বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ভর্তি জিজ্ঞাসা (১ম পর্ব)
ছোটবেলা থেকেই অনেকের স্বপ্ন থাকে ডাক্তার হওয়ার। জীবনের লক্ষ্য রচনা পড়তে গিয়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই একজন ডাক্তার হিসেবে নিজেকে মানবসেবায় উৎসর্গ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। কালক্রমে রচনায় লেখা সেই স্বপ্নকেই লালন করে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয় শিক্ষার্থীরা । নিয়মের আবর্তনে সবাই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ভাগ্যবান শিক্ষার্থীদের ক্ষুদ্র একটি অংশ সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে। বাকিরা হয় বঞ্চিত। কেউ কেউ হয়তো দশমিক ভগ্নাংশের নাম্বারের জন্যে ভর্তির সুযোগ হারায়। দূর্ভাগ্যক্রমে কারো হয়তো এস.এস.সি. ও এইচ.এস.সি. এর মিলিত পয়েন্ট (মোট ২০০ নাম্বার) কম থাকে। দূর্ঘটনায় পড়ে কারো ভর্তি পরীক্ষা খারাপ হয়ে যায়। এসব শিক্ষার্থীরা নিজেদের স্বপ্ন পূরণে বেছে নেয় বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকে।
বাংলা ভাইবে ইতোপূর্বে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার আদ্যোপান্ত নিয়ে পাঁচ পর্বের একটি সম্পূর্ণ গাইডলাইন প্রকাশিত হয়েছে যেটি মূলত সরকারী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির উপর ফোকাস করে লেখা। আমি এবার আলোচনা করব বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি নিয়ে।
এ ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে প্রশ্নটি আসে সেটি হল – বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা কী?
এটি খুব সাধারণ একটি প্রশ্ন। মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় পাশ নাম্বার (বর্তমানে ১০০ নাম্বারে ৪০) পাওয়া যেকোনো শিক্ষার্থীই বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির আবেদন করার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। এখানে নতুন করে কোনো পরীক্ষায় বসতে হয় না। সরকারি পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই ভর্তি নেওয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, যে প্রশ্নটি শিক্ষার্থীদের দ্বিধায় ফেলে সেটি হচ্ছে – বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তি হওয়া উচিত হবে কি না?
এই প্রশ্নের উত্তর একটু বিস্তারিত দেওয়া প্রয়োজন। সাধারণত একজন শিক্ষার্থী যখন মনেপ্রাণে চেষ্টা করেও সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পায় না তখন সে মারাত্মকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। কী করবে কিছু বুঝতে পারে না। সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধায় ভোগে। এই সময়ে প্রয়োজন সঠিক দিকনির্দেশনা।
বাংলাদেশে মেডিকেলে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ এখনো রয়েছে। কাজেই কোনো শিক্ষার্থীর যদি নিজের উপর আত্মবিশ্বাস থাকে যে, দ্বিতীয় বারের ৫ নাম্বার কাটা গেলেও প্রয়োজনীয় নাম্বার তোলা সম্ভব হবে তাহলে অবশ্যই সে দ্বিতীয় বার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্যে প্রস্তুতি নিতে পারে। অনেকে কোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েও প্রস্তুতি নেয়। যাদের এস.এস.সি. ও এইচ.এস.সি. এর মিলিত পয়েন্ট কম তাদের জন্য বিষয়টা জটিল। পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি এবং মেডিকেলের প্রতি অত্যধিক আগ্রহ থাকলেই তবে একজন শিক্ষার্থীর বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ও অভিজ্ঞজনের এই মত যে, অত্যধিক আগ্রহ না থাকলে আর্থিক সঙ্গতি থাকার পরেও কারো বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তি হওয়া উচিত না। প্রয়োজনীয় খরচ সম্পর্কে জেনে এবং নিজের আগ্রহকে যথাযথভাবে যাচাই করার পরই বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
আরেকটি বড় প্রশ্ন – বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার মান কেমন?
এই প্রশ্নের উত্তরে যে কথাটি বুঝতে হবে সেটি হল, কলেজ থেকে কলেজে পড়াশোনার মানের তারতম্য ঘটে থাকে। এটি সরকরি-বেসরকারি সব কলেজের ক্ষেত্রেই সত্য। তবে হ্যাঁ, আমাদের দেশে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা সরকারি কলেজের প্রায় দ্বিগুণ। এক্ষেত্রে গুণগত মানের পার্থক্য অবশ্যই থাকে। এটি নির্ভর করে নির্দিষ্ট কলেজের কিছু আনুষঙ্গিক বিষয়ের উপর। কিন্তু বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে দেশ-বিদেশের অসংখ্য শিক্ষা উপকরণ আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে যার দ্বারা আমরা নিজেদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে পারি। এ ব্যাপারে সামনের ‘কলেজ বাছাইয়ে পরামর্শ ’ অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
প্রথম পর্বে আপাতত এই তিনটি কমন প্রশ্নের আলোচনাতেই সমাপ্তি টানা হচ্ছে।।আগামী পর্বে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার যাবতীয় খরচ ও ভর্তি প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
লেখক : শিক্ষার্থী, জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ, সিলেট।
ভাই প্লিজ আগে একটু সাজেস্ট করেন কিভাবে সরকারী মেডিকেলে চাঞ্জ পাওয়া যায়। প্রাইভেটে চাঞ্জ পাওয়া নিয়ে লেখাটা আমার দৃষ্টিতে অযৌক্তি!
সরকারী মেডিকেলের ভর্তি সংক্রান্ত তথ্যাবলী নিয়ে ইতিপূর্বে বাংলা ভাইবে ৫ পর্বের লেখা প্রকাশিত হয়েছে এবং এই লেখাতে তার উল্লেখ আছে। আপনি সম্ভবত বর্তমান লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়েন নি, তাই বিষয়টি আপনার নজর এড়িয়ে গেছে।