কেউ অপমান করলে কি করবেন?

(লেখা কপি করার কারণে এই লেখক কে বাংলা ভাইব থেকে ব্যান করা হয়েছে। আর এই লেখার মূল সোর্স এই ভিডিও (https://www.youtube.com/watch?v=xmFobfbPfKo)। আমাদের অগোচরে প্লাগারাইজড কন্টেন্ট সাইটে পাবলিশ হয়ে যাওয়াতে আমরা অডিয়েন্সের কাছে আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।)

যখন কেউ আপনাকে অপমান করে তখন তার সেই অপমান করার পিছনে একটাই উদ্দেশ্য থাকে, আপনাকে রাগিয়ে তোলা। এবার সেটা মজার জন্য হোক বা সিরিয়াসলিই হোক, আসল উদ্দেশ্যটা থাকে আপনি যেন তার কথায় রেগে গিয়ে কোনো রকম কিছু একটা রিঅ্যাক্ট করেন। কারণ আপনার রিঅ্যাকশনটাই কার কাছে এন্টারটেইনমেন্ট।

কোনোদিনও এরকম দেখেছেন, একটা মানুষ একটা গাছকে গিয়ে দিনের পর দিন ইনসাল্ট করে চলেছে? না। কেন? কারণ, গাছ কোনো রিঅ্যাকশনই দেয় না। আর যাকে ইনসাল্ট করা হচ্ছে সে যদি কোনো রিঅ্যাকশনই না দেয় তাহলে ব্যাপারটি একদমই জমে না। গাছের কাছে রিঅ্যাকশন দেওয়ার কোনো অপশন নেই, কিন্তু আপনার কাছে রিঅ্যাক্ট করার তিন রকমের অপশন আছে।

What to do if someone insults?

নাম্বার ওয়ান– আপনি রেগে গিয়ে তাকেও এরকমই উল্টাপাল্টা কিছু একটা জবাব দিলেন। এতে আর কিছুই হলো না, যে আপনাকে ইনসাল্ট করছিল, সে আপনার কাছে ঠিক যেটা চাইছিল আপনি ঠিক সেটাই করলেন। অর্থাৎ, আপনার এই রিঅ্যাকশনের মাধ্যমে তাকে আপনাকে ইনসাল্ট করার জন্য আরও মোটিভেট তো করলেনই তার সাথে সাথে নিজেকেও তার সমান লেভেলে নামিয়ে নিয়ে আসলেন। আর এতে আপনার সবথেকে বড় ক্ষতি যেটা হলো আপনি তাকে পারমিশন দিয়ে দিলেন আপনাকে হার্ট করার এবং আপনাকে বাজে ফিল করানোর, যেটাই সে বেসিক্যালি করতে চায়। এই অপশনটাই সব থেকে ইজি এবং টেম্পটিং। তাই সেল্ফ কন্ট্রোল ক্ষমতা থাকার অভাবের কারণে আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই কারো দ্বারা অপমানিত হলে, এই অপশনটাকেই বেছে নিই।

 

নাম্বার টু অপশন হলো- আপনি ঠিক সেই গাছের মত হয়ে গেলেন। অর্থাৎ, তার কথায় লেশ মাত্র কোনো রিঅ্যাকশন দিলেন না। সে আপনাকে ইনসাল্ট করার আগেও ঠিক যেমন ছিলেন, ইনসাল্ট করার পরও ঠিক একই রকম থাকলেন। এমন কি কোনোরকম ফেসিয়াল এক্সপ্রেসনও দিলেন না। মানে আপনি কথাটা শুনেন-ই নি এরকমভাবে রইলেন। এতে কি হবে, আপনার দিক থেকে কোনোরকম উৎসাহ না পাওয়ায়, যে আপনাকে অপমান করার চেষ্টা করেছিল সে একটা সময় পর নিজে থেকেই অটোমেটিক চুপ হয়ে যেতে বাধ্য। কারণ, আপনিই ভাবুন না, একটা গাছকে ইনসাল্ট করে কার কি মজা? কেন সে বেকার বেকার নিজের এনার্জি নষ্ট করবে।

 

এবার এই অপশন অনুযায়ী রেসপন্স করার জন্য আপনাকে আগে নিজের ইনসিকিউরিটি গুলো থেকে উপরে উঠতে হবে। কেন? কারণটা একটা এক্সাম্পল দিয়ে বলি। ধরুন, আপনি আসলে চিকন কিন্তু আপনাকে কেউ বলল, ‘এই মোটা এদিকে শোন!’ তাহলে আপনি কি এই কথাটা শোনার পর রেগে যাবেন? নাকি মনে মনে হেসে উঠবেন।

এবার ভাবুন, আপনি আসলে মোটা আর সেটা নিয়ে আপনি ভীষণ চিন্তিতও এবং এবার আপনাকে কেউ বলল, ‘এই মোটা এদিকে শোন!’ এবার চান্স আছে আপনি রেগে যাবেন। কারণ মনের ভিতরে আপনিও নিজেকে নিজে মোটা বলে আফসোস করেন। আপনি যে মোটা সেটা আপনি নিজেও মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। তাই এটা আপনার একটা ইনসিকিউরিটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার যখনই কেউ আপনার এই ইনসিকিউরিটিতে আঘাত করে তখনই আপনি রেগে যান।

