চট্টগ্রামের বাটারফ্লাই পার্ক
প্রজাপতির রঙিন ওড়াউড়ি – চট্টগ্রামের বাটারফ্লাই পার্ক
জায়গা বর্ণনাঃ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরের পাশে পতেঙ্গা নেভাল একাডেমি ১৫ নম্বর রোডে বাহারী রঙের জীবিত হরেক প্রজাপতি নিয়ে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম প্রজাপতি উদ্যান, প্রজাপতি পার্ক। ২০০৯ সালে ছয় একর জায়গা নিয়ে দর্শনার্থীদের নজর কারতে গড়ে তোলা হলেও ২০১২ সালের অক্টোবরে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করে প্রজাপতি পার্কটি। বাংলাদেশে ৬০০ প্রজাতির প্রজাপতির মধ্যে এ পার্কে ২০০ প্রজাতির প্রায় ১০০০-এর বেশি প্রজাপতি রয়েছে। আর স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের দক্ষতায় ১৯ প্রজাতির প্রজনন করিয়েছে কৃর্তপক্ষ। মার্চ থেকে আগস্ট-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ প্রজননের সময় প্রজাপতির সংখ্যা আরও বাড়ে।
বাটারফ্লাই পার্কের সামনে গেইট দাঁড়ালেই চোখে পড়বে বিশাল বিশাল প্রজাপতির ছবি। সেটা দেখেই আন্দাজ করা যায়, হাজার হাজার প্রজাপতি আমন্ত্রণ জানাচ্ছে প্রজাপতির ভুবনে। পার্কে প্রবেশ করতেই প্রথমেই দেখা মিলবে কৃত্রিম ঝর্ণার। কৃত্রিম ঝর্ণা পেরিয়ে চোখে পড়বে তারের জালে তৈরি ‘বাটারফ্লাই জোন’। বাটারফ্লাই জোন ডুকতে গেলে প্রথমে বাধা হয়ে দাঁড়াবে লোহার একটি গেট যেটা পার হলেই আবারো মোটা পলিথিনের আরেকটি দরজা। আর দরজাটি পার হলে দেখা মিলে বৈচিত্র্যময় বর্ণীল রঙে রঙের প্রজাপতির বিশাল এক জগত। ছোট্ট জলধারার চারপাশে নানা রকম গাছপালা, যার বেশিরভাগই বনফুল। এক একটি গাছে, ফুলে একেক রকম প্রজাপতি। কোনো কোনো গাছের পাতায় দেখা যাবে শুককিট, যা থেকেই মূলত প্রজাপতির জন্ম। দর্শনার্থীদের জন্য গাছের ছায়ায় ছায়ায় বসার ব্যবস্থাও করা আছে। বসার চেয়ারগুলো বিশাল আকৃতির প্রজাপতি রূপ দিয়ে তৈরি। ‘বাটারফ্লাই জোন’ থেকে বেরিয়ে যেতে চোখে পড়বে ‘বাটারফ্লাই মিউজিয়াম’। এটি মূলত একটি প্রজাপতি জাদুঘর। যেখানে সংরক্ষণ করা হয়েছে বিভিন্ন দেশ-বিদেশ থেকে শত শত মৃত প্রজাপতি এবং ভেতরের দেয়ালে কাচঘেরা বাক্সে মেডিসিন দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে সাথে তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাপতির জীবনচক্র সহ নানান উপাদান। সচেতনতা বাড়াতে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে ‘সেভ দ্য বাটারফ্লাই- সেভ দ্য আর্থ’। প্রজাপতির জাদুঘর থেকে বেরিয়ে একটু সামনে গেলে শিশুদের খেলাধূলার জন্য পার্কটি সাজানা হয়েছে পরিপাটি করে সাথে তাদের পছন্দনীয় রাইড গুলো নিয়ে। আর পার্কের পূর্ব দিকে একটি জলাশয় রয়েছে যার মধ্যে আপনার