মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার আদ্যোপান্ত (৩য় পর্ব)

গত পর্বে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আমরা বলেছিলাম জীববিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে। এছাড়াও আমাদের ভর্তি পরীক্ষায় আরো তিনটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আজ আমরা পর্যায়ক্রমে কথা বলবো পদার্থবিজ্ঞান,রসায়ন ও ইংরেজি নিয়ে।

medical admission test
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পদার্থবিজ্ঞান বই

 

পদার্থবিজ্ঞানের সহজ টোটকা:

পদার্থবিজ্ঞান হয়তো বিজ্ঞান বিভাগের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর কাছে খুবই কঠিন ও দুর্বোধ্য প্রতীয়মান হয়। কিন্তু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় পদার্থবিজ্ঞানের অংশটি আসলেই সহজ। পদার্থবিজ্ঞানের জন্য আমাদের মোট বরাদ্দ নম্বর হচ্ছে ২০। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে পদার্থবিজ্ঞান প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের জন্য প্রফেসর মোহাম্মদ ইসহাক স্যারের বইগুলো অনুসরণ করাই ভালো।এছাড়া, বাড়তি অনুশীলনের জন্য ড. শাহজাহান তপন স্যারের বইগুলিও দেখা যেতে পারে। মেডিকেল পরীক্ষায় যেহেতু ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার অনুমতি নেই,তাই এ পরীক্ষায় পদার্থবিজ্ঞানের গাণিতিক সমস্যাগুলো থেকে প্রশ্ন করা হয়না। একদমই সহজ কিছু সূত্র এবং হাতে করার মতো মৌলিক গাণিতিক সমস্যা আসতে পারে। তবে, পদার্থবিজ্ঞানের তাত্ত্বিক বিষয়গুলি খুব ভালো করে দেখা উচিত। এছাড়া চিকিৎসাবিজ্ঞান সংক্রান্ত যে কোনো প্রসঙ্গ খুবই গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।

উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের রসায়ন বই

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রসায়ন:   

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার মোট নম্বরের এক-চতুর্থাংশ অর্থাৎ ২৫ নম্বর থাকে রসায়ন অংশের প্রশ্নে। রসায়নের ক্ষেত্রে চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বিষয়গুলো খুবই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। রসায়নের জন্য সরোজ কান্তি সিংহ হাজারি ও হারাধন নাগ স্যারের প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের বই দুটি অনুসরণ করা যেতে পারে। এছাড়া, বাড়তি অনুশীলনের জন্য সঞ্জিত কুমার গুহ স্যারের বই দেখা যেতে পারে। রসায়নের ক্ষেত্রে খুব বেশি গাণিতিক সমস্যা আসে না বললেই চলে। তাই খটোমটো বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার পেছনে সময় নষ্ট না করাই ভালো। রসায়নের মৌলিক ধারণা পরিষ্কার রাখতে হবে এবং তাত্ত্বিক বিষয়গুলি সবিস্তারে খুবই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

সাইলেন্ট কিলার ইংরেজি:  

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজিতে যে ১৫ নম্বর থাকে,বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা চান্স পাওয়া এবং না পাওয়ার পার্থক্য গড়ে দেয়। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ইংরেজিকে তুলনামূলক কম গুরুত্ব দিয়ে নিজের মেডিক্যালে পড়ার স্বপ্নকে হুমকির মধ্যে ফেলে। অথচ একটু পরিশ্রম করলে খুব সহজেই ইংরেজিতে ১১-১২ অনায়াসে পাওয়া সম্ভব। পূর্ববর্তী বছরগুলোর প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়;বিগত বছরের বিসিএস প্রিলিমিনারি এবং বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ইংরেজি প্রশ্ন হুবহু একইভাবে মেডিকেলে দেওয়া হয়েছে। তাই পূর্ববর্তী বছরের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া,ইংরেজিতে ভালো করতে Proverbs,Prepositions,Parts of Speech ইত্যাদি মৌলিক বিষয়গুলি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে।

আশা করি উপরোক্ত বিষয়গুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিলে পরীক্ষার্থীরা সফল হবে। পরিশেষে একটি ছোট্ট বিষয়ের উপর আলোকপাত করবো। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা সাধারণত বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর দিকে বেশি গুরুত্ব দেয় এবং ইংরেজি,বাংলা প্রভৃতি বিষয়কে অবহেলাই করে। কিন্তু মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পূর্বশর্ত যেহেতু ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া, তাই আমাদের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের একদম শুরু থেকে প্রতিটি বিষয়কে সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়ার কোনো বিকল্প নেই। আর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাতেও ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞান বিষয় দুটিকে সমান গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে।

লেখক: শিক্ষার্থী,পাবনা মেডিকেল কলেজ।

Similar Posts