ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবেন যেভাবে
ডায়াবেটিস হলো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত একটি রোগ। এই রোগের এমন কোনো ঔষধ নেই যা খেলে আপনি এ রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। বরং পরিমাণমতো খাবার খাওয়া, শরীরচর্চা করা এবং সঠিকভাবে জীবনযাপন করার মাধ্যমে আপনি এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। এই আর্টিকেলে আপনি জানবেন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়গুলো। আর যদি আপনার জানা না থাকে যে, ডায়াবেটিস কি এবং কেন হয় ? তাহলে সে সম্পর্কে জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন।
ব্লাড গ্লুকোজ টেস্টিং
খালি পেটে আর খাবার পরে, এই দুইবার ব্লাড শ্যুগার টেস্ট করতে হয়। এরপর দুই টেস্টের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে আপনার খাবারের মেন্যু আর ঔষধের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
ব্লাড গ্লুকোজ কেমন থাকা উচিত?
যদি খাবার আগে (খালি পেটে) 4mmol/L থেকে 6 mmol/L এবং খাবারের পরে 7.8mmol/L এর কম থাকে তাহলে আপনার গ্লুকোজ শ্যুগার লেভেল স্বাভাবিক আছে বলে ধারনা করা হয়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে কি কি খাবার খাবেন?
- শাক (Leafy Greens)––শাকসবজি পুষ্টিকর এবং ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম থাকে। পালংশাক, পাতা-কপি এবং অনান্য শাকগুলোতে ভিটামিন -সি এবং খনিজ লবণ প্রচুর পরিমানে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন -সি ব্লাডে শ্যুগারের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- দারুচিনি (Cinnamon)—-জনপ্রিয় এই মসলার ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে মারাত্মক ভূমিকা আছে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দারুচিনি ব্লাডে শ্যুগারের মাত্রা কমায় সাথে ইনসুলিন নিঃসরণের সেনসিবিলিটি বাড়ায়।
- ডিম—-প্রতিদিন ডিম খেলে হার্টের সমস্যা হ্রাস পায়। ডিম প্রদাহ কমায়, ইনসুলিন সেনসিভিলিটি বাড়ায় এবং HDL বা High Density Cholesterol এর পরিমাণ বাড়ায় যা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী।
এছাড়াও, ডিমে থাকে Lutein, Zeaxanathin এবং antioxidants যা আমাদের চোখের বিভিন্ন রকম রোগ থেকে রক্ষা করে।
এছাড়া,
- স্যালমন জাতীয় তেলযুক্ত মাছ
- কমলা, মাল্টা জাতীয় ফল
- টমেটো
- বাদাম
- শিম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী খাবার।
কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত না–
- শুষ্ক ফল যাতে চিনি থাকে
- জ্যাম,জেলি ইত্যাদি সংরক্ষিত খাদ্য
- ফলের জুস
- সোডিয়াম দেয়া সংরক্ষিত শাকসবজি
- পটেটো চিপস
- ফ্রেঞ্চ ফ্রাই
অর্থাৎ একজন ডায়াবেটিস রোগীর যেকোনো ধরনের সংরক্ষিত খাবার এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার একদম পরিত্যাগ করা উচিত।
ডায়াবেটিসের কোনো ঔষধ নেই বলে অনেকেই ধরা পড়ার পর ভেঙে পড়েন। তাদের জন্য কিছু উপদেশ –
সব জানুন– ডায়াবেটিস হলে একজন ডাক্তারের অধীনে থেকে আপনার পরিস্থিতি কেমন সে সম্পর্কে জেনে নিন। তিনি আপনাকে এই রোগের ওভারভিউয়ের সাথে সাইকোলজিকাল হেল্প করতে পারবেন।
আপনার অনুভূতি কে গ্রহণ করতে শিখুন- অনেকেই ডায়াবেটিস ধরা পড়লে ভাবে হায়!হায়! কিন্তু ডায়াবেটিস ও অন্য রোগের মতোই একটা রোগ। আপনি নিয়মানুযায়ী চললে এটি পুরোপুরি আপনার কন্ট্রোলে থাকবে। তাই অসুস্থতার সীমাবদ্ধতাকে গ্রহণ করে নিন।
বাস্তববাদী হোন- প্রথমদিকে এতো এতো বাধা নিয়মকানুন, খাবারের রেস্ট্রিকশন আপনার কাছে খারাপ লাগতেই পারে। এ ব্যাপারে আপনাকে বাস্তববাদী হতে হবে। মেনে নেয়ার ক্ষমতা, খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা নিজের মধ্যে তৈরি করতে হবে।
ডায়াবেটিস হলে আতঙ্কের কিছু নেই। বরং আপনি যদি ডায়েট মেনটেইন করেন এবং ডাক্তারের পরামর্শমতো চলেন তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ে চিন্তিত হবার কিছুই নেই।