চলুন জেনে নেই মজাদার ‘ডিমের কোর্মা’র রেসিপি
বাড়িতে থাকি কিংবা হোস্টেলে, ডিম হলো সব সময়ের সহজ খাদ্য। কিছু না থাকলেও ঘরে ডিম থাকলেই খাওয়াদাওয়ার পর্ব শেষ করা যায় খুব সহজেই। দাওয়াতেও কিন্তু অনেক আইটেমের মাঝে ডিমের আইটেম অন্যতম একটি।
ডিম দিয়েই তৈরি করা যায় নানা পদ। খুব সহজে অল্প সময়ে আপ্যায়নের জন্য ডিমের চেয়ে ভালো কি হতে পারে! চলুন আজ ডিমের আর একটি সহজ ও মজাদার রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক।
আমাদের অনেকেই আছি প্রতিদিনের রেগুলার তরকারির মাঝে একটু নতুনত্ব খুঁজি কিন্তু কষ্ট করতে চাই না। আবার মেহমানদের জন্য আইটেমের সংখ্যা বাড়াতে গিয়ে স্বল্প খরচে অল্প সময়ের রেসিপি খুঁজতে থাকি। তাদের সহ সবার জন্য আজকের রেসিপি হলো ‘ডিমের কোর্মা’
সাদা ভাত, পোলাও কিংবা রুটি, নান, পরোটা সব কিছুর সাথেই খেতে খুব মজা লাগে এই ডিমের কোর্মা। দেখতে যেমন সুদর্শন খেতেও তেমন মজাদার।
আসুন দেখে নেওয়া যাক ডিমের কোর্মা তৈরি করতে আপনার কি কি উপকরণ লাগবে।
- ডিম
- লবন
- গুঁড়া মরিচ ও কাশ্মেরি মরিচ (কাশ্মেরি মরিচ না থাকলে কোন সমস্যা নেই কারন এটি শুধুমাত্র খাবারের রঙ আরও সুন্দর ও লোভনীয় করতে সাহায্য করে)
- ঘি
- পেয়াজ
- কাজু বাদাম
- এলাচ
- দাড়চিনি
- তেজ পাতা
- গোল মরিচ
- গরম মশলা
- ধনে ও জিরা গুঁড়া
- আদা-রসুন বাটা
- কাজু বাদাম বাটা
- দুধ কিংবা টক দই
- কাচা মরিচ
- চিনি
- রান্নার তেল (রান্নার জন্য আমরা বেশির ভাগ সময় সয়াবিল তেল ব্যবহার করে থাকি, অনেকেই সরিষার তেল ও ব্যবহার করেন আলাদা একটি টেস্ট নিয়ে আসার জন্য তবে স্বাস্থ্য দিকটা লক্ষ্য রেখে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল ব্যবহার করতে পারেন এতে আপনার পরিবারের খাদ্য হবে আরও পুষ্টিকর
প্রতেকটি উপকরণ আমি নিখুঁত ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যাতে আপনাদের আয়োজন করতে সুবিধা হয়।
রান্না প্রণালী
আমরা যারা রান্না জানি তারা সব কিছু পরিমাণ কিছুটা হয়লেও নিজেরা বুঝতে পারি। আমি চার জনের পরিমানে রান্নার উপকরন গুলো উল্লেখ করছি। আপনি আপনার প্রয়োজন মতো কম বেশি করতে পারবেন।
- প্রথমেই ডিম গুলো সিদ্ধ করে নিন। অবশ্যই ভালো করে সিদ্ধ হয়তে হবে । অর্ধ সিদ্ধ হওয়ার ফলে কিন্তু পরবর্তিতে ডিম গুলো ফেটে কিংবা ছড়িয়ে যেতে পারে।
- সিদ্ধ করা ডিম গুলো হাল্কা হাতে ছিঁড়ে নিন। অবশ্যই খুব বেশি ফাঁকা করবেন না। ডিমের একটি ছোট খসার টুকরো দিয়েই ডিমের চারপাশে হালকা করে দাগ টানতে পারেন।
বিঃদ্র এতে করে ডিম গুলোর মাঝে মশলা ঢুকবে তার সাথে সাথে আপনি যখন তেলের মাঝে ডিম দিবেন তখন তেল ছিটে আশার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
- ডিম গুলোতে পরিমাণ মতো লবন এবং মরিচের গুঁড়া ভালো করে মাখিয়ে রেখে দিন।
