ওজন কমানোর ১০টি নিয়ম মেনে চলুন সবসময়
ওজন কমানোর জন্য কোন একটি ডায়েট প্ল্যান শুরু করার কথা ভাবছেন? তার আগে কিছু কথা মাথায় রাখুন। আপনার শরীরে ফ্যাট আছে কিন্তু আপনি নিজে ফ্যাট বা চর্বি নন। সুতরাং ওজন কমানো নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগার কোন কারণ নেই। নিজেকে দোষারোপ করার বা লজ্জা পাবার ও কিছু নেই। এটি অন্য যে কোন চ্যালেঞ্জের মতো একটি ব্যাপার, যেখানে আপনি একটি লক্ষ্য সামনে রেখে এগিয়ে যাবেন। ডায়েটিং একটা স্কিল যা আপনাকে সংগ্রাম করেই অর্জন করতে হবে। দ্যা ডায়েট ট্র্যাপ সলিউশনের মতে, “যতক্ষণ আপনি স্মার্ট এবং যুক্তিসঙ্গত উপায়ে এগিয়ে যাবেন আপনি নিশ্চিত আপনার লক্ষ্যে পোঁছাবেন যেখানে আপনি যেতে চান। আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে এবং সব সময় তা বজায় রাখতে সাহায্য করতে আমরা কিছু টিপস শেয়ার করছি। বিশ্বের প্রখ্যাত কিছু ডায়েটেশিয়ান তাদের মতামত দিয়েছেন, যার ফলাফল পরীক্ষিত।
১। ডায়েট নয়, এটি আপনার লাইফস্ট্যাইলঃ
আপনি যদি ভেবে থাকেন এক মাস ক্রাশ ডায়েটে থাকবেন তারপর আবার আগের মত সব চলবে তাহলে আপনার প্ল্যান কখনো কাজ করবেনা। আপনাকে আপনার খাদ্য তালিকা এমন ভাবে প্ল্যান করতে হবে যেন সব সময় তা মেনে চলতে পারেন। আপনার লাইফস্টাইলের সাথে ডায়েট এর সমন্বয় করতে হবে। যেন মনে না হয় আপনি কোন ডায়েট এ আছেন। নাহলে কিছুদিন পর আপনি সব ছেড়ে দিবেন এবং আবার আগের জায়গায় ফিরে যাবেন। কখনো কখনো তা দ্বিগুণ ওজন বাড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
লুইসিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির পেনিংটন বায়োমেডিকাল রিসার্চ সেন্টারের ইনজেসটিভ বিহেবিয়ার ল্যাবের একজন সহকারী অধ্যাপক John Apolzan বলেন, আপনি প্রথম মাসে কতটুকু ওজন কমাতে পেরেছেন তা দিয়ে আপনি কতটা ওজন কমাতে পারবেন ভবিষ্যতে, তা অনুমান করা যায়। এই কারনে পুষ্টিবিদরা আপনার নতুন ডায়েট কৌশলের প্রথম দুই সপ্তাহ কঠোর হবার কথা বলেন। এসময় চিনি, এলকোহল এবং কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
স্যান ডিয়েগোতে একটি পুষ্টিবিজ্ঞান ও ব্যায়ামের চিকিত্সক এবং The SuperFoodsRx এর সহকারী অধ্যাপক ওয়েডি বাজিলিয়ান, বলেছেন, “তারপরে, আপনার খাদ্যের মধ্যে অল্প পরিমাণে এই খাবারগুলি সমন্বয় করে নিবেন, দীর্ঘমেয়াদী জীবনের জন্য “।
আপনার ডায়েট এমন ভাবে সেট করে নিন যেন, যেন তা একই সাথে স্বাস্থ্যসম্মত হয় আবার সবসময় মেনে চলা যায়। আপনি সপ্তাহে কয়টা ড্রিঙ্ক খাবেন তার হিসেব করে নিন। অথবা বিরিয়ানি, পোলাউ, এর পরিমান নির্দিষ্ট রাখুন। এতে মজাদার খাবার গুলো থেকে নিজেকে বঞ্চিত ও রাখা হলোনা আবার অতিরিক্ত ক্যালোরি ও গ্রহণ করা হলোনা। আপনার ও মন খারাপ থাকবেনা, আপনি ডায়েটে আছেন বলে বন্ধুদের সাথে মজার খাবার খেতে পারছেন না বলে।
২। ব্যায়াম করার সঠিক পন্থা আছেঃ
