মাইগ্রেন থেকে বাঁচার উপায় জেনে নিন

বিভিন্ন কারণে মাথা ব্যাথা হতে পারে। তার মধ্যে মাইগ্রেন একটি। অর্থাৎ মাইগ্রেন হচ্ছে একধরনের মাথা ব্যাথা। সাধারণত মাইগ্রেনের সমস্যা হলে মাথার একপাশে তীব্র ব্যাথা করতে শুরু করে। তবে গবেষণায় মাথার দুই দিকেও ব্যাথা হতেও দেখা গিয়েছে। এই ব্যাথা দীর্ঘস্থায়ী ও প্রচুর কষ্টদায়ক। তীব্র মাথা ব্যাথার সাথে সাথে বমি বমি ভাব কিংবা বমিও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে গা গুলিয়ে যাওয়া ও দেহে মুখে অস্বস্তি অনুভূত হতেও দেখা যায়। মাইগ্রেন যাদের হয় তাদের শব্দ, আলো, গন্ধ ও বাতাসের চাপের তারতম্য হয়ে থাকে।

migraine paine

কিভাবে বুঝবেন আপনার মাইগ্রেন হয়েছে?

মূলত এটি একধরনের মাথাব্যথা। কিন্তু মাথা ব্যাথা সত্ত্বেও এই অসুখের সাথে আরও কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। সেগুলো হলো-

* শব্দ আলো তাপ ইত্যাদিকে ভালো লাগবে না। বলতে গেলে সহ্য হবে না
* মাথা ব্যাথা শুরু হলে সেটা অনেকক্ষণ স্থায়ী হয় (কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন)
* চোখের পেছন দিকটা বেশি ব্যথা করবে
* বমি বমি ভাব হবে কিংবা বমি হয়ে যাবে

মাইগ্রেনের সমস্যা হওয়ার কারণ কী?

এই সমস্যার কারণ ঠিক বের করা না গেলেও অনেক ক্ষেত্রে বলা হয় জেনেটিক কারণে কিংবা বংশ পরম্পরায় এই সমস্যাটি অনেকের হতে পারে। এছাড়াও যে যে কারণে মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা যায় তা হলো-

* চকলেট বেশি খাওয়া
* অধিক নুন বা পনির/চীজ জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া
* দীর্ঘ সময় টিভি দেখা বা কম্পিউটার /ল্যাপটপ চালানো
* অনেকক্ষণ ধরে মোবাইল চালানো
* প্রচুর মানসিক চাপ কিংবা কোনো রকম দুশ্চিন্তা করা
* কোষ্ঠকাঠিন্য
* অতি উজ্জ্বল আলোয় কাজ করা
* মেয়েদের শরীরে হরমোন সংক্রান্ত পরিবর্তন (সাধারণত মাইগ্রেনের সমস্যা পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের বেশি হয়)
* হরমোনের ঔষধ খেলে
* ঘুমের সময় বদল কিংবা তারতম্য হলে
* শারীরিক ক্লান্তি
* আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণেও ব্যাথা উঠা নামা করতে পারে
* অতিমাত্রায় এলকোহল নেওয়া
* কাজের অনেক বেশি চাপ থাকা
* তীব্র গন্ধেও অনেকের এই সমস্যা হয়ে থাকে

মাইগ্রেনের ব্যাথা সাইনাসের সমস্যার মতোই তীব্র। একবার হয়ে গেলে আজীবন ভুগতে হয়।

মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ করার জন্য কী করা যেতে পারে?

এই সমস্যাটি একবার হয়ে গেলে সাধারণত কোনো ঔষধেই ঠিক হয় না। তাই এই সমস্