- একটি প্যান কিংবা কড়াই চুলায় বসিয়ে এতে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে নিন। অবশ্যই একটু বেশি পরিমানে দিবেন কারন এই তেলের মাঝেই সম্পূর্ণ খাবার রান্না হবে। সাথে এক চামচ পরিমাণ ঘি।
কোর্মার রান্নায় ঘি কিন্তু অবশ্যক একটি উপাদান। কারন এই ঘি এর কারণে আপনার রান্নায় আলাদা একটা ঘ্রাণ পাওয়া যাবে।
- গরম তেলের মাঝে পেয়াজ কুচি দিন। এবং চুলের মিডিয়ম থেকে লো ধাঁচে পেয়াজ গুলো হালকা বাদামি হওয়া পর্যন্ত নেড়েচেড়ে নিন। অনেকেই এটিকে পেয়াজের বেরেস্তা বলে থাকে। পেয়াজ কিছুটা বাদামি রঙ ধারণ করলে নামিয়ে রাখুন।
- প্যান/ কড়ায়ের ঐ তেলের মাঝেই ডিম গুলো দিয়ে ফেলুন। হালকা লাল কিংবা বাদামি রঙ করে নিন। তবে আপনারা ইচ্ছা করে ডিম না ভাঁজতে পারেন। আমরা কাছে ডিম ভাজলে স্বাদের মাত্রা একটু বাড়তি মনে হয়।
- ডিম নামিয়ে ঐ তেলের মাঝেই মশলা কষানোর সময় এসে গেছে –
-
-
- তেজ পাতা মাঝারি সাইজের ২টি
- এলাচ ২টি
- দাঁড় চিনি ২টি
- গোল মরিচ ২/৩টি
- এবং কুচি করে রাখা পেঁয়াজ
-
- মশলা গুলো গরম তেলের মাঝে ভালো করে কষিয়ে নিন ২/৩ মিনিটের মতো।
- যখন দেখবেন মশলার রঙ কিছুটা পরিবর্তন হয়ে আসছে তখন এরমাঝে আদা-রসুন বাটা দিয়ে নিন।
- মসলা কষিয়ে নিন বেশি কিছু সময় নিয়ে। এর পর পর জিরা ও ধনে গুঁড়া দিতে পারেন। যারা গুঁড়া পছন্দ করেন না। তারা এড়িয়ে যেতে পারেন এই পর্বটি।
- এই পর্যায়ে কাজু বাদাম বাটা মিক্স করে দিন মশলার সাথে।
- ভেঁজে রাখা ডিম গুলো মিশ্রণের মাঝে দিয়ে কিছুক্ষন নড়াচড়া করান। এবং ২/৩ মিনিট রান্না হওয়ার জন্য ঢেকে রেখে দিন।
আমাদের রান্না প্রায় শেষের দিকে।
- ডিমের ও মশলার কষানি যখন হয়ে আসবে এতে এক কাপ পরিমাণ দুধ ঢেলে দিবেন। সাথে সামান্য পরিমাণ চিনি । যারা চিনি খেতে চান না তাড়া এটি এড়িয়ে যেতে পারেন।
দুধের পরিবর্তে টক দই ব্লেন্ড করে ব্যবহার করা যায় তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই টক দই অবশ্যই ফ্রিজ থেকে সরাসরি এনে ব্যবহার করবেন না এতে করে দই ফেটে যেতে পারে, নষ্ট হয়তে পারে আপনার শখের রান্না। তাই দই ফ্রিজের বাহিরে দেখে দিন কয়েকঘন্টা এরপর ব্যবহার করুন।
- সর্বশেষ কয়েকটি কাঁচা মরিচ অল্প করে চিড়ে উপরে দিয়ে দিন এতে তরকারির আলাদা একটি টেস্ট নিয়ে আসে।
- চুলার হালকা আঁচে রান্না হয়ে আসলে উপরে ভেঁজে রাখা পেঁয়াজ সুন্দর করে ছড়িয়ে দিন। এবং কিছুক্ষণ রেখে গরম গরম পরিবেশন করুন।
সতর্কতাঃ ডিমের কোর্মা রান্নায় কখনো হলুদ দেওয়া যাবে না। কোর্মায় দুধ দেওয়ার ফলে কোর্মার স্বাদ কিছুটা মিষ্টি মিষ্টি হয় যেখানে হলুদের ব্যবহার এই মজার টেস্ট একদম নষ্ট করে দিবে।
ভাত, পোলাও কিন্তু খিচুড়ি , রুটি বা নান সব সহজেই সব কিছুর সাথে পরিবেশন করতে পারবেন ডিমের কোর্মা।
একদিন সময় করে তৈরি করে ফেলুন মজাদার ডিমের কোর্মা । কেমন হলো অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানাতে ভুলে যাবেন না।