পোষা প্রাণীর যত্ন নিয়ে যত কথা

সঙ্গী হিসেবে পোষা প্রাণী থাকা খুবই সাধারণ একটি চিত্র। উন্নত দেশগুলোতে পোষা প্রাণীর সংখ্যা প্রচুর যার তুলনায় বাংলাদেশে এ সংখ্যা নগন্য। কিন্তু তাই বলে এই সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। কুকুর, বিড়াল, টিয়া, ময়না, লাভ বার্ডস, খরগোশ ইত্যাদি অহরহ পাওয়া যায় বাংলাদেশের বাসা বাড়িতে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এসব প্রাণীর ক্ষেত্রে কি কি করতে হয় এবং কি কি করতে হয় না। যার ফলস্বরূপ প্রিয় এই পোষা প্রাণী হয়ে দাঁড়ায় ভোগান্তি বা কষ্টের কারণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক পোষা প্রাণী প্রতিপালনের ক্ষেত্রে করনীয় এবং বর্জনীয় বিষয়গুলো।

প্রথমে জানতে হবে আপনার আদরের পোষা প্রাণীর জন্য কি কি করবেন। তালিকা স্বরূপ বলা যায়ঃ

  • ভ্যাক্সিনেশন- বিশেষত কুকুর বিড়ালের জন্য এই বিষয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মালিক এবং প্রাণি উভয়ের জন্যই এটি দরকার। ভ্যাক্সিনের মধ্যে মূলত র‍্যাবিস ভ্যাক্সিনটি অন্যতম। আমাদের দেশে বেশিরভাগ পোষা কুকুর বিড়াল রাস্তা থেকে কুড়িয়ে নিয়ে এডপ্ট করা। সেক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুতেপূর্ণ।
  • পরিচর্যা- পরিচর্যা বা গ্রুমিং আপনার পোষা প্রাণীর পরিচ্ছন্নতার একটি অংশ। সময়মত নখ কেটে দেয়া, বাড়তি লোম কেটে দেয়া, গোসল করানো এসব কাজ না করলে রোগবালাই সংক্রমন বেশি হয়।
  • খাবার নির্বাচন- খাবার নির্বাচনের জন্য অবশ্যই পুষ্টিকর এবং মজাদার খাবার নির্বাচন করতে হবে। পুষ্টিকর না হলে প্রাণীর বেড়ে ওঠা ব্যাঘাত ঘটবে আর মজাদার না হলে কেউ কি খাবার খেতে চায়?
  • ভেটেরিনারি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ- আপনার প্রিয় প্রাণীর যেকোন রোগ ব্যধিতে অবশ্যই কোন ডাক্তারের সরণাপন্ন হবেন। কুকুর বিড়াল কিংবা পাখির রোগ একটু জটিল হয় তাই কার্পণ্য করবেন না।
  • আপনার পোষা প্রাণীকে যথেষ্ট পরিমাণ সময় দিন। সময় না দিলে প্রাণীটি ডিপ্রেশনে ভুগবে। জ্বি হ্যা প্রাণীরাও ডিপ্রেশনে ভোগে।

এখন চলুন জেনে নেই কি কি করা যাবে নাঃ

  • প্রথমত জানতে হবে আপনার প্রাণী কিসের প্রতি সংবেদনশীল। কুকুর বিড়ালে প্যারাসিটামল ঔষধ বিষক্রিয়া করে। তাই অবশ্যই এসব ব্যাপারে লক্ষ্য রাখবেন। কুকুর কিংবা বিড়ালকে কখনো চকলেট খেতে দিবেন না। এটিও বিষক্রিয়া করে।
  • আপনার প্রাণীকে বেশীসময়ের জন্য একা রাখবেন না। বেশীসময় একা থাকলে প্রাণী ভয় পায় এবং অনেকক্ষেত্রে বাড়িঘর ও আসবাবপত্রের ক্ষতিসাধন করে।
  • বাসায় গেস্ট আসলে প্রথমে বুঝে নিন আপনার প্রাণী তার সাথে মিশতে পারছে কিনা। প্রাণিটি যদি আপনার মেহমানকে পছন্দ না করে তাহলে অবশ্যই তাকে দূরে রাখুন।
  • আপনার প্রাণী যদি বাচ্চা প্রসব করে থাকে তাহলে বাচ্চাকে মা থেকে দূর করবেন না। এতে করে প্রাণীর সাইকোলজিক্যাল সমস্যা হতে পারে।
  • আপনি যদি আগের পোষা প্রাণীর সাথে নতুন কোন প্রাণি পালতে চান তাহলে প্রথমেই দুটি প্রাণীকে সামনাসামনি না আনাই ভালো। অনেকক্ষেত্রে পুরাতন প্রাণীটি আক্রমণাত্মক হতে পারে।

আপনি আপনার প্রাণীর যত্ন যেভাবে নিবেন আপনার প্রাণী সেভাবেই মানিয়ে নিবে। কিন্তু এসব ব্যাপার খেয়াল রাখলে তা মালিক ও প্রাণী উভয়ের জন্যই সুফল বয়ে আনে। আপনি যখন একটি প্রাণী পালতে শুরু করবেন তখন সে প্রাণীর সম্পূর্ণ দায়িত্ব আপনার। আর একটি প্রাণের দায়িত্ব নেয়া অবশ্যই সহজ ব্যাপার না। তাই ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিবেন। আজ এপর্যন্তই, আশা করি সামনে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলবো।

Similar Posts