mohammadrifat / মে 11, 2020
আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় আমাদেরকে অনেক কিছু শিখানো হলেও আসলেই বাস্তব জীবনে কাজে লাগে এমন অনেক কিছুই শিখানো হয় না। আমাদেরকে শিখানো হয় না কিভাবে নিজের আবেগ প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণ করে যৌক্তিক চিন্তা করতে হয়। যার কারণে জীবনের অনেক সময়ই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি না আমরা। আর এই আবেগপ্রবণতা থেকে বের হয়ে এসে যুক্তির মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার যোগ্যতাই হচ্ছে অ্যানালিটিক্যাল স্কিল।
যেকোনো সৃজনশীল কাজের জন্য কল্পনা শক্তিকে সবচেয়ে জরুরী বলে ধরা হয়। একমাত্র কল্পনা শক্তির কারণেই আজকের বিজ্ঞান এতো এগিয়ে যেতে পেরেছে। শুধুমাত্র বিজ্ঞান কিংবা সৃজনশীল কাজ না আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা সমাধানের জন্য কল্পনা শক্তি কাজে দিতে পারে। কোনো একটা সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে আমরা যত ভালো ভাবে কল্পনা শক্তিকে কাজে লাগাতে পারবো ততো তাড়াতাড়ি আমরা অনেক ধরণের সম্ভাব্য সমাধান বের করতে পারবো। আবার অনেক গুলো সম্ভাব্য সমাধানের মধ্যে কোনটা আসলেই কাজে দিবে ঐটা বুঝার জন্যও আমাদেরকে কল্পনাকে কাজে লাগিয়ে সমাধান গুলোকে বিশ্লেষণের দরকার পরে।এইটা অনেকটা সিমুলেশন করে দেখার মতো। তাই সমস্যা সমাধানে কল্পনা শক্তিকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে ধরা হয়।
এটি বলতে কোনো একজন একটি বিষয়কে যুক্তিগত দিক থেকে কতটুকু বিশ্লেষন করতে পারে সে ক্ষমতাকে বুঝানো হয়। এই ক্ষমতা যার যতবেশি থাকে সে ততো তাড়াতাড়ি আর কার্যকর ভাবে অনেক ধরণের তথ্যকে একসাথে মাথায় রেখে সেগুলো বিশ্লেষণ করে সঠিক সিদ্ধান্তের দিকে যেতে পারে। কিন্তু যাদের এই যুক্তিগত চিন্তার ক্ষমতা কম থাকে তারা বেশিরভাগ সময়ই সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আবেগ প্রবণতায় পরে যায়। যার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারে না।
যুক্তিগত চিন্তার সাথে সমসময়ই অনেক ধরণের তথ্য-উপাত্ত জড়িত থাকে। যার কারণে এইসবকে বিশ্লেষণ করার জন্য দরকার পরে সংখ্যা নিয়ে কাজ করার। অনেক গুলো সম্ভাব্য সমাধানের মধ্যে কোনটিতে কিরকম ক্ষতি আর লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা বুঝার জন্য সংখ্যার মাধ্যমে চিন্তা করতে পারাটা খুবই জরুরি।
গবেষণা বলতে বিজ্ঞানাগারের জটিল সব গবেষণার কথা বলা হচ্ছে না। বরং আমাদের সমস্যাকে বিশ্লেষণ করার জন্য যত তথ্যের দরকার পরে তা খুঁজে বের করতে পারার ক্ষমতাকে বলা হচ্ছে।
একটি জিনিষকে যত ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র ভাগে ভাগ করে দেখা যায় ততো বেশি ঐ জিনিষটা সম্পর্কে জানা যায়। আমাদের কোনো সমস্যা সমাধানের জন্যও ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র বিষয়কে মাথায় রেখে বিশ্লেষণ করাটা জরুরি। একমাত্র তখনি সঠিক ও কার্যকর সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব।
আশা করি অ্যানালিটিক্যাল স্কিল সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।এখন তাহলে চলুন কিভাবে আমরা আমাদের এই স্কিল গুলোকে আরো বাড়াতে পারি তা দেখা যাক।
কোনো কিছুতে ভালো করার আগে সে জিনিসটাকে ভালো ভাবে বুঝতে পারাটা জরুরি। অ্যানালিটিক্যাল স্কিল আসলে বিভিন্ন পরিস্থিতির জন্য বিভিন্ন রকম। অ্যানালিটিক্যাল স্কিল বলতে যে শুধুমাত্র একটি স্কিলকে বুঝায় না তা আমরা আগেই আলোচনা করে এসেছি তবে সাধারণ ভাবে বলতে গেলে এটি কোনো একটি পরিস্থিতিকে ভালো ভাবে বিশ্লেষণ করে ,সব সম্ভাব্য সমাধানের কথা চিন্তায় রেখে তার মধ্যে থেকে যুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে সঠিক আর কার্যকর সমাধান বের করে আনার ক্ষমতা।এখন আমরা যদি আমাদের এই ক্ষমতাকে আরো বেশি কার্যকর করে তুলতে চাই তবে যে কোনো সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে আমাদেরকে সচেতন ভাবে এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াকে মাথায় রাখতে হবে। শুধুমাত্র আবেগ কিংবা আপাত দৃষ্টিতে যা দেখা যায় তার উপর ভিত্তি করে ফলাফল এ যাওয়া যাবে না বরং সম্ভাব্য সকল দিককে বিবেচনায় আনতে ও বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে।
আমরা সবাই ভালো কাজ করার ক্ষমতা রাখি। শুধু মাত্র তা নির্ভর করে আমরা কে কতটা চেষ্টা করছি তার উপরে। তাই আমাদের সকলেরই উচিত নিয়মিত নিজেকে কিভাবে আরো ভালো দিকে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে ভাবা। জীবনে নেয়া ছোট ছোট সিদ্ধান্ত গুলোই এক সময় বড় প্রভাব ফেলে। তাই সিদ্ধান্ত গুলোকে সঠিক ভাবে চিন্তা করে নেয়াটা জরুরি। এর জন্য সবারই উচিত অ্যানালিটিক্যাল স্কিল বাড়ানোর জন্য কাজ করা আর শুধুমাত্র আবেগ দিয়ে চিন্তা না করে যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে চেষ্টা করা।
FILED UNDER :অন্যান্য , লাইফস্টাইল
Comments are closed.
One Comment
Mehedi Hasan Khan says
ছোটবেলায় একটা শিশু প্রচুর প্রশ্ন করে। এটা কি, ওটা কি, সারাক্ষণ জিজ্ঞাসা করতেই থাকে, যেগুলোর বেশিরভাগের উত্তরই বাবা মায়ের জানা থাকেনা। যার জন্য উনারা বিরক্ত হয়ে শিশুটিকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেন। এভাবেই আমরা ছোট থেকেই প্রশ্ন করার ক্ষমতাটা ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেই। নিজের অজ্ঞতাবশত আমরা এই ক্ষতিটি করে যাচ্ছি দিনের পর দিন।