পারিবারিক সুসম্পর্ক ধরে রাখতে যা করবেন: পর্ব – ২
প্রথম পর্বের পরের অংশ…
গত পর্বে আলোচনা করা হয়েছিল কীভাবে পরিবারের সদস্যদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা যায় তার প্রথম কয়েকটি বিষয় । আজকের এই আর্টিকেলটিতে বাকি পদক্ষেপ গুলো আলোচনা করা হবে৷ তাই চলুন, দেরি না করে আর্টিকেলটির মূল অংশে প্রবেশ করা যাক।
পরিবারের কোন সদস্যের অসুখ হলে তার বাড়তি যত্ন নেওয়া
একজন মানুষ সবসময় সুস্থ থাকতে পারে না। কাজের চাপে কিংবা বাহ্যিক কোন কিছুর কারণে একজন ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেউ যখন অসুস্থ হয়ে যায় বা শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করে, তখন পরিবারের প্রত্যেকের উচিত তার বাড়তি যত্ন নেওয়া। কেননা একজন মানুষের আসল আবেগ-অনুভূতি শুধুমাত্র অপর ব্যক্তির অসুস্থতার সময় বেরিয়ে আসে। যেমন পরিবারে যদি কোন ব্যক্তি খুব ঘৃণিত হয়ে থাকে এবং সে যদি অসুস্থ হয়, তখন দেখা যাবে পরিবারের সদস্যরা কেউ তার বাড়তি সেবা যত্ন করবে না। কেউ মন থেকে তার সেবা যত্ন করবে না। বরং এক প্রকার বাধ্য হয়েই পরিবারের সদস্যরা যত্ন করবে। এই আচরণগুলো পরিবারের সেই ঘৃণিত ব্যক্তি খুব ভালোমতো বুঝতে পারবে, অনুধাবন করতে পারবে যে তাকে কেউ পছন্দ করে না। ঠিক সেভাবেই যদি পরিবারের কোনো সদস্যকে সকলে খুব বেশি ভালোবেসে থাকে, তার অসুস্থতায় প্রত্যেকে পাগলপ্রায় হয়ে যাবে। তার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করবে এবং তার প্রত্যেকটা প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে। অর্থাৎ বাড়তি যত্ন করবে। যাই হোক মূল কথা হচ্ছে, পরিবারের যে ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়বে তার প্রতি বাড়তি যত্ন নিতে হবে। এতে করে ব্যক্তির মনের ভেতর শান্তি অনুভব করবে যে তার অসুস্থতা পরিবারের উপর এত প্রভাব ফেলছে।
পরিবারের সদস্যরা ছুটির দিনে একত্রে সময় কাটান
প্রতিদিন কাজ করার পরে সপ্তাহে একদিন কিংবা দুদিন কর্মস্থল থেকে ছুটি পাওয়া যায়। সাধারণত ছুটির দিন তাই সকলে বিশ্রাম করতে চায়। নিজেদের মত থাকতে চায়। কিন্তু যদি আপনারা ছুটির দিনগুলো পরিবারকে হস্তান্তর করতে পারেন, পরিবারের জন্য সময় বের করে তাদের সাথে সময় কাটাতে পারেন, তখন কিন্তু পারিবারিক সম্পর্ক সুদৃঢ় হতে থাকে। এই ধরুন ছুটির দিনে বাড়িতে থেকে সকলে মিলে মজাদার কোনো একটা খাবার আইটেম তৈরি করলেন। ভালো-মন্দ খেলেন, সন্ধ্যায় টিভিতে বিনোদনমূলক কোন একটি অনুষ্ঠান হলে সেটি সকলে একসাথে মিলে উপভোগ করলেন, এছাড়াও সন্ধ্যার সময়টায় বারান্দায় বা ছাদে গিয়ে চা খেতে খেতে গল্প করতে আড্ডা দিলেন । এভাবেই কিন্তু ছোটখাটো কাজকর্ম করে পরিবারের সদস্যদের কাছে নিজের সময়টা যেমন দেওয়া হয়, ঠিক তেমনি এই কাজগুলোর মাধ্যমে সদস্যদের একে অপরের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয়। তাই বিষয়গুলো মাথায় রেখে নিয়মগুলো অনুসরণ করুন।
পরিকল্পনা করুন হলিডে প্ল্যান এর
বছরে বেশ কয়েকবার একটানা তিন থেকে চার দিনের মতো ছুটি প্রায়ই পাওয়া যায়। যে সময় পরিবারের সকল সদস্যদের সরকারি ছুটি গুলো পাওয়া যাবে তখন পরিকল্পনা করে দূরে কোথাও ছুটি কাটাতে যান। ভ্রমণ করে আসুন নিজের বাড়ি থেকে অনেক দূরে কোন এক শান্ত সুন্দর পরিবেশে। কোন এক নতুন পরিবেশে ঘুরে আসলে মনে এক ধরনের শান্তি কাজ করে এবং পরিবারের সদস্যরা যদি একত্রে সেখানে ঘুরতে যায় তবে তাদের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধনগুলো দৃঢ় হবে। তাই সময় সুযোগ বুঝে ছোট একটা হলিডে টুর দিয়ে আসতেই পারেন।
সুপ্রিয় পাঠক উক্ত কাজকর্মগুলো পরিবারের সদস্যদের প্রতি সুসম্পর্ক স্থাপন করে থাকে। তাই পারিবারিক মধ্যকার দ্বন্দ্ব মেটাতে এবং ঝগড়াঝাঁটি এড়াতে, একইসাথে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করার জন্য পদক্ষেপগুলো মেনে চলার অনুরোধ করছি। আমরা কেউই চাই না আমাদের অতি প্রিয় ভালবাসার পরিবার সামান্য কারণে ভেঙে যাক। তাই পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আর্টিকেলটিতে উল্লেখিত পদক্ষেপগুলো মেনে চলতেই পারি, তাই না? আজ তাহলে আর্টিকেলটির এখানেই ইতি টানছি। ধন্যবাদ।