জেনে নিন সাইবার বুলিং এর শিকার হলে কী করবেন?
সোশ্যাল মিডিয়ার রাজত্বের এই যুগে প্রতিনিয়ত অহরহ মানুষ সাইবার বুলিং এর শিকার হয়। অনেকে অনেক কারন সহ, আবার অনেকে অনেক কারণ ছাড়াই এই সাইবার বুলিং এর শিকার হয়ে থাকে। কয়েক বছরের প্রতিবেদন ঘাটলে দেখা যায় পুরুষদের তুলনায় নারীদের সাইবার বুলিং বেশি করা হয়। এই সাইবার বুলিং এর পরিণাম ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্কর হতে পারে। এই সাইবার বুলিং যে করে থাকে অর্থাৎ উত্ত্যক্তকারী, তার ঠিক পরিচয় পাওয়া যায় না। কেননা সে ফেক আইডি দিয়ে উত্ত্যক্ত করে থাকে। এই সাইবার বুলিং জঘন্য থেকে জঘন্য প্রকারের হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি যেটা হয়ে থাকে সেটা হচ্ছে মেয়েদের ছবি নিয়ে বাজে কাজ করা।
বুঝতেই পারছেন একটা মেয়ের কাছে তার সম্মান অনেক বেশি। কিন্তু এই উত্ত্যক্তকারী বা বাজে মনোভাবের মানুষ সেই মেয়ের সম্মান নষ্ট করার জন্য উঠে পড়ে লেগে থাকে।
ফটোশপ বা এডিট এর জামানা আজ এত উন্নত হয়ে গেছে যে, কোন ছবির সাথে কোন ছবি মিলিয়ে কি একটা জঘন্য ছবি বানিয়ে ফেলা যায় তা কল্পনার বাইরে। এমনকি এডিটিং গুলো এতটা নিখুঁত যে বোঝার কোন উপায় নেই ছবিটা আদৌ আসল কিনা নকল। সাধারণত উত্ত্যক্তকারী এসব ছবি বানিয়ে একটা মেয়েকে ক্রমাগত ধমক দিতে থাকে, তাকে ব্লাকমেইল করে তার কাছ থেকে ও তার পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে থাকে। টাকা না দিলে সে ছবি ভাইরাল করে দেয়ারও ধমক অনেকে পেয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে মেয়েটার কোন দোষ নেই।
শুধু মেয়েদেরই না অনেক ছেলেদেরকেও সাইবার বুলিং এর শিকার হতে হয় নানা কারণে। শুধুমাত্র সাইবার বুলিং এর শিকার হয়েও অনেক মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
বর্তমানে সাইবার পুলিশ সেন্টার এসব নিয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ সাইবার পুলিশ ও এর থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। শুধুমাত্র সাইবার বুলিং এর শিকারের জন্য আলাদা একটি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি একটি নোটিশের মাধ্যমে তারা বিস্তারিত বলে দিয়েছেন যে সাইবার বুলিং এর শিকার হলে কিভাবে কি করতে হবে। তাদের নোটিশটিকেই সংক্ষিপ্ত আকারে এখানে বুঝিয়ে লিখা হলো। আশা করি আপনাদের অনেক কাজে আসবে।
সাইবার বুলিং এর শিকার হওয়া ব্যাক্তিকে যা যা করতে হবে-
উত্ত্যক্তকারী’ যে জিনিসটা নিয়ে আপনাকে ক্রমান্বয়ে ব্ল্যাকমেইল করে যাচ্ছে, অর্থাৎ বাজে ছবি কিংবা বাজে মেসেজ বা যেকোনো কিছুই হোক না কেন সেই পোস্টটির কিংবা সেই ছবিটি কিংবা সেই মেসেজটির স্ক্রীনশট সবকিছু যা যা ব্লেইকমেইলিং এর সাথে যুক্ত, ও উত্ত্যক্তকারীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টের লিঙ্ক সংগ্রহ করে যত দ্রুত সম্ভব আশেপাশের থানায় অর্থাৎ নিকটস্থ কোন থানায় অভিযোগ করতে হবে। থানা আপনার অভিযোগ গ্রহণ করলেই মনে করবেন অর্ধেক কাজ হয়ে গেছে।
এ ছাড়া আপনি যে কাজটি করতে পারেন-
বাংলাদেশের সিআইডি অফিসারের সাইবার পুলিশ সেন্টারে গিয়ে আপনি সশরীরে হাজির হয়ে একদম নিজে অভিযোগ জানাতে পারেন। যদি কোনো কারণে নিজে অভিযোগ জানানো সম্ভব না হয় তখন নিম্নবর্ণিত মিডিয়া গুলোর মাধ্যমে অভিযোগ জানানো আপনার পক্ষে সহজ হতে পারে।
হট লাইনঃ ০১৭৩০৩৩৬৪৩১
ইমেইলঃ [email protected]
ফেসবুক পেজঃ https://www.facebook.com/cpccidbdpolice/
দুটো কাজের যেকোনো একটি করলেই ধরে নেবেন আপনার অর্ধেক কাজ সম্পন্ন। কারণ যে আপনাকে উত্ত্যক্ত করছে বা বিরক্ত করছে তার দায়ভার এখন সম্পূর্ণ থানার পুলিশের হাতে। আপনার এখন যে কাজটি করতে হবে, আপনার অভিযোগ দায়ের করার পর উত্ত্যক্তকারীকে ব্লক মেরে দিতে পারেন কিংবা অ্যাকাউন্ট রিপোর্ট দিয়ে দিতে পারেন।
অতঃপর নিশ্চিন্ত।
আশা করি বাংলাদেশে এই সাইবার ক্রাইম পুলিশ অনেক শক্তিশালী হয়ে এগিয়ে যাবে এবং এই সাইবার ক্রাইমের ভুক্তভোগীরা নিস্তার পাবে। সবাই মিলে যে এক হয়ে দাঁড়ালে সাইবারক্রাইমের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে তার কোনো সন্দেহ নেই। আজ এ পর্যন্তই, ধন্যবাদ।
হেল্পফুল এবং সময়পোযোগী পোস্ট। ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের আরোও সাবধান হতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশেষ করে ফেসবুকে নিজের প্রয়োজনীয় তথ্য (হতে পারে ব্যক্তিগত ছবি অথবা নিজের লোকেশন বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য) শেয়ারে আরো সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, সেক্ষেত্রে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করতে হবে। কথায় আছে ‘Prevention is better than cure’. আর অবশ্যই অসুস্থ মানসিকতার লোকের তো অভাব নাই, সেক্ষেত্রে সাইবার বুলিং এর সম্মুখীন হলে চুপ করে না থেকে সাইবার ক্রাইম পুলিশের সহযোগিতা নিন।