শারীরিক পরিশ্রম ক্যালোরি পোড়ায় এবং আপনার শরীরের মেটাবলিজমকে উদ্দিপ্ত করে। কিন্তু কেউ কেউ আছেন যারা যতটা অতিরিক্ত পরিশ্রম বা ব্যায়াম করাকে গুরুত্ব দেন ঠিক ততটা অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের বিষয়ে অসচেতন থাকেন।
মেটাবোলিক গবেষণার অধ্যাপক এবং উইল কর্নেল মেডিসিনে সমন্বিত ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের পরিচালক লুই অরনে বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের শারীরিক সিস্টেম জৈবিকভাবে অতিরিক্ত পাউন্ড ধরে রাখার জন্য প্রোগ্রাম করা। এর অর্থ হচ্ছে যখন আপনি অতিরিক্ত এক্সারসাইজ করছেন আপনার ব্রেইন আনুপাতিক হারে অধিক পরিমাণে ক্ষুধার্ত থাকার সিগন্যাল পাঠাচ্ছে। রিসার্চে দেখা যায় আপনি যদি খুব বেশী নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাহলে আপনি যতটা ক্যালোরি বার্ন করেছেন ততটাই আবার খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে ফেলছেন। কখনো তারও অতিরিক্ত গ্রহণ করা হয়ে যাচ্ছে। আপনি ভাবছেন ব্যায়াম তো করছিই।
৩। হালকা ক্ষুধায় এত পেরেশান হবেন নাঃ
অনেক মানুষের ওজন কমাতে অনেক কষ্ট হয় শুধুমাত্র তাদের ক্ষুধা নিয়ে উদ্বেগ এর জন্য। তাদের ধারণা ক্ষুধা লাগা খুবই খারাপ ব্যাপার। তাই এটা তারা যে কোন মুল্যে এড়াতে চান। তাই সব সময় তারা তাদের সাথে কিছু স্ন্যাক্স নিয়ে রাখেন। যখনি খিদা লাগে তখনি তা গলদকরন করেন, প্রয়োজন থাকুক আর না থাকুক।
আবার অনেকে স্ট্রেস এ থাকলে ও অতিরিক্ত খেতে থাকেন। অনেকে আবার মন খারাপ থাকলে কিংবা বিরক্তবোধ করলেও হাতের কাছে যা পান চিবাতে থাকেন। কি খাচ্ছেন, কত ক্যালোরি খাচ্ছেন হিসেব থাকেন তখন। আপনার তখনই খাবার গ্রহণ করা উচিৎ যখন মনে হয় আপনি যথেষ্ট মনোযোগ দিতে পারছেন না কাজে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়েই খাওয়া দরকার। দুটি খাবারের মাঝের এই টুকিটাকি খাবার আপনার ওজন বাড়াতে যথেষ্ট ভুমিকা রাখে।
তাই যখন আপনার এমন ক্ষুধা লাগা শুরু করবে HALT method ব্যবহার করুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন-আমি কি সত্যিই ক্ষুধার্ত? নাকিই রেগে আছি। একাকীত্বে ভুগছি নাকি ক্লান্ত অথবা বিরক্ত লাগছে? এরপরও যদি আপনি কি হচ্ছে বুঝতে না পারেন তাহলে একটা আপেল টেস্ট দিন। ভাবছেন এটি আবার কি! আপেল টেস্ট হলো -আপনি যখন ক্ষুধার্ত থাকবেন তখন একটি আপেল ও আপনার কাছে লোভনীয় এবং মজাদার মনে হবে। আর যদি তা না লাগে তাহলে সতর্ক হোন। অন্য কিছু হচ্ছে আপনার ভিতরে।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের আচরণগত থেরাপিস্ট Robin Frutchey বলেন- যে ক্ষেত্রে, নিজেকে খাদ্যের পরিবর্তে একটি প্রাইভেট কথা বলুন “ক্ষুধা যদি সমস্যা না হয় তাহলে খাদ্য এর সমাধান নয়,” । “ব্যোরড বা উদ্বিগ্নতার সাথে মোকাবিলা করার মতো অন্যান্য উপায় রয়েছে যেমন- বাইরে কোথাও হেঁটে আস্তে পারেন,, জিম এ যেতে পারেন, বা বন্ধুকে মেসেজ দিতে পারেন- এবং মজার ব্যাপার হল এসব জিনিসের নেতিবাচক প্রভাব শূন্য”
