আত্মউন্নয়ন এর শুরু হোক ৭টি অভ্যাসে
আত্মউন্নয়ন শব্দটার সাথে আমরা এখন প্রায় সবাই পরিচিত। আমাদের অনেক সময় এমন মনে হয় যে আমরা কাজটা আরো ভাল করে করতে পারতাম কিংবা আরো ভাল করে করা উচিত ছিল। নিজের অজান্তে মাথায় ঘুরপাক খেতে পারে যে নিজের ইমপ্রুভমেন্ট দরকার।
তবে এমনটা ভাবা সহজ হলেও তা বাস্তবায়ন করা কিছুটা হলেও কষ্টসাধ্য। এজন্য প্রয়োজন দৃঢ় সংকল্প ও সঠিক পরিকল্পনা।আত্মউন্নয়ন এর মূল ধাপ হচ্ছে- নিজের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং সেগুলো অর্জনের জন্য পরিশ্রম করা। মূলত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণই হলো ব্যক্তির বিকাশ কিংবা ব্যক্তিত্ব তৈরির পেছনে প্রথম শর্ত। কারণ লক্ষ্যমাত্রাই আপনার সফলতার পথকে দৃশ্যমান করে তুলবে এবং আপনার গুণাবলীর পরিধি জানান দিবে।
সফলতার যাত্রাপথ ঠিক করতে এই ৭টি উপায় অনুসরণ করতে পারেন। এগুলো আপনাকে আরো উদ্যমী ও আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে সাহায্য করবে।
১। নিজেকে আরও বেশি উপযুক্ত করে তুলুন
শুরুটা হোক নিজস্ব রুটিন অনুযায়ী এবং স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে। ডিসিপ্লিন সাফল্যের চাবিকাঠি। নিয়মিত এগুলোর চর্চা করলে এক সময় নিজেকে আবিষ্কার করবেন আরও শক্তিশালী এবং আরও যোগ্য হিসাবে।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনার কাছে নতুন নতুন বিষয় উন্মোচিত হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাবে যে, সব কিছু আমাদের পরিকল্পনা মতো হয় না। তাই ডিসিপ্লিন বজায় রেখে ধীরে ধীরে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে, আরও বেশি উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
২। অতীতকে আকড়ে ধরে থাকবেন না
জীবন মসৃণ কোনো পথ নয়। জীবনে উত্থান পতন থাকবেই। তাই অতীত নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। অতীত নিয়ে হা হুতাশ করে কেউই সফল হয় নি। তাই অতীতকে আঁকড়ে ধরে না থেকে, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
অতীতের জায়গায় ভবিষ্যত বসিয়ে দিন, তারপর চিন্তা করুন কিভাবে ভবিষ্যত সুন্দর করা যায়।
৩। আত্মবিশ্বাসী হোন
আত্মবিশ্বাস এবং সাফল্যের মধ্যে অদৃশ্য সংযোগ আছে। আপনি নিজের সম্পর্কে যা ভাবেন সেটিই আপনার আত্মবিশ্বাস। এটি আপনার যোগ্যতা ও সামর্থ্য প্রকাশ করে।
“নিজের প্রতি বিশ্বাস হারাবেন না”
আপনার আত্মবিশ্বাস আপনার সফল্পতার পথ সহজ করে দিবে। আত্মবিশ্বাস আপনাকে নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তুলবে এবং এটির মাধ্যমে সহজেই অন্যকে প্রভাবিত করা যায়।
৪। বেশি বেশি বই পড়ার অভ্যাস করুন
আত্মউন্নয়নের জন্য বই আপনার প্রকৃত বন্ধু। বই পড়লে জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। এছাড়া বই চিন্তা চেতনার প্রসার ঘটায় এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি জাগ্রত করতে সহায়ক।যা আপনার ব্যক্তি-চরিত্রের বিকাশ ঘটানোর সাথে সাথে প্রতিটি বিষয়বস্তুকে নিয়ে আলাদাভাবে বোঝার সুযোগ তৈরি করে দেয়। বিশ্বের বড় বড় সফল উদ্যোক্তা ও সফল ব্যাক্তিদের রুটিনে বই অপরিহার্য। বই-ই হতে পারে আত্মউন্নয়নের সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
৫। শরীরী ভাষা উন্নত করুন
মানুষের সবচেয়ে বেশি পরিচিতি ঘটে তার শরীরী ভাষা বা বডি ল্যাংগুয়েজের মাধ্যমে।
শরিরী ভাষার মাধ্যমেই মানুষ আপনাকে প্রাথমিকভাবে বিচার করে। শরিরী ভাষার থেকে বোঝা যায় আপনি নিজেকে নিয়ে কতটুকু উদ্যমী, নিজের উপর কতটুকু নির্ভরশীল।
আপনার চালচলন, হাবভাব, কথাবার্তায় আনুন উৎকর্ষতা। তাহলে দেখবেন সেলফ-ব্র্যান্ডিং প্রয়োজন হবে না, অন্যরাই আপনার ব্র্যান্ডিং করে দিবে।
৬। নিজের চিন্তাভাবনাকে অগ্রাধিকার দিন।
জীবনটা আপনার। তাই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে। আপনার জীবনকে বৃত্ত হিসেবে কল্পনা করুন। এবার বৃত্তের কেন্দ্রে আপনাকে বসান। এভাবে নিজেকে আপনার চিন্তাভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে আনুন, যেন নিজের গুরুত্বটা নিজের কাছে বুঝতে পারেন।
নিজের ভাল–মন্দ নিজেকে বুঝতে হবে, অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং সিধান্তগুলো নিজের বিচার–বুদ্ধি দিয়ে বিশ্লেষণ করে নিতে হবে। প্রয়োজনে অন্যের পরামর্শ নিবেন কিন্তু সিদ্ধান্ত নিবেন আপনি নিজে।
৭। সময়ের মূল্য দিন
আমাদের জীবন সময়ের ফ্রেমে বাঁধা। সময়ের দিকে নজর না দেয়ায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজই করা হয়ে উঠে না।
“সময় ও স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না”
জীবনের উন্নতি ত্বরান্বিত হয় সময়ের ওপর নির্ভর করেই। সময়কে যথাযথ ব্যবহার করতে ব্যর্থ হলে উন্নতির পরিবর্তে অবনতি ত্বরান্বিত হয়। জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হলো সময়। কথায় আছে – Time is money. তাই লক্ষ্যপূরণে সময় নিয়ে তৎপর হওয়া জরুরী।
আত্মউন্নয়ন একদিনে করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন দৃঢ়চিত্ত ও সংকল্পবদ্ধ হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। থেমে থাকবেন না, এক ধাপ করে হলেও এগিয়ে যান, সফলতা আসবেই।
প্রায় সবগুলো পয়েন্টই নিজের সাথে মিলে গেছে। তবে সময়ের গুরুত্বটা রুটিন ফলো করে কখনোই দিতে পারিনি। দেখা যায় কখনো একটানা অমানুষিক পরিশ্রম করতেসি আবার কখনো টানা কয়েকদিন অহেতুক যাচ্ছে।
ধন্যবাদ ভাই। সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখুন আর নিয়মিত চর্চা করতে থাকুন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিবেন ইনশা আল্লাহ।
Hmm.good.go ahead
আপনার প্রেরণার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আশা করি আমিও আত্নউন্নয়ন করতে সক্ষম হবো। ধন্যবাদ এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল দেওয়ার জন্য।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। চেষ্টা করতে থাকুন, সফল হবেন ইনশা আল্লাহ।