তো যতক্ষণ না আপনি নিজে নিজেকে মন থেকে মোটা হিসেবে একসেপ্ট না করতে পারবেন, ততক্ষণ কেউ আপনাকে মোটা বললে আপনার পক্ষে সেটা মেনে নিয়ে চুপ থাকা সত্যিই খুব কষ্টকর হয়ে ব্যাপার দাঁড়াবে। কিন্তু যদি আপনি মন থেকে একবার এটা মেনে নিতে পারেন যে হ্যাঁ কি হয়েছে মোটা তো! মোটা মানে খারাপ আর চিকন মানে ভালো এটাতো কোনো চিরন্তন সত্য না। এটা যার যার মানসিকতার ব্যাপার। আসলে মোটা খারাপ বা চিকন ভালো বা মোটা ভালো আর চিকন খারাপ এরকম বলে কিছু হয়না। কেউ যদি সেটা মনে করে তাহলে সেটা তার মানসিক সমস্যা। আমার না। এর পরেই আপনার পক্ষে সম্ভব হবে ইনসাল্টের পরও ন্যাচারালি কোনোরকম রিঅ্যাকশন না দিয়ে চুপ থাকা।

 

থার্ড অপশন হলো- সেই ইনসাল্ট’টাকেই হিউমারে কনভার্ট করে রাগার পরিবর্তে বরং হেসে ওঠা। এতে যে আপনাকে অপমান করেছিল সে আপনার থেকে ঠিক যেটা চায় অর্থাৎ, আপনাকে রাগিয়ে তোলা, তার ঠিক বিপরীতটা আপনি তাকে রিটার্ন করছেন। অর্থাৎ, খুশি হয়ে যাওয়া। যেটা আপনার ইনসাল্ট’টারের কাছে সবচেয়ে বেশি ডিমোটিভেটিং। আর এটা আপনার ইনসাল্ট’টারের মুখ সবচেয়ে দ্রুত বন্ধ করার জন্য বেস্ট অপশন।

যেমন ধরুন, আগের উদাহরণটাই নেওয়া যাক- আপনাকে কেউ বলল, ‘এই মোটা এদিকে শোন!’ আপনি তার কাছে গিয়ে রিপ্লাই করলেন- ‘আর ভাই.. মোটার কথা বলিস না, কালকে ছবি তুলতে গেছি, দোকানদার আমায় বলছে, তোমায় তো পাসপোর্ট সাইজ ছবিতে ধরানো যাব বলে মনে হয় না। তাও দেখি আমি চেষ্টা করে দেখছি।’ এটা যেহেতু বেস্ট অপশন, তাই এই অপশন অনুযায়ী রেসপন্স করতে পারার জন্য রিকোয়ারমেন্টসটাও একটু বেশি। এই অপশন অনুযায়ী রেসপন্স করার জন্য আপনাকে নিজের মধ্যে তিনটি কোয়ালিটিস ডেভলপ করতে হবে।

  • নাম্বার ওয়ান- নিজের ইনসিকিউরিটিগুলো থেকে উপরে ওঠা।
  • নাম্বার টু- নিজের উপর নিজে হাসতে শিখা
  • এবং নাম্বার থ্রি- নিজের সেন্স অফ হিউমার’টাকে বাড়িয়ে তোলা।

এর মধ্যে ফার্স্ট কোয়ালিটিটা ডেভলপ করার জন্য যা করতে হবে সেটা আগের অপশানটাতেই বললাম।

এবার সেকেন্ড কোয়ালিটি- অর্থাৎ, নিজের উপর নিজে হাঁসতে শেখার জন্য আপনাকে যেটা করতে হবে, সেটা হলো নিজের সমস্ত ফল ফলস আইডেন্টিফিকেশনগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ফলস আইডেন্টিফিকেশনগুলো মানে কি? ফলস আইডেন্টিফিকেশন মানে হল, আপনার যে আইডেন্টিফিকেশনগুলো আসলে সত্যি না কিন্তু শুধুমাত্র নিজের EGO‘কে স্যাটিসফাই করার জন্য আপনি যেগুলোকে সত্যি বলে মেনে নিয়েছেন। সেগুলো থেকে বেরিয়ে আসা।

আর থার্ড কোয়ালিটি- অর্থাৎ, নিজের সেন্স অফ হিউমার ডেভলপ করার জন্য সবার প্রথমে তো লাইফটাকে ডেড সিরিয়াসলি নেওয়া বন্ধ করে, লাইটলি, As it is নেওয়া শিখতে হবে এবং আশেপাশে যে জিনিসগুলো ঘটছে সেগুলোকে মনোযোগ দিয়ে একটা ফানি প্রস্পেক্টিভ থেকে ইমাজিন করার চেষ্টা করতে হবে। এটা আপনার সেন্স অফ হিউমার ডেভলপ করতে আপনাকে সব থেকে বেশি সাহায্য করতে পারে।

সব সময় মনে রাখবেন, উদ্দীপনা আর সাড়া দেওয়ার মাঝে যে জিনিসটা সব সময় আপনার নিয়ন্ত্রনে থাকে, সেটা হল আপনার সাড়া দেওয়ার ধরনটাকে বেছে নেওয়ার ক্ষমতা।

Similar Posts