কিভাবে দাঁতের যত্ন নিবেন?
(লেখা কপি করার কারণে এই লেখক কে বাংলা ভাইব থেকে ব্যান করা হয়েছে। আর এই লেখার মূল সোর্স এই ভিডিও (https://www.youtube.com/watch?v=XaGJo3Gzq6U)। আমাদের অগোচরে প্লাগারাইজড কন্টেন্ট সাইটে পাবলিশ হয়ে যাওয়াতে আমরা অডিয়েন্সের কাছে আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।)
জীবনে নিজের সৌন্দর্য ও নিজের স্মার্টনেস আর নিজের উপর কনফিডেন্স ধরে রাখাটা আমাদের সবার নিজেদেরই দায়িত্ব। আর নিজেকে পুরোপুরি ফিট রাখতে পারাটাও নিজেরই ক্রেডিট। আজকাল অনেকেরই দাঁত ধীরে ধীরে হলুদ হয়ে যাওয়াতে, তাদের সৌন্দর্য আর কনফিডেন্সের উপর নেগেটিভ ইম্প্যাক্ট হচ্ছে। এই সমস্যার জন্য অনেকেই আমরা বাইরে মুখ খুলে হাসতে পারি না, হাসলেও মুখ চেপে হাসি। এছাড়া কর্মক্ষেত্রেও সবার সাথে কথা বলার সময় হয়তো সংকোচ বোধ করি। এছাড়াও অনেক সময় আমাদের মুখের দুর্গন্ধও তৈরি হয়। আর এই সবকিছু আমাদের জন্য বেশ বড় রকমেরই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় যখন আমরা কোনো জব ইন্টারভিউ দিতে যাই বা কারো সাথে সাক্ষাৎ করতে যাই। এটা নিজেরও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় আর উল্টো দিকে যে মানুষটি রয়েছে তারও আপনার প্রতি ইম্প্রেশনটা কিছুটা হলেও খারাপ হয়। এই জন্যই আমাদের টিথ হোয়াইটনিং করাটা খুবই জরুরী। তো যদি আপনি এই সমস্যাটা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটা আপনাকে অবশ্যই সাহায্য করবে।
টিথ হোয়াইটনিং এর জন্য আজ আপনাদের সাথে কিছু সহজ ঘরোয়া টিপস শেয়ার করতে চলেছি যেগুলো আপনারা খুব সহজেই ঘরে বসেই এপ্লাই করতে পারবেন। আর এতে কোনো কেমিক্যালও থাকবে না, আর এগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার দাঁত খুব সহজেই সাদা হবে আর মুখে কোনোরকম দুর্গন্ধও হবে না। আর অবশ্যই এতে আপনার দাঁত সুস্থ সবলও থাকবে। শুধু টিপসগুলোকে আপনাকে নিয়মিত ফলো করার চেষ্টা করতে হবে।
তবে টিপস দেওয়ার আগে বলি, কেন আমাদের দাঁত হলুদ হয়? অনেক সময় আমরা এমন কিছু খাবার খেয়ে নিই যেগুলোতে আমাদের দাঁতে দাগ পড়ে যায়। এছাড়া দূর্বল ডেন্টাল হাইজিন অর্থাৎ দাঁতের ঠিকঠাক যত্ন না নেওয়ায় দাঁত হলুদ হয়ে যায়। আর ঠিকভাবে ব্রাশ করার না জন্যও এই সমস্যাটা আরো বেশি দেখা দেয়। আরো অনেক ক্ষেত্রে জেনেটিক কারণেও দাঁত হলুদ হতে পারে, এছাড়াও অনেক সময় এমন অনেক ওষুধ খেতে হয় যার ফলেও দাঁতে দাগ পড়ে আর দাঁত হলুদ হতে থাকে। এছাড়াও সিগারেট, পান, গুটকা জাতীয় জিনিস খাওয়ার ফলেও দাঁতে হলদে ভাব দেখা দিতে থাকে। এর সব থেকে বড় কারণ হল, এগুলোতে দাঁতের এনামেলের ক্ষয় হয়ে যায়। তাহলে চলুন এবার টিপসগুলো দেখে নেওয়া যাক-
১. বেকিং সোডা
