চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানা ভ্রমণ

নগর জীবনের ক্লান্তিকর এক ঘেঁয়েমি থেকে নগরবাসীকে একটু বিনোদনের ছোঁয়া দিতে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা

জায়গায় বর্ণনাঃ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকে পাহাড়তলী ফয়েজ লেকের পাশে ছয় একর ভূমির উপর অবস্থিত চট্টগ্রাম চিড়িয়খানা। ১৯৮৮ সালে জেলা প্রশাসক এম এ মান্নান ফয়েজ লেকে চিত্তবিনোদন, শিক্ষা এবং গবেষণার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা স্থাপনের উদ্যেগ নেয়। প্রথমদিকে এই চিড়িয়াখানা জন সাধারণের জন্যে উম্মুক্ত থাকলেও ১৯৯৫ সালে দর্শনার্থীদের স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি বাড়তি লাভের বিষয়টি বিবেচনা করে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ফয়েজ লেক এবং চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা দুটি আলাদা গেট নির্মাণ করে এবং পৃথক টিকিটের মাধ্যমে প্রবেশের ব্যবস্থা করে।

চট্টগ্রাম চিড়িয়খানা প্রবেশ গেইট

প্রবেশ প্রধান ফটক চোখে পড়বে হাতি আর জিরাপের আলাপের একটি গেইট। টিকেট কেটে ভিতরে ডুকে প্রথমে দেখতে পাবেন বিশাল এক বানরের কাঁচা যেখানে যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির বানর রয়েছে। তারপর একে একে এশীয় কাংলা ভল্লুক, ভারতীয় সিংহ, কুমির, বিভিন্ন প্রজাতির বেশ কিছু হরিণ, গন্ধ গোকুল, তিতিরপাখি, সাদা বাঘ পক্ষীশালা যার মধ্যে লাভ বার্ড, লাফিং ডাভ, ফিজেন্ট, রিং নেড পেরোট,  কোকাটেইল এবং ম্যাকাও সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। বাচ্চাদের জন্য আছে ‘কিডস জোন’। প্রাণীখাদ্য সংরক্ষণে আছে স্টোর রুম, কোয়ারেন্টাইন রুম এবং অপারেশন থিয়েটারসহ আধুনিক প্রাণী হাসপাতাল। একবারে শেষ মাথায় দেখতে পাবেন উঁচু পাহাড়ের মত, যেখানে আছে নান্দনিক বৈঠকখানা। তারা আশেপাশে বেশ কিছু প্রানীর কাঁচাও দেখতে পাবেন। দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে পরিচ্ছন্ন শৌচাগার। বর্তমানে সেখানে ৬৭ প্রজাতির তিন শতাধিক পশু-পাখি আছে।

 

টিকেটঃ জনপ্রতি টিকেট মূল্য ৩০ টাকা।

টিকেট ইতিহাসঃ শুরুতে চিড়িয়াখানায় প্রবেশমূল্য ছিল ১ টাকা। পরে মূল্য বৃদ্ধি করে প্রথমে ২ টাকা থেকে পর্যায়ক্রমে ৩ টাকা, ৪ টাকা এবং ৫ টাকা করা হয়। ২০০৪ সালে ১০ টাকা, ২০১০ সালে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ, ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

 

কখন যাবেনঃ সারা বছর যাওয়ার উপযুক্ত সময়। তবে সকাল বা বিকাল বেলা যে কোন একসময় গেলে পুরাটা ঘুরা সম্ভব যদি ফয়েজ লেক (ইন্টারনাল লিংক) সহ যাওয়ার প্লান থাকে থাহলে সকালে যাওয়াই উত্তম।

হোটেল-মোটেলঃ

১. হোটেল প‌্যারামাউন্ট, নুতন ট্রেন স্টেশনের ঠিক বিপরীতে, চট্টগ্রাম; যোগাযোগঃ ০৩১-২৮৫৬৭৭১, ০১৭১-৩২৪৮৭৫৪

২. হোটেল এশিয়ান এসআর, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম; যোগাযোগঃ ০১৭১১-৮৮৯৫৫৫

৩. হোটেল সাফিনা, এনায়েত বাজার, চট্টগ্রাম; যোগাযোগঃ-০৩১-০৬১৪০০৪

৪. হোটেল নাবা ইন, রোড ৫, প্লট-৬০, ও,আর নিজাম রোড, চট্টগ্রাম; যোগাযোগঃ ০১৭৫৫ ৫৬৪৩৮২

৫. হোটেল ল্যান্ডমার্ক, ৩০৭২ শেখ মুজিব রোড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম; যোগাযোগঃ ০১৮২-০১৪১৯৯৫, ০১৭৩১-৮৮৬৯৯৭

এছাড়াও চিড়িয়াখানা বাইরের গেইট অনেক গুলো আবাসিক হোটেল দেখতে পাবেন, এই যে কোন একটিতেও থাকতে পারেন।

কিভাবে যাবেনঃ

ঢাকা থেকেঃ বিআরটিসি এর বাসগুলো ছাড়ে ঢাকা কমলাপুর টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছাড়ে, আর অন্যান্য এসি, ননএসি বাস গুলো ছাড়ে সায়দাবাদ বাস ষ্টেশন থেকে। আরামদায়ক এবং নির্ভর যোগ্য সার্ভিস গুলো হল এস.আলম ও সৌদিয়া, গ্রীনলাইন, সিল্ক লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক প্রভূতি। চট্টগ্রাম শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে ৮কিমি দূরে অবস্থিত অপরূপা চট্টগ্রাম চিড়িয়খানা।

অন্য শহর থেকেঃ দেশের প্রায় সব কয়টি জেলার সাথে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ রয়েছে। আপনি আপনার শহর থেকে নিজের পছন্দ মত বাসে এসে চট্টগ্রাম শহরে এ কে খানে নামবেন এবং সেখান থেকে সি এন জি বা রিক্সা যোগে চলে যাবেন ফয়স লেকে।

নদী পথেঃ বরিশাল, খুলনা পটুয়াখালী ইত্যাদি জেলার সাথে চট্টগ্রামের রয়েছে লঞ্চ/ইস্টিমার সার্ভিস। সুতরাং আপনি নদী পথে ও চট্টগ্রাম আসতে পারেন।

রেলওয়েঃ ঢাকা থেকে আশুগঞ্জ, ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া, কুলিল্লা, চান্দপুর, ফেনী হয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ট্রেন সার্ভিস রয়েছে। তাছাড়া সিলেট থেকে ও ট্রেন সার্ভিস রয়েছে।

চট্রগ্রাম শহরের জিইসি মোড় বা এ.কে.খান থেকে সিএনজিতে ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা নিবে। রিক্সায় নিবে ৪০-৫০ টাকা।

তথ্যসংগ্রহঃ ইন্টারনেট এবং চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (http://chittagongzoo.gov.bd/)

Similar Posts