Curriculum Vitae || কিছু নির্দেশনা

Curriculum Vitae (CV) শব্দটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত । কেননা আমাদের কর্ম জীবন শুরুই হয় এরই হাত ধরে ।

Curriculum Vitae হচ্ছে একজন ব্যক্তির পরিচয়, যোগ্যতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রাপ্তি,লক্ষ্য এবং কিছু ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নিজের পছন্দ, অপছন্দ, আগ্রহ, শখ, নেতৃত্বদানের ক্ষমতা ইত্যাদির রিপোর্ট । সহজ ভাষায়, চাকরিদাতার কাছে নিজেকে তুলে ধরার উপযুক্ত কৌশল।

আমরা অনেকে এটি কে Resume ও বলে থাকি । CV ও Resume একটি Basic পার্থক্য রয়েছে তা হল – Resume এ  মূলত এক বা দুই পৃষ্ঠায় লেখা হয় কিন্তু CV এর ক্ষেত্রে লেখায় পৃষ্ঠার সীমাবদ্ধতা থাকে না  এতে বিবরণগুলোও  তুলনামূলক বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হয়।

CV এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ

১৪৮২ সালে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির লিপিবদ্ধকৃত সিভি
১৪৮২ সালে লিওনার্দো দা ভিঞ্চির লিপিবদ্ধকৃত সিভি

১৪৮২ সালে লিওনার্দো দা ভিঞ্চি চাকুরি পাবার আশায় ডিউক অফ মিলানের নিকট তার অর্জন সমূহ(ভাস্কর্য এবং লাইটওয়েট ব্রিজ নির্মাণ সহ) লিপিবদ্ধ আকারে তুলে ধরেন যা পূর্বে কেউ কখনো করে নি । তাই লিওনার্দো দা ভিঞ্চি কে Curriculum Vitae এর উদ্ভাবক বলা হয়। অন্যদিকে ১৫০০ সালের দিকে ভ্রমণকারীরা তাদের নিজস্ব জীবন বৃত্তান্ত তৈরী করতো যা স্থানীয় জনগন বা প্রধান এর নিকট তাদের নিজেদের পরিচয় তুলে ধরতে সাহায্য করতো । এরপর ১৯৫০ সালে   চাকুরি  আবেদনের ক্ষেত্রে CV উপস্থাপনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় । ১৯৮৪ সালে “How to write your CV” নামে একটি সৃজনশীল গাইড প্রকাশিত হয়। অন্যদিকে ২০০৩ সালে Linked In অনলাইন CV সংযোজন ব্যবস্থা চালু করে ।

আমারা অনেকেই  মনে করি আমাদের গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর CV লিখতে হয়  কিন্তু বিষয়টি এমন নয় ।ছাত্র অবস্থায় থাকাকালীন সময়ে একটি CV লিখে ফেলতে হয় ।এতে করে যে সুবিধা টা হয় তা হল পরবর্তী  লক্ষ্য নির্ধারণ করা সহজ হয়।

CV প্রস্তুত করার সময় লক্ষ্যনীয় বিষয়সমূহঃ

১ .CV এর জন্য অসংখ্য ফরমেট রয়েছে । যেকোনো ফরমেট ব্যবহার করা যাবে কিন্তু  লক্ষ্য রাখতে হবে সিভির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেন একই ফরমেট থাকে ।

২. CV তে প্রোফেশনাল  যেকোনো একটি  Text Font ব্যবহার করতে হবে । হেডিং ব্যতীত বাকি সব জায়গা তে যথাসম্ভব একই font size ,একই Color অনুসরন করতে হবে।  Text alignment যেন সবসময়  একই থাকে সে বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে।

৩.CV মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে তৈরী করা শ্রেয় । এছাড়াও পাওয়ার পয়েন্টেও তৈরী করা যায়।

৪.সদ্য তোলা নিজের ছবি সংযোজন করতে হবে । ছবির রেজুলেশন কমে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে । CV তে ছবি যুক্ত করার সময় অবশ্যই তা বক্সের মধ্যে যুক্ত করতে হবে। অন্যথায় pdf ফরমেট এ Convert করার সময় ছবি বিকৃত হবার সম্ভবনা থাকবে।

৫.CV তে “LIFO” অর্থাৎ “Last in First out” ফরমেট অনুসরন করতে হবে ।এর অর্থ হচ্ছে যে জিনিসটি আমার সর্বশেষ অর্জন করেছি তা  শুরুতে রাখতে হবে । এভাবে ক্রমান্বয়ে সর্বপ্রথম অর্জনটি শেষে রাখতে হবে ।

৬.চেষ্টা করতে হবে  অভিজ্ঞতা সমূহ যথাসম্ভব বিস্তারিত আকারে তুলে ধরার।

৭.যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে   ২ পেইজের মধ্যে শেষ করার । পরবর্তীতে কর্মজীবনে প্রতি ১০ বছরের অভিজ্ঞতা জন্য ১ পেজ বৃদ্ধি করতে হবে ।

৮.কোন জব ফিল্ডে আবেদন করা হবে তার উপর ভিত্তি করে CV তৈরি করতে হবে।

৯.রেফারেন্স হিসেবে কাউকে দেবার পূর্বে অবশ্যই এ বিষয়ে যাকে দেয়া হবে তাকে অবহিত করতে হবে । রেফারেন্স এমন ২ জনকে  দিতে হবে যারা বর্তমানে ভালো কোনো সেক্টরে ভালো পজিশনে কর্মরত আছেন।।

১০.CV Killer বাক্য যেমন “আমি কাজ খুজছি”, “আমি সব কাজ করতে পারব”,”যে কোনো পোষ্টে চাকুরী করতে আগ্রহী” এরকম বাক্য পরিহার করতে হবে ।

১১.CV পাঠানোর সময় অবশ্যই .doc ফাইলকে .pdf ফাইলে রূপান্তর করতে হবে এবং Cover Letter সংযোজন করতে হবে ।মেইলে এ কোন পোস্টের জন্য আবেদন করা হবে তা উল্ল্যেখ করে CV সংযুক্ত করে পাঠাতে হবে।

১২.সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে অন্যের CV ফরমেট অনুকরণ করা যাবে না।

পরিশেষে আমাদের মনে রাখতে হবে একটি  চাকুরী প্রাপ্তির প্রথম হাতিয়ার হচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ CV। তাই CV তৈরী ও এর আনুসঙ্গিক বিষয় গুলো নিয়ে আমাদের ছাত্র অবস্থা থেকেই সচেতন হতে হবে ।

Similar Posts