প্রথমে একটা পাত্রে আধ চামচ কি তার একটু কম বেকিং সোডা নিতে হবে। খেয়াল রাখবেন, এখানে বেকিং সোডা-ই লাগবে বা খাবার সোডা আমরা যেটাকে বলি সেটা। বেকিং পাউডার কিন্তু না। এরপর তার সাথে কোনোরকম ফ্লেভার বা কেমিক্যাল ছাড়া টুথপেস্ট ইউজ করতে হবে। আপনি প্রতিদিন ব্রাশ করার সময় যতটা পরিমাণ টুথপেস্ট ইউজ করেন, ঠিক সেই পরিমাণ বা তার থেকে একটু বেশি টুথপেস্ট নিন এবং বেকিং সোডার সাথে মিশিয়ে তাতে এক চামচ পাতিলেবুর রস মিক্সড করুন। এরপর সেটাকে ব্রাশে নিয়ে রোজ যেমন দাঁত মাজেন সেরকমই এটা দিয়ে দাঁত মাজুন। এতে আপনি দেখতে পাবেন আপনার দাঁতটা অনেকটা সাদা হবে।
এটা আপনি প্রথমে সপ্তাহে দু’দিন ইউজ করবেন। তারপর যখন দেখবেন আপনার দাঁত সাদা হতে থাকছে তখন সপ্তাহে একদিন এটা করলেই হবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, এটা যেন প্রতিদিন না করা হয়, তাহলেও কিন্তু দাঁতের ক্ষতি হয়ে যাবে। কারণ, বেকিং সোডা প্রতিদিন বা বেশি পরিমাণে ইউজ করলেও দাঁত ক্ষয়ে যেতে পারে আর দাঁতে এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সপ্তাহে এক বা দুই দিন করাই আপনার দাঁতের জন্য সব থেকে ভালো। এখানে পাতিলেবু দাঁতের দাগ গুলোকে রিমুভ করার জন্য ইউজ করা হয়। আর এই মিক্সারটা ইউজ করলে দাঁতের যে হলুদ ভাব সেটা রিমুভ হয়, তার সাথে সাথে ক্যাভিটি থেকেও এটা দাঁতকে বাঁচায়। আর এটা ইউজ করলে মুখে একটা ফ্রেশ ভাব আসে আর মুখে যে দুর্গন্ধ সেটাও রিমুভ হয়। এটি প্রাকৃতিক এবং এটিতে রঞ্জক, স্বাদযুক্ত বা অন্যান্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক নেই। বেকিং সোডা এবং হাইড্রোজেন পারক্সাইড- দাঁত সাদা করার ক্ষেত্রে কার্যকর। আর এটি দাঁতের Plaque পরিষ্কার করে এবং অপসারণ করে। Plaque হচ্ছে- খাবার খাওয়ার পর দাঁতের গোড়ায় কিছুটা হলদে রঙের যে দাগের সৃষ্টি হয় সেটা।
২. অয়েল পুলিং
যেহেতু আমাদের এনামেল ক্ষয়ে যাওয়ায় দাঁত ধীরে ধীরে হলুদ হতে থাকে, তাই এর জন্য আরেকটা ভালো টিপস হলো অয়েল পুলিং। আপনি এক চামচ নারকেল তেল মুখে নিয়ে সেটা দিয়ে কুলকুচি করুন। খেয়াল রাখবেন, কুলকুচি করার সময় তেলটা যেন মুখের চারিদিকে ছড়িয়ে যায়। এভাবে তিন মিনিট কুলকুচি করার পর সেটাকে ফেলে দিন। নারকেল তেলে লাউরিক এসিড থাকে যেটা দাঁত হলুদ করার জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে আর সাথে সাথে দাঁতের মাড়িকে আরো শক্ত ও হেলদি বানাতেও সাহায্য করে। আর মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য এটা খুবই হেল্পফুল। আর অয়েল পুলিং করাটা একদমই ন্যাচারাল। এতে কোনো সাইডএফেক্টও নাই।
অয়েল পুলিং করার পর কোনোরকম কেমিক্যাল ছাড়া পেস্ট দিয়ে দাঁত মেজে ফেলতে হবে। আর আপনি এটা প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে আর সকালে ঘুম থেকে উঠে করতে পারেন। এতে আপনার দাঁত সুন্দর এবং মজবুত হবে। অয়েল পুলিং- ‘কভালা’ বা ‘গুন্দুশা’ নামেও পরিচিত যা একটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক ডেন্টাল কৌশল।
৩. সরষের তেল
আমাদের দাঁত হলুদ বা কালো হয়ে যাওয়া, এছাড়াও আরো অন্যান্য দাঁত জড়িত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমাদের তিন নাম্বার টিপস হলো মাস্টার্ড অয়েল বা সরষের তেল। সরষে তেল দাঁতের জন্য একটা খুব ভালো হোম রিমেডি। এক চামচ সরষের তেলে হাল্ফ চামচ কি তার একটু কম নুন মিশিয়ে আপনি ভালোভাবে হালকা হাতে তাতে মালিশ করুন। এটা করলে আপনার দাঁত সাদা তো হবেই আর তার সাথে দাঁতের যদি ব্যাথা হয়ে থাকে তাহলে সেটা থেকেও আপনি রিলিফ পাবেন। আপনি চাইলে সরষের তেলের সাথে বেকিং সোডা মিশিয়েও এপ্লাই করতে পারেন।
৪. স্বাস্থকর খাদ্যগ্রহন
টিপস নাম্বার ফোর হলো লাস্ট এবং ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ টিপস। আমরা আজকাল কমবেশী সবাই চা-কফি ভীষণ পরিমাণে খাই। তো আপনার কাছে রিকোয়েস্ট যে চা-কফির নেশাটা একটু কমান যদি আপনি ভালো সুন্দর সাদা দাঁত চান। কারণ, চা-কফি অত্যাধিক পরিমাণে খেলে তার ফলে দাঁতে দাগ পড়তে থাকে আর দাঁত হলুদ হতে থাকে। এছাড়া বাইরের ফাস্টফুড আর কেমিক্যাল মেশানো খাবারগুলো থেকে দূরে থাকাটা শরীরের জন্য যেমন দরকার, সেরকমই দাঁতের জন্যও দরকার। কারণ, এতেও আপনার দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। আর হার্ড ড্রিংকস সফট ড্রিংকসগুলোও দাঁতের জন্য ভীষণই ক্ষতিকারক। কারণ, এসব ড্রিংকসে যে পরিমাণে অ্যাসিড থাকে সেগুলোতে দাঁতের এনামেল ক্ষয় যায় আর সিগারেট বা তামাক জাতীয় জিনিস বা পান, এসবের থেকেও দূরে থাকুন। কারণ, এসবও দাঁতে মারাত্মক ক্ষতি করে।
চেষ্টা করবেন, প্রতিদিন রাতে দাঁত মেজে তারপর ঘুমানোর এতে দাঁত সত্যিই খুব ভালো থাকবে। আর মুখের মধ্যে থুথুর পরিমাণ কমে গেলে তাতেও কিন্তু দাঁতের এনামেল অর্থাৎ সাদা অংশগুলো কমজোরি হয়ে পড়তে থাকে। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি খেয়ে শরীরকে সবসময় হাইড্রেটেড রাখার চেষ্টা করুন। যদি মজবুত দাঁত চান, তাহলে অবশ্যই কেমিক্যাল ছাড়া টুথপেস্ট ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
এবার সবশেষে বলি, কি কি খাওয়া আপনার দাঁতের পক্ষে খুবই উপকার। যেসব খাবারে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম আছে সেসব খাবার খাওয়া আপনার দাঁতের পক্ষে খুবই উপকার। যেমন- সবুজ শাকসবজি, ফল, আলমন্ড, বাদাম, আখরোট এগুলি আপনার দাঁতের জন্য ভীষণ উপকারী। আর আখ এবং সবুজ শাকসবজি ডাটা এগুলি খেলে দাঁতের জোর বাড়ে আর দাঁত মজবুতও হয়। আপনি যদি দাঁতের সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন তাহলে এখন যা যা বললাম তার মধ্যে চার নাম্বার টিপসের কথাগুলি তো অবশ্যই ফলো করুন। আর বাকি তিনটা টিপসের মধ্যে আপনার সুবিধা অনুযায়ী আপনার পছন্দের যেকোনো একটা টিপস ইউজ করতে পারেন। আর এগুলো নিয়মিত ফলো করলে আশা করা যায় এক সপ্তাহ পরই আপনি রেজাল্ট দেখতে পাবেন। আর তখন চাকরির ইন্টারভিউয়ে কনফিডেন্স থাকাই হোক, প্রাণ খুলে হাসাই হোক, কোনোটাতেই আপনি আর সংকোচ বোধ করবেন না।
সব সময় মনে রাখবেন,
Beauty is power, a smile is It’s sword.
– John Ray