জেনে নিন কিভাবে বানাবেন ঘরোয়া স্বাদের ‘চিকেন দোপেঁয়াজা’ ?
চিকেন দোপেঁয়াজা !!! নামটা কি পরিচিত ? না হলে আসুন পরিচিত হই । সাথে জেনে নিন রান্নার প্রণালী। যাতে ঘরেই একদিন তৈরি করে প্রিয়জনদের কাছে মুরগীর মাংসের স্বাদ আরও একটু বাড়িয়ে দিতে পারেন।
মুরগির মাংস এমন একটি উপাদান যেটি বিভিন্ন আইটেমের প্রধান আকর্ষক হয়ে থাকে। মুরগীর মাংসের রোস্ট, ফ্রাই, কিংবা মাখামাখা করে তরকারি সব কিছুতেই কিন্তু আমাদের মুরগীর মাংসের প্রতি আলাদা চাহিদা থেকেই যায়। যারা নতুন নতুন খাবার তৈরি করে মুখের টেস্ট বাড়িয়ে দিতে চান তাদের জন্য আজ মুরগীর আর একটি আইটেমের রেসিপি শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
‘চিকেন দোপেঁয়াজা’ খুবই মজাদার ও দাওয়াতের আপ্যায়নে একটি পরিচিত নাম। বিশেষ করে চট্রগ্রামের মানুষজন এই রেসিপিটার সাথে খুব বেশি পরিচিত।
চলুন জেনে চিকেন দোপেঁয়াজা তৈরি করতে কি কি উপকরনের প্রয়োজন হবে।
- ১ কেজি পরিমাণ চিকেন/মুরগীর মাংস
- পেঁয়াজ (৪টি বড় সাইজের) যেহেতু এটি চিকেন দোপেঁয়াজা তাই চিকেনে পেয়াজের পরিমানটা একটু বেশি থাকবে।
- রান্নার তেল /৫ টেবিল চামচ।
- তেজ পাতা
- বড় ও ছোট এলাচ
- লবঙ্গ
- দাড়চিনি
- জিরা
- আদা রসুন বাটা
- হাফ চা-চামচ হলুদের গুঁড়া
- ধনে গুঁড়া
- জিরা গুঁড়া
- লাল মরিচ তবে রঙ আরও সুন্দর হওয়ার জন্য কাশমেরি মরিচ ব্যবহার করতে পারেন
- টমেটো সস
- টক দই (অবশ্যই অনেক আগেই ফ্রিজ থেকে নামিয়ে রাখুন, কারন সরাসরি ফ্রিজ থেকে ব্যবহার করা দই ফেটে যায় এবং তরকারির মাঝে দলা দলা একটা ভাব নিয়ে আসে)
- লবন
এই তো গেল উপকরনের কথা। আমরা যারা রান্না করি সবাই কম বেশি জানি কতটুকু রান্নার জন্য মশলা কতটুকু পরিমাণ ব্যবহার করতে হবে। আপনার রান্নার পরিমাণ অনুযায়ী উপকরনের কম কিংবা বেশি হতে পারে। মশলার ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য। আর যাদের ঝাল এবং লবনের স্বাদের মাঝে তারতম্য আছে তারা অবশ্যই সেই পরিমাণটাই ব্যবহার করবেন তবেই আপনার রান্না মজাদার হতে বাধ্য।
চলুন প্রস্তুত প্রণালী সম্পর্কে জেনে নেই-
- একটি প্যান কিংবা কড়াইয়ের মাঝে পরিমাণ মতো তেল ঢেলে নিন।
- তেল হালকা গরম হয়ে আসলে এর মাঝে সকল মশলা দিয়ে ৩ থেকে ৪ মিনিট ভালো করে কষিয়ে নিন।
- মশলা কিছুটা রঙ পরিবর্তন করলে তাতে কুচি করে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিন।
- পরিমাণ মতো লবন দিয়ে আরও ২ থেকে ৩ মিনিট কষিয়ে নিন।
রান্নার প্রক্রিয়ার একটু গুরুত্বপুর্ণ দিক হলো রান্নার রঙ দেখে বুঝতে পারা রান্নার অগ্রগতি কেমন হচ্ছে। তাই মশলার রঙ চেঞ্জ হওয়া দেখে আপনার বুঝতে হবে আপনার পরবর্তি কাজ কি। আর মশলা কষানোর সময় অবশ্যই চুলার আঁচ লো থেকে মিডিয়াম পর্যায়ে রাখতে হয়। হাই হিটে পুড়ে যেতে পারে সম্পুর্ণ কষ্ট!!
- এই পর্যায়ে টুকরো করে রাখা চিকেন/ মুরগীর মাংস গুলো দিয়ে দিন এবং ভালো করে মশলার সাথে মিশিয়ে ঢেকে রাখুন কিছুক্ষন ১০ থেকে ১২ মিনিটের মতো। এক্ষেত্রে কিন্তু চুলের আঁচ বাড়িয়ে রান্না করুন। এতে করে মুরগী ভালো করে সিদ্ধ হবে।
- মশলার সাথে মিশে যখন মুরগির মাংসের রঙ একটি লালচে কিংবা বাদামি হয়ে আসবে এই মুহুর্তে আদা ও রসুন বাটা দিয়ে দিন পরিমাণ মতো।
- আদা-রসুন বাটার কাঁচা গন্ধ না যাওয়া পর্যন্ত কষিয়ে নিন বেশ সময় নিয়ে।
- এই পর্যায়ে সামান্য একটু হলুদ দিয়ে দিন। অবশ্য এটি আপনার ব্যবহৃত হলুদের মান ও রং এর উপর নির্ভর করবে আপনি কতটুকু ব্যবহার করবেন।
এইবার পালা রান্না আলাদা একটা সুবাস ও স্বাদ নিয়ে আসার ।
- পরিমাণ মতো ধনে গুঁড়া
- সামান্য পরিমাণ জিরে গুঁড়া
- টমেটো সস এবং টক দই
সব গুলো উপকরণ মিক্স করে চিকেনগুলো কষিয়ে নিন আরো কয়েক মিনিট । আপনি বুঝতে পারবেন আপনার রান্নার অগ্রগতি।
চুলের অল্প আঁচে রেখেদিন ৭ থেকে ৮ মিনিটের মতো এরপর দেখুন আপনার কাঙ্খিত চিকেন দোপেঁয়াজা তৈরি। গরম গরম পরিবেশন করুন রুটি, ভাত কিংবা পোলাওয়ের সাথে।
# এই রান্না কিন্তু কোন প্রকার পানি ব্যবহার করা হয়নি। পেঁয়াজ, মুরগির মাংস, টমেটো সস এবং টক দই এই সব কিছুর মাঝে যে পরিমাণ পানি থাকে এটি দিয়েই সম্পুর্ন তরকারির পানির কাজ হয়ে যাবে তাই অতিরিক্ত পানির প্রয়োজন হয়না । তবে আপনাদের প্রয়োজন মনে হলে পানি ব্যবহার করতে পারেন।
বাহিরে খাবার খেয়ে টাকা এবং স্বাস্থ্য নষ্ট না করে মজাদার খাবার বাসায় তৈরি করুন, সুস্থ থাকুন।