছু ক্ষেত্রে বেশ কো-অপারেটিভ এবং ফ্রেন্ডলি হয়ে থাকে। এরা অতটা আত্মকেন্দ্রিক আবেগপ্রবণতার দিকে ধাবিত হয়না। মানুষের সাথে হাসিখুশিভাবেই মিশে যেতে পারে।
সেকেন্ডারি সাইকোপ্যাথরা বেশ ভয়ংকর প্রকৃতির হয়ে থাকে। এরা মানুষকে সাহায্য করতে পছন্দ করেনা। তবে নিজেদের কাজে এরা খুব ভালো পারফরম্যান্স দেখায়।
Ms Nora Schütte দাবী করেছেন, ‘নির্ভীক আধিপত্য’ বৈশিষ্ট্যটি প্রাইমারি সাইকোপ্যাথদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
৩. সাইকোপ্যাথরা দেরিতে ঘুমাতে যায়-
যেসব মানুষ দেরিতে ঘুমাতে যায় এবং দেরি করে ঘুম থেকে উঠে তাদের মধ্যে নার্জিসিজম এবং সাইকোপ্যাথি বেশি দেখা যায়।
প্রতারণা, নার্সিসিজম এবং সাইকোপ্যাথি এই তিনটাকে একত্রে দ্যা ডার্ক ট্রায়াড বলা হয়ে থাকে।
এই ডার্ক ট্রায়াড দেরিতে ঘুমানোর সাথে সরাসরি সম্পর্কিত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
Dr. Peter K. Jonason বলেছেন,
যারা ডার্ক ট্রায়াডে অনেক বেশি স্কোর করেছে, তারা অনেকাংশেই রাতের শিকারি জীবজন্তু, সিংহ কিংবা অন্ধকারের প্রাণীদের মত।
৪. কম সহানুভূতিশীল-
আপনার পাশে একজন মানুষ যদি হাই তুলে তাহলে সাধারণ একজন মানুষ হিসেবে আপনারও হাই উঠবে। এটা সহজাত একটা বিষয় এবং এটা সহানুভূতিশীলতার সাথে সম্পর্কযুক্ত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
কিন্তু সাইকোপ্যাথরা স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক, ম্যানিপুলেটিভ এবং কম সহানুভূতিশীল।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাইকোপ্যাথদের পাশে কেউ হাই তুললে সাধারণ মানুষের তুলনায় সাইকোপ্যাথদের মধ্যে এটা কম সংক্রমিত হয়।
৫. ক্রিমিনাল সাইকোপ্যাথ
যদিও এটা বলা হয়ে থাকে যে সাইকোপ্যাথ মানেই ক্রিমিনাল নয়, তারপরও সাইকোপ্যাথি একজনকে ক্রিমিনাল হতে সাহায্য করে।
সাইকোপ্যাথদের মধ্যে সামাজিক রীতিনীতি মেনে না চলার একটা প্রবণতা দেখা যায়। আত্মনিয়ন্ত্রণের অভাব কিন্তু লক্ষ্যের প্রতি প্রচন্ড ফোকাসড থাকার বৈশিষ্ট্যটা ক্রিমিনাল হওয়ার জন্য সরাসরি ফুয়েল যোগায়।
৬. তিক্ত এবং বাজে স্বাদযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া-
তিক্ত এবং বাজে স্বাদযুক্ত খাবারে আগ্রহ সাইকোপ্যাথি, নার্সিসিজম এবং স্যাডিজমের সাথে সরাসরি যুক্ত বলে এক গবেষণায় দেখা গেছে।
আজকে এখানেই শেষ করছি। পরের আর্টিকেলে হয়তো সাইকোলজির আরো অবাক করা কোনো টপিক নিয়ে হাজির হয়ে যাবো।
আমার পড়া এই পর্যন্ত সবচেয়ে অস্থির একটা আর্টিকেল ছিল। বন্ধুমহলে সবাই আমাকে অসামাজিক, অমিশুক,অদ্ভুত ইত্যাদি বলে ভালোই ক্ষেপায়। কিন্তু আমার কখনো গায়ে লাগেনি তেমন। কারনটা আজকে জানলাম আমিও কোনো এক ভাবে সাইকোপ্যাথদের অন্তর্ভুক্ত। দু-একটা বিষয় ছাড়া প্রায় সবই মিল পাচ্ছি। তবে আমি ভালো মানুষ?। কোনো অপরাধের দিকে পা বাড়াইনি। বাড়াবোও না আশা করি??। কিন্তু আর্টিকেলটা বেশ ছিল।
আহ! বেস্ট কমপ্লিমেন্ট। থেংকিউ তাসনিম।
আমার তো মনে হয় এই জেনারেশনের বেশিরভাগ মানুষই কম বেশি সাইকোপ্যাথ ?
আমারও তাই মনে হয়। তবে যারা আসলে সাইকোপ্যাথ তারা নিজেও জানে না যে আসলে তারা সাইকোপ্যাথ ??