আপনি কি স্যাপিওসেক্সুয়াল? জেনে নিন

মানুষ মাত্রই বিচিত্র হয়ে থাকে। একেকজনের স্বভাব চরিত্র একেক রকম হওয়ায় বিচিত্রতায় ঘেরা থাকে। এই বিচিত্রতার দুনিয়ায় অনেক রকম মানুষের দেখা মেলে। তেমনি একটি বিচিত্র ধরণের মানুষ হচ্ছে স্যাপিওসেক্সুয়াল।

আচ্ছা প্রথমে স্যাপিওসেক্সুয়াল মানুষের সম্পর্কে একটু ধারণা দেয়া যাক। স্যাপিওসেক্সুয়াল কারা এবং তারা কেনো স্যাপিওসেক্সুয়াল তা নিয়ে বিস্তারিত বলে নেই। এরপর তাদের বৈশিষ্ট্য বলবো এবং আপনারা মিলিয়ে দেখবেন আপনাদের সাথে সেটা মিলে যাচ্ছে কি না?

স্যাপিওসেক্সুয়াল কারা?

একজন সাধারণ মানুষ তার বিপরীত লিঙ্গের ঠিক কোন কোন জিনিস দেখে প্রেমে পড়তে পারেন?

উত্তর খুব সহজ। তার বিপরীত লিঙ্গের সেই মানুষটা কতটা সুন্দর, দেখতে কতটা আকর্ষণীয় এবং কতটা রুপবান ইত্যাদি। এমনকি মেয়েরাও কিন্তু ছেলেদের রূপ, না হয় সুঠাম দেহ অথবা যেকোনো আকর্ষণীয় শারীরিক গঠন দেখে প্রেমে পড়তে পারে।

যা দেখেই প্রেমে পড়ুক না কেন, মূল কথা সেই একদিকেই। সৌন্দর্যতা। অবশ্য অনেকে ব্যবহার কিংবা মন দেখে প্রেমে পড়তে পারে তাদের কথা অবশ্য আলাদা।

স্যাপিওসেক্সুয়াল যারা, তারা মানুষের অর্থাৎ তাদের বিপরীত লিঙ্গের মানুষের শারীরিক সৌন্দর্য দেখে প্রেমে পড়ে না। তারা প্রেমে পড়ে বিপরীত লিঙ্গের মানুষটার বুদ্ধিমত্তা দেখে।

হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। তাদের সব আবেদনময়ীতা, সব প্রেম, সকল সৌন্দর্য ঘিরে থাকে ওই এক বুদ্ধিমত্তা নিয়েই৷ তারা শারিরীক সৌন্দর্য নিয়ে খুব একটা পরোয়া করে না। এক্ষেত্রে যদি কদাকার দেখতে কেউও যদি অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার অধিকারী হয়ে থাকে তবে একজন স্যাপিওসেক্সুয়াল তার প্রেমে পড়তে বাধ্য এবং শতভাগ নিশ্চিত থাকা যায় যে একজন স্যাপিওসেক্সুয়াল তাকে অনেক করে পেতে চাইবে।

এটা ছিলো স্যাপিওসেক্সুয়ালদের সংজ্ঞা তথা, স্যাপিওসেক্সুয়াল আসলে কাদের বলে। এখন তাদের বৈশিষ্ট্য গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

স্যাপিওসেক্সুয়ালদের বৈশিষ্ট্য –

১) একজন স্যাপিওসেক্সুয়াল কখনোই শারিরীক সৌন্দর্য দেখে প্রেমে পড়বে না। সে শুধুমাত্র বুদ্ধিমত্তা দেখেই প্রেমে পড়বে।

২) যেহেতু তারা শারিরীক সৌন্দর্য দেখে প্রেমে পড়তে পারে না, তাই তাদের দেহ নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ নেই। যেমন আপনার যদি কোনো এক দূর্ঘটনায় হাত কিংবা পা হারিয়ে গেছে, কিন্তু আপনি অসাধারণ মেধা তথা বুদ্ধিমত্তার অধিকারী, একজন স্যাপিওসেক্সুয়াল ঠিক আপনার প্রেমে পড়ে যাবে। এবং তার কাছে আপনার দেহের এই  ক্রুটিটি চোখে পড়বে না।

৩) তাদের ধারণা সকল সৌন্দর্য একমাত্র মস্তিষ্কে লুকিয়ে থাকে। একজন স্যাপিওসেক্সুয়াল সাধারণত বিপরীত লিঙ্গের যেসব বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকে, সেগুলো হলো- মানুষটির অসাধারণ মেধা, বুদ্ধিমত্তা, কৌতুহলী মনোভাব, গভীর চিন্তাশক্তি। মনস্তাত্ত্বিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, দার্শনিক আলাপ আলোচনা করার প্রকাশ্য ইচ্ছা, যেকোনো বিষয় সম্পর্কে কৌতূহল দমানোর জন্য প্রশ্ন করা।
মূলত এসব জিনিস যদি কোনো সাধারণ মানুষের ভেতর থেকে থাকে, তবে তার বিপরীত লিঙ্গের স্যাপিওসেক্সুয়াল তার প্রেমে পড়ে যাবে।

৪) একজন স্যাপিওসেক্সুয়াল এর প্রেমে পড়তে একটু বেশি সময় লাগে। কেননা তাদের প্রেম শুধুমাত্র দেহের সৌন্দর্য এবং রুপের বাহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সেই গন্ডি পেরিয়ে গেছে। আপনার স্যাপিওসেক্সুয়াল হওয়ার প্রথম লক্ষ্মণ হলো- আপনার বন্ধু বান্ধবেরা কাউকে না কাউকে পছন্দ করে কিন্তু আপনার-ই কাউকে তেমন ভালো লাগে না। অর্থাৎ কারও প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন না

৫) সাধারণত স্যাপিওসেক্সুয়ালদের প্রেমের শুরু বন্ধুত্ব থেকেই হয়। কেননা বন্ধু হবার পরেই একে অপরের সম্পর্কে জানতে পারা যায় এবং বুদ্ধিমত্তাও আঁচ করে ফেলা যায়।

৬) বোকা এবং বদ মেজাজী মানুষদের স্যাপিওসেক্সুয়ালরা মোটেও সহ্য করতে পারে না।

৭) তারা যদি কাউকে পছন্দ করে ফেলে বুঝে নিতে হবে সেটা সত্যিকার অর্থে-ই পছন্দ। কেননা তারা সহজে প্রেমে পড়ে না। এবং একবার প্রেমে পড়লে তা সহজে ছেড়ে আসতে পারে না।

স্যাপিওসেক্সুয়ালদের আরও কিছু লক্ষণ অবশ্য আছে। তবে সেগুলো পরে পরবর্তীতে আলোচনা করা যাবে।
আজ এ পর্যন্তই। ধন্যবাদ।

Similar Posts