জীবনে যে জিনিসগুলো সবসময় গুরুত্ব দেয়া উচিত 

আমরা আমাদের জীবনে দৌড়াতেই থাকি, কিন্তু জানি না কোন জিনিসগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেয়া উচিত । আমাদের জীবনের লড়াইগুলো স্কুল থেকে শুরু করি। বলা হয়,প্রথম হতে হবে স্কুলে সবসময়। ভালো ভার্সিটিতে চান্স পেতে হবে। ভার্সিটি শেষ করার পর ভালো চাকরি করতে হবে। বিয়ে করতে হবে, দায়িত্ব নিতে হবে। সন্তানদের পড়াশোনা করানো,বিয়ে দেয়া এরপর নিজের একা হয়ে যাওয়া। এভাবেই জীবন শেষ হয়ে যায়।
আমি ধারণা করে নিচ্ছি, যারা এই লেখা পড়বে তাদের অধিকাংশের এখন জীবন মাত্র শুরু হচ্ছে বা হয়েছে। এই আর্টিকেলে থাকবে কোন জিনিসগুলোকে আপনার জীবনে প্রায়োরিটি দেয়া উচিত যাতে জীবনের সায়াহ্নে মনে কোনো আফসোস না থাকে।

Life
লাইফটাকে ব্যালেন্সড রাখুন
লাইফটাকে ব্যালেন্সড রাখুন

সবগুলো টপিক আপনার সাথে পুরোপুরি না মিলতেই পারে কারণ মানুষে মানুষে রুচির পার্থক্য হয়। কিন্তু টপিকগুলোকে ভালোভাবে উপলব্ধি করলে হয়তো নতুন করে জীবনের মানে পাবেন।

১.লাইফ মিশন

লাইফ মিশন হলো জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনি কোন জিনিসটাকে দেখতে চান বা নিজের মধ্যে পেতে চান। আপনার লাইফ মিশন যদি “সফল হওয়া” হয় তাহলে আমি বলবো আপনি ভুল পথে হাঁটছেন। কারণ, একজন মানুষ জীবনে যত কাজ করবে সব কাজে সফল হবে না এটাই স্বাভাবিক। সফল না হলে এটি আপনার জন্য পীড়াদায়ক হবে। কিন্তু আপনি যদি লাইফ মিশন হিসেবে “নতুন নতুন কাজ করা”-কে বেছে নেন তাহলে সফলতা আপনাকে আনন্দিত করবে, অন্যদিকে ব্যর্থতাতে আপনি ভেঙে পড়বেন না। নতুন করে কাজ শুরুর অনুপ্রেরণা পাবেন।
তবে,  লাইফ মিশন জিনিসটাকে অন্যভাবেও ভাবতে পারেন। ধরেন ” সুখী হওয়া” আপনার লাইফ মিশন। তাহলে ছোট ছোট কাজে আপনি আপনার সুখ খুঁজে নিবেন।
আপনি আপনার লাইফ মিশন খুঁজে বের করুন।

২. শারীরিক স্বাস্থ্য

এইটা সবার জীবনে কমন প্রায়োরিটি থাকা উচিত। স্বাস্থ্যের উপর আপনার সফলতা,স্বাচ্ছন্দ্য, মনোভাব নির্ভরশীল। স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে সুখী হওয়া যায় না এবং আমাদের প্রোডাক্টিভিটি কমে যায়।
কেন স্বাস্থ্য ভালো রাখা উচিত–

  • সুস্থ থাকলে ভালো ঘুম হবে
  • সুস্থ থাকলে মানুষের সাথে কথা বলার বা যোগাযোগ করার সময় ভালো মুড থাকে
  • অসুস্থতার জন্যে কনফিডেন্স কমে যায়

৩.পরিবারের সাথে সময় কাটান

পরিবার হলো আমাদের আশার আশ্রয়। সুখের সময় যেমন সবার সাথে উপভোগ করা হয় তেমনি দুঃখের দিন তাদের কাঁধেই মাথা রেখে সব বলা যায়। এজন্য পরিবারকে সময় দিন। ঘুরতে বের হোন। কোয়ালিটি টাইম কাটান পরিবারের সদস্যদের সাথে।

৪.ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলুন

কিছু মানুষ থাকা উচিত যাদের কে আপনি পাশে পাবেন। সে হতে পারে আপনার বন্ধু, বড় ভাই,ছোট ভাই বা অন্য কেউ। ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠলে তারা যেমন আপনাকে সাহায্য করবে আপনিও তেমনি তাদেরকে সাহায্য করে মানসিক শান্তি পাবেন।

৫.মানসিক স্বাস্থ্য

মানসিক স্বাস্থ্য শারীরিক স্বাস্থ্য হতে কোনো অংশেই কম নয়। সবসময় চেষ্টা করবেন পজেটিভ থাকার। কিছু প্রক্রিয়ায় আপনি পরীক্ষা করতে পারেন-

  • নোট করুন– আপনার চিন্তা করার ধরন,অনুভবের ধরন,কথা বলার ধরন। এগুলো কি পজেটিভ নাকি নেগেটিভ?
  • রেড জোনে আছেন?– যদি কাজ করতে করতে,দায়িত্ব নিতে নিতে আপনার চিন্তা, অনুভূতি কোনো কাজই না করে তাহলে আপনি রেড জোনে আছেন।
  • শুরু করুন – মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন করার জন্য টাস্ক নেন,অভ্যাস গড়ে তুলুন, পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গি রাখুন।

৬. টাকাপয়সা

টাকা সুখ আনতে পারে না ঠিকই আবার টাকার অভাবে সুখ নষ্ট হয়ে যায়। তাই বলে সারাজীবন গাধার মতো খাটনি করে মরবেন?
Cash flow Quadrant বইয়ের লেখক Robert Kiyosaki বলেন—

Make money work for you rather than working all your life for money.

যে যাই বলুক,টাকা ছাড়া এই পুঁজিবাদী দুনিয়ায় টিকে থাকা যাবে না। এজন্য টাকা আয় করার পাশাপাশি টাকা ঠিকমতো ব্যবহার করাটাও শেখা জরুরী।

৭. আত্ন -উন্নয়ন

Lou Holtz বলেন —

” You are either growing or dying”

জীবনের প্রতিক্ষেত্রে আপনি নিজের উন্নয়ন করবেন। যদি উদাহরণ দেই- স্কুলে আপনার স্কিল যতটুক ছিলো, কলেজে বা ভার্সিটিতে উঠে নিশ্চয় বেড়েছে। আপনি অনেক মানুষের সাথে পরিচিত হয়েছেন, জ্ঞান বেড়েছে। যে স্টেজেই থাকেন না কেন পরিবেশ অনুযায়ী নিজের উন্নয়ন ঘটান।

আশা করি এই টিপসগুলোর মাধ্যমে আপনার জীবনের  অত্যাবশ্যকীয় কাজগুলো সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।  এখন আপনার জীবনের কাজগুলো খুঁজুন।  কেন আপনি বেঁচে আছেন?

Similar Posts