৪। সব ধরনের ক্যালোরি সমান ভাবে তৈরি হয়নাঃ
ওজন কমানোর সমীকরণ খুব সিম্পল। আপনি যতটা ক্যালোরি ব্যয় করবেন তার থেকে কম ক্যালোরি গ্রহণ করুন। তাহলেই ওজন কমতে থাকবে। কিন্তু কি ধরনের খাবার আপনি খাচ্ছেন, তা অনেক বড় প্রভাব ফেলে। প্রসেস করা খাবার, যেগুলোতে অনেক বেশী স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে এবং রিফাইন করা স্টার্চ এবং চিনি খেলে তা আপনার ব্রেনে সিগন্যাল পাঠায়- আপনার পেট ভরে গেছে,। আর খাবার খাওয়ার দরকার নেই। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, জাঙ্ক ফুড আপনার ভিতরে আসক্তি তৈরি করে। আপনি যতই খাবেন আরও খেতে মন চাইবে। এক প্যাকেট আলুর চিপস আপনার ক্ষুধা কাটাবেনা। যার ফলে আপনি খেতেই থাকবেন, এবং খেতেই থাকবেন
আপনার খাদ্য তালিকাকে আবার নতুন ভাবে সাজান। সবজি, হালকা প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যুক্ত করুন যা আপনাকে ভরপেট অনুভুতি দিবে খুব দ্রুত। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পুস্টিও সরবরাহ করবে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আপনার মস্তিস্ক যখন নিয়মিত ক্ষুধা এবং পেট ভরে যাবার সিগন্যাল পেতে শুরু করবে তখন আপনি খেয়াল করবেন আপনি আগের তুলনায় অনেক কম খেয়ে থাকতে পারছেন। আপানি প্রতিদিন কি কি খাচ্ছেন তা লিখে রাখুন। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যারা লিখে রাখেন তারা যারা লিখে রাখেন না তাদের তুলনায় দ্বিগুণ ওজন কমাতে পেরেছেন।
৫।প্রোটিন, উৎপাদিত খাদ্য এবং উদ্ভিদ থেকে তৈরি ফ্যাট এই তিন ধরনের খাবার বেছে নিনঃ
এই তিন ধরনের খাবার যদি আপনি প্রতিনিয়ত খান তাহলে ওজন নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ হবে আপনার জন্য।
প্রোটিন আপনার ক্ষুধাকে খুব দ্রুত পুর্ণ করে দেয়। Dr. Aronne এর মতে, ওয়েট লস প্রোগ্রামে যারা প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের দ্বিগুণ পরিমান গ্রহণ করেছেন( ১৫০ পাউন্ড ওজনের একজন নারীর দৈনিক ১১০ গ্রাম প্রোটিন দরকার হয়) তারা তাদের চর্বি থেকে আসা ওজনের ৭০% কমাতে পেরেছেন।
যেসব খাবার গাছ থেকে উৎপাদিত হয় তা আঁশ এ ভরপুর থাকে। এধরনের খাবার থেকে খুব বেশী ক্যালরি গ্রহণ করা কষ্টসাধ্য। তিন কাপ ব্রকলি, অনেক বেশী খাবার কিন্তু তাতে শুধুমাত্র ৯৩ ক্যালোরি থাকে! ফলের কথা ভিন্ন। অনেক বেশী ফল খেয়ে ফেলা যায় একসাথে। এবং তাতে অনেক বেশী চিনি থাকে। তাই খাওয়ার সময় হিসেব করে খেতে হবে কতটুকু খাচ্ছেন।
জলপাই তেল, এভোক্যাডো এবং বাদাম থেকে প্রাপ্ত তেল গুলো অনেক স্বাস্থ্যকর এবং আপনাকে সতেজ রাখে। আপনি যদি একেবারে তেল বাদ দিয়ে দেন খাদ্য তালিকা থেকে তাহলে আপনি হতাশায় ভুগতে পারেন অথবা নিজেকে বঞ্চিত মনে হতে পারে।চেষ্টা করুন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই তিন ধরনের খাবার রাখতে। মাংস, ডিম, সি-ফুড, শিম জাতীয় সবজি, ডাল, টফু, এবং দই খেতে পারেন।
