হোম কোয়ারান্টাইন হয়ে উঠুক উপভোগ্য
দিন দিন বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা। কোনোভাবেই এর লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হচ্ছে না। এ ভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে হোম কোয়ারান্টাইনে আছে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ। কিন্তু শুয়ে বসে সময় আর কত কাটানো যায়? ঘরে বসে থাকার এই দিনগুলোকে আমরা উপভোগ্য করে তুলতে পারি নানা উপায়ে।
১. বই পড়া : বই মানুষের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। বই পড়ে জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি আনন্দের সাথে সময়ও কাটানো হয়। এই অবসর সময়টিতে পড়ে ফেলতে পারেন ভালো ভালো লেখকের বিভিন্ন স্বাদের বইগুলো। সাহায্য নিতে পারেন পিডিএফ কিংবা বিভিন্ন অনলাইন লাইব্রেরির। পড়তে পড়তে হারিয়ে যেতে পারেন জ্ঞানের রাজ্যে।
২. লেখালেখি: সাহিত্যচর্চায় মেতে উঠতে পারেন নির্জন নিরিবিলি এই সময়টিতে। মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখতে পারেন হৃদয়ের অব্যক্ত কথা। হয়তো পেশাদার লেখকের মতো হবে না, কিন্তু তিলে তিলে এই লেখা থেকেই একসময় আপনি হয়ে উঠবেন অনেক বড় মাপের লেখক। তাই আর দেরি নয়। কাগজ-কলম নিয়ে বসে পড়ুন এখনই। কাজে লাগান সময়টিকে।
৩. স্কিল ডেভেলপমেন্ট: করোনা-পরবর্তী সময়টাতে প্রায় সব কর্মক্ষেত্রের মানুষজনের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞগণ ধারণা করছেন। পরিবর্তিত সেই বিশ্বে টিকে থাকতে হলে স্ব স্ব ক্ষেত্রে নিজেকে আরও দক্ষ করে তুলতে হবে। বর্তমানের অবসর সময় টুকু কাজে লাগিয়ে নিজের পুরাতন কোন দক্ষতা ঝালিয়ে নিতে পারেন অথবা বিভিন্ন সফট স্কিল কিংবা প্রযুক্তিগত ব্যাপারে নিজেকে আরো দক্ষ করে তুলতে পারেন।
৪. রান্নাবান্না: স্পেশাল রান্নাবান্না করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে পারেন নিজের ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। প্রতিদিন নতুন নতুন রেসিপির নতুন নতুন আইটেম রান্না করে খাওয়াতে পারেন সবাইকে। যারা ভালো রান্না পারেন, তাদের জন্য তো কথাই নেই। যারা পারেন না, তারাও ইউটিউব দেখে কোমর বেঁধে লেগে যেতে পারেন। সফল আর বিফল যাই হোন, নতুন অভিজ্ঞতা তো হলো।
৫. মুভি দেখা: এই সময়ে মুভি দেখে কাটিয়ে দিতে পারেন ঘন্টার পর ঘন্টা। সময় সুযোগের অভাবে অনেকের মুভি দেখা হয় না। এখনই উপযুক্ত সময়। সিলেক্ট করুন পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় নির্মিত সেরা মুভিগুলো। তারপর মুভি দেখতে দেখতে সময় কাটান আনন্দের সাথে।
৬. সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং: সামাজিক দূরত্ব এই সময়েে বাধ্যতামূলক হলেও ভার্চুয়াল যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোনো বাঁধা তো নেই। বন্ধুবান্ধব-প্রিয়জনের সাথে মেতে উঠুন ভিডিও চ্যাটিংয়ে। চলুক সীমাহীন আড্ডা, মজা-মাস্তি। যে বন্ধুটার সাথে কয়েকবছর ধরে সময়ের অভাবে কথা বলতে পারেন না, তাকেও ম্যাসেঞ্জারে নক দিয়ে চমকে দিন। খোঁজখবর নিন দূরে থাকা আত্মীয়স্বজনদের। ভিডিও কলে সংযুক্ত হয়ে আড্ডায় কাটিয়ে দিন সকাল-সন্ধ্যা-রাত।
তাছাড়া চরম বিপদের এই সময়ে ধর্মকর্মেও মনোযোগী হতে পারেন। পরম দয়ালু সৃষ্টিকর্তার প্রেমে কাটুক স্বস্তিময় সময়। নিজের শরীর ঠিক রাখতে ছাদে গিয়ে কিংবা রুমে নিজের মতো করে করুন শরীরচর্চা। শৈল্পিক মনমানসিকতা যাদের আছে, তারা রং, তুলি নিয়ে বসে যেতে পারেন ছবি আঁকতে। ফোনে গেইম খেলে, টিভি দেখে কিংবা গান শুনেও কাটতে পারে আপনার চমৎকার কিছু সময়। ইউটিউবের ভিডিও দেখে দেখে শিখতে পারেন নতুন কিছু। এসব করার মধ্য দিয়ে একসময় টেরই পাবেন না, কেমনে চলে যাচ্ছে আপনার সময়! হোম কোয়ারান্টাইনের বোরিং সময় তখন হয়ে উঠবে আপনার জন্য চরম উপভোগ্য।
লেখক: শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
আলহামদুলিল্লাহ! এভাবেই সময় যাচ্ছে।
ধন্যবাদ, গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশনগুলো শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই।
মুভি দেখা বাদে বাকি সবগুলো করতেসি। ভুলে ল্যাপটপের চার্জার ফেলে আসছি ভার্সিটির হলে। কি এক কপাল আমার।
বিভিন্ন দেশের উপর রিসার্চ করা যায়। বারান্দায় বা ছাদে গাছ লাগিয়ে যত্ন করতে করতেও কিন্তু সময়টা আনন্দের সাথে কাটানো যায়।