প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে নৌকা/সাম্পান ভ্রমণের করতে পারেন। পার্কটিকে সাজাতে বিভিন্ন পশুর মাটির ভাষ্কর্য্য রাখা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ শতাধিক লোকের জন্য একটি বনভোজন কেন্দ্রও ব্যবস্থা আছে আর আপনি চাইলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য হল ব্যবহার করতে পারেন। বাটারফ্লাই পার্কের একপাশে আছে আধুনিক রেস্ট হাউস আর রেস্তোরাঁ। ঘুরে ভাল লেগে গেলে অথবা দূর-দূরান্ত হতে আগত দর্শনার্থীদের থেকেও যেতে পারে।
প্রজাপতির দেখার সময়ঃ রৌদ্র উজ্বল দিন প্রজাপতি দেখার উত্তম সময়। তাই পার্কটিতে অবস্থিত প্রজাপতি জোনে সকাল (৯-১১টা) এবং দুপুর (২-৪টা) পর্যন্ত বেশি সংখ্যক প্রজাপতির দেখা মিলার সম্ববনা রয়েছে। বিকেল বেলা বা মেঘলা আবহাওয়ায় ওরা সাধারনত ঝোপের মধ্যে অবস্থান নিয়ে থাকে।
হোটেল-মোটেল:
পার্কের পাশের রিসোর্টে দর্শনার্থীরা চাইলেই রাত্রিযাপন করতে পারবেন। বেশ সাজানো গোছানো রিসোর্টের কক্ষগুলো। শীতল হাওয়া, উষ্ণ পানির ব্যবস্থা ছাড়াও আধুনিক সব সুবিধা আছে।
* স্ট্যান্ডার্ড রুমঃ ৪০০০/- (প্রতি রাত)
* সুপার ডিলাক্স রুমঃ ৫০০০/- (প্রতি রাত)
* প্রজাপতি মামলাঃ ৭০০০/- (প্রতি রাত)
* খাবার প্রাইস আপনার আইটেম উপর নির্ভর করবে।
এ ছাড়া এ মূল্যের সঙ্গে রয়েছে ১০% সার্ভিস ও ১৫% ভ্যাট।
যোগাযোগ : ০১১৯৫০১০৫০০, ০১১৯৫০১০৬০১, ০১৯৭৫০০৬০১২
টিকেটঃ
*বৃহস্পতি-শুক্র-শনিবার জনপ্রতি বড়দের জন্য ১০০ টাকা এবং ছোটদের জন্য ৫০ টাকা করে।
*রবি-সোম-মঙ্গল-বুধবার জনপ্রতি বড়দের জন্য ৫০ টাকা এবং ছোটদের জন্য ৩০ টাকা করে।
*বনভোজনের ক্ষেত্রে কতৃপক্ষ সাথে আলোচনা করে নিতে হবে।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও আকাশপথে যেতে পারেন চট্টগামে।
*ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রোডে বাংলাদেশ বিমান, ইউনাইটেড এয়ার এবং জিএমজির বিমান চলাচল করে। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে সিএনজিচালিত বেবিটেক্সিতে আসতে পারেন।
*ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রোডে হাই ক্লাস থেকে শুরু করে লও ক্লাসসহ অনেক ধরনের বাস সার্ভিস চলাচল করে। চট্টগ্রাম বাস সার্ভিস গুলো হয় এ কে খান না হয় । উক্ত যেকোন স্থান থেকে সিএনজিচালিত বেবিটেক্সিতেও আসতে পারেন।
* ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রোডে মেইল ট্রেন সহ বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে। চট্টগ্রাম রেল স্ট্রেশন থেকে থেকে সিএনজিচালিত বেবিটেক্সিতেও আসতে পারেন।
তথ্য সংগ্রহঃ ইন্টারনেট এবং তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট (http://www.bangladeshbutterflypark.com.bd)