৬।কোন বেলার খাবার বাদ দেয়া, জুস খেয়ে উপোষ করা, ক্রাশ ডায়েট আবার আপনার ওজন ফিরিয়ে আনবেঃ
আপনি যখন প্রায় না খেয়ে থাকেন অথবা ক্রাশ ডায়েটে যান, স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে আপনার কোন ধারনাই হয়না। আগে ঠিক করুন কোন ধরনের খাবার আপনার ক্ষুধা অথবা অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা কে ট্রিগার করছে। সেভাবে তাকে মোকাবেলা করুন। না হলে আবার সেই হারানো ওজন ফিরে আসবে। যত শক্ত আপানার ডায়েট প্লান হবে তত কঠিন হবে তা বজায় রাখা। আপনি যদি আপনার শরীরের প্রয়োজন মত প্রোটিন না গ্রহণ করেন তখন ধীরে ধীরে আপনার মাসল বা পেশী কমতে থাকবে, চর্বি নয়। তাই এভাবে ওজন কমানোটা একধরনের ভ্রম বলা যায়।
আপনার কতটুকু ওজন কমানো দরকার এবং কতটুকু আপনি খাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে আপনার খাদ্যতালিকা কেমন হবে। প্রতিদিন ৫০০-১০০০ ক্যালোরি বার্ন করার চেষ্টা করুন খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং এক্সারসাইজ দ্বারা। আপনি যদি প্রতিদিন ১৫০০ ক্যালরির মধ্যে আপনার খাদ্য তালিকা সীমাবদ্ধ রাখতে পারেন তাহলে আর আপনাকে উপোষ থাকতে হয় না। কিছু দিনের মধ্যেই আপনি পরিবর্তন দেখতে পারবেন।
৭। আপনি কীভাবে খাচ্ছেন তা আপনি কি খাচ্ছেন তার সমান গুরুত্বপূর্ণঃ
আপনি কি কি খেলেন আপনার ব্রেইন তা মনে রাখার জন্য দরকার কি খাচ্ছেন তার উপর ফোকাস করা। শারীরিক সন্তুষ্টি এবং মানসিক সন্তুষ্টি ঘনিষ্ঠভাবে বাঁধা। লোকেরা বলে থাকে তাদের জন্য ওজন কমানো কতটা কষ্টকর কারণ -তারা খেতে খুবই ভালোবাসে। যদিও তারা কি খাচ্ছেন তার দিকে খেয়াল করেন না । টিভি দেখতে , বই পড়তে, ড্রাইভিং করার সময় অথবা কাজ করতে করতে তারা অনেক বেশী খেয়ে ফেলেন। যার কোন হিসেব তাদের ব্রেনে থাকেনা। এভাবে প্রতিদিন অনেক বেশী ক্যালোরি তাদের শরীরে জমা হয়।
যখনই কোন কিছু খাবেন বসে পড়ুন কোন টেবিলে। আপনি যদি কাওকে জিজ্ঞেস করেন সে সারাদিন কি খেয়েছে, গবেষণায় দেখা গেছে যা সে দাঁড়িয়ে খেয়েছিলো তার বেশীর ভাগ খাবারের কথা সে ভুলে গেছে। তাই খেতে বসলে টিভি অথবা কম্পিউটার বন্ধ করুন, আপনার ফোন হাত থেকে রেখে দিন। যা খাচ্ছ্রন তার দিকে নজর দিন। গন্ধ নিন। আস্তে আস্তে চিবান। ভালো করে চিবিয়ে গিলে ফেলার আগে পরের বারের খাবার চামচে নিবেন না। ব্রিটিশ জার্নাল অফ নিউট্রিশান এর এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা এভাবে দেখে শুনে খাবার খান তারা, যারা গান শুনতে শুনতে অথবা টিভি দেখতে দেখতে খাবার খান তাদের থেকে ৩০% কম খাবার খেয়েছেন ।
৮। প্রতিদিন ওজন মাপা আসলেই অনেক বড় কাজ করেঃ
Cornell University তাদের ২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখিয়েছে, প্রতিদিন ওজন মাপা মানুষকে ওজন ঝরাতে সাহায্য করে। এভাবে আপনি বুঝতে পারবেন আপনি যেভাবে চলছেন তা কি ঠিক আছে নাকি পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এটি আপনাকে মোটিভেশন দেয়।
