মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার আদ্যোপান্ত (৪র্থ পর্ব)
পূর্ববর্তী পর্বগুলোতে আমরা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন দিক এবং এ সম্পর্কিত নানান তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ আমরা কথা বলবো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কিছু বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের সম্বন্ধে এবং চেষ্টা করবো পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচলিত কিছু বিভ্রান্তি দূর করতে।
১/ নতুন সংস্করণের পাঠ্যপুস্তক কি আবার কিনতে হবে?
→ এটার উত্তর হলো,অবশ্যই অবশ্যই হ্যাঁ। কারণ প্রতি বছরের পাঠ্যপুস্তকেই কিছু তথ্যের পরিবর্তন আনা হয় এবং সম্পূর্ণ নতুন কিছু বিষয় সংযোজন করা হয়। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন সবসময়েই চলতি সংস্করণের (কারেন্ট এডিশন) বই থেকে করা হয়। তাই নতুন সংস্করণের বইয়ের কোনো বিকল্প নেই।
২/ পরীক্ষায় কি ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে?
→ না,মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহারের অনুমতি নেই। এমনকি পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য যে কোনো প্রকারের ঘড়ি অথবা বৈদ্যুতিক যন্ত্র নেওয়া নিষিদ্ধ। পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা পর্যবেক্ষকগণ পর্যন্ত মুঠোফোন ব্যবহার করতে পারেন না। এজন্যই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে হয় এমন কোন গাণিতিক সমস্যা দেওয়া হয় না।
৩/ সর্বনিম্ন কতো পেলে চান্স পাওয়া যাবে?
→ এই প্রশ্নের আসলে নির্দিষ্ট কোনো উত্তর দেওয়া কঠিন। কারণ প্রশ্নের মানের উপর নির্ভর করে একেক বছর একেকটা “কাট মার্কস” হয়ে থাকে। যেমন ২০১৮ সালের সর্বনিম্ন ৫৭ পেয়ে সরকারি মেডিকেলে চান্স হয়েছিল আবার ২০১৯ সালে সেটা ছিল ৬৬.৫। তাই মোটামুটি ৬৮-৭০ নম্বর পেলে সুযোগ পাবে বলে নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে।
৪/ সর্বনিম্ন কতো পেলে ঢাকার মধ্যে চান্স পাওয়া যাবে?
→ এটার উত্তরও আগের প্রশ্নের মতোই। তবে ঢাকা শহরের ভেতরের চারটি সরকারি মেডিকেল কলেজে ৭৫+ পেলে আশা করা যেতে পারে।
৫/ পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের গাণিতিক সমস্যা কি করবোই না?
→ পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের জটিল গাণিতিক সমস্যাগুলো করার দরকার নেই যেহেতু পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহারের সুযোগ নেই। তবে একেবারেই সহজ হাতে করার মত অঙ্কগুলো চোখ বুলিয়ে যেতে পারো।
৬/ পরীক্ষায় আলোচনা করে লেখার কি কোনো সুযোগ আছে?
→ একেবারেই না। কোন অবস্থাতেই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কোনোরকম অসাধু উপায় অবলম্বন করার সুযোগ নেই। এমনকি কোনো পরীক্ষার্থী এ ধরণের কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
৭/ ভর্তি পরীক্ষায় কোন বিষয়ের প্রশ্নগুলো আগে উত্তর করা উচিত?
→ মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্ন আলাদাভাবে দেওয়া থাকেনা। যেহেতু সব কয়টি বিষয়ের প্রশ্নই একসাথে থাকে তাই আলাদাভাবে বিষয় নির্বাচন করে দাগানোর সুযোগ নেই।
৮/ মুক্তিযোদ্ধা অথবা আদিবাসী কোটাধারীরা কি বাড়তি সুবিধা পায়?
→ মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা অথবা উপজাতি কোটাধারীরা খানিকটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে। প্রতি বছরই দেখা যায় এসব কোটাধারী শিক্ষার্থীরা কিছু আসনে সুযোগ পায়। কোটার জন্য হয়তো দুই-তিন নম্বরের বাড়তি সুযোগ থাকতে পারে, কিন্তু মনে রাখতে হবে সীমিত আসন সংখ্যার তুলনায় কোটাধারী প্রার্থীদের সংখ্যাও ব্যাপক। তাই কোটার জন্য খুব সহজেই সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
লেখক:শিক্ষার্থী, পাবনা মেডিকেল কলেজ।