প্রতিদিন একই সময়ে ওজন মাপতে দাড়ান যদি বেস্ট রেসাল্ট পেতে চান। যদি দেখেন হটাত ওজন বেড়ে গেছে আগের দিনের তুলনার, তাহলে ভয় পাবার কিছু নেই। হতে পারে আগের দিন খুব বেশী লবণ খেয়ে ফেলেছিলেন অথবা আপনার পিরিয়ড ও এর কারণ হতে পারে। যদি দুই একদিনের মধ্যে এটা স্বাভাবিক হয়ে না আসে তাহলে খাদ্যা তালিকার দিকে নজর দিতে হবে আবার।
৯। অনেক বেশী স্ট্রেসে থাকা আর রাতে কম ঘুমানো আপনার প্রধান শত্রু
আপনি যখন খুব ক্লান্ত এবং টেনশনে থাকেন আপনার শরীরে cortisol নামক স্ট্রেস হরমোন তৈরি হয় যা আপনাকে অনেক বেশী কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করতে উজ্জীবিত করে। রাতে ভালো ঘুম না হলে আপনার শরীরের ghrelin এর লেভেল বাড়িয়ে দেয় যা ক্ষুধার সাথে সম্পৃক্ত হরমোন। আবার একই সময়ে তা লেপটিন নামক এক ধরনের হরমোনকে দমিয়ে রাখে। এই হরমোন আমাদের পেট ভরা এবং আমারা খাবার খেয়ে সন্তুষ্ট এমন সিগন্যাল মস্তিস্কে পৌঁছায়। যারা ডায়েটে আছেন তাদের মধ্যে যারা দুই সপ্তাহ ধরে সাড়ে পাঁচ ঘন্টা ঘুমিয়েছেন তারা , যারা সাড়ে আট ঘন্টা ঘুমিয়েছেন তাদের থেকে ৫৫% কম ফ্যাট ঝরিয়েছেন এবং ক্ষুধার্ত থেকেছেন- এটা Canadian Medical Association Journal এর এক প্রকাশনায় এটা জানা যায়।
১০। আত্মতৃপ্তি আপনাকে আবার আগের জায়গায় নিয়ে আসবেঃ
আপনি যখন একটু একটু করে স্লিম হচ্ছেন,তখন আপনার শরীর লেপটিন হরমোন কম নির্গত করা শুরু করে দেয়। আপনি আপনার মূল ওজনের ১০ ভাগ যদি কমান, তাহলে লেপটিন এর মাত্রা ৫০ ভাগ কমে যায়। Dr. Aronne এর মতে “আমাদের ব্রেন এমন ভাবে প্রোগ্রাম করা যে আপনার মনে হয় আপনি অনেক ওজন কমিয়ে ফেলেছেন। আসলে বাস্তবিক ততটা না। এবং সে আপনাকে বুঝায়, আপনার এখন অনেক বেশী খাবার দরকার এবং কম ক্যালোরি বার্ন করা দরকার।” একারণেই ওজন কমানো এবং তা ধরে রাখা অনেক ডিফিকাল্ট। আরেকটা কথা মাথ্য রাখা দরকার, আপনি যত হালকা হচ্ছে আপনার এনার্জির জন্য তত কম ক্যালোরি দরকার। আপনি হয়তো হাঁটায় আগে ১০০ ক্যালোরি বার্ন করেছেন, কিন্তু এখন সমান দূরত্বে হাটলে আপনার ৮০ ক্যালোরি বার্ন হবে।
আপনার শরীরের পেশি গুলোকে স্ট্রং করে তুলুন। ব্যায়ামে নতুন নতুন ধরন যোগ করুন। একই ধরনের ব্যায়াম একটা সময় পর আর কাজ করেনা। আপনার দৈনন্দিন ওয়ার্ক আউটকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলুন। প্রতিদিন ডায়েট থেকে ১০০ ক্যালোরি কমিয়ে ফেলুন। আপনার এখন ওজন কমেছে তাই অতিরিক্ত ক্যালোরির দরকার নেই।
আমাদের টিপস গুলো আপনাদের কেমন লাগে এবং আপনার জানা কোন টিপস থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানান। তাহলে অন্যরাও উপকৃত হবে।
স্যার আমি অনলাইনে ওজন কমানোর অনেক পোস্ট পরেছি কিন্তু আপনার মতো করে কেউ লিখতে পারে নি। আমার সমস্ত কনফিউশোন দুর হয়ে গেছে।আপনার সাইট ভিজিট করে আমি খুব উপকৃত হয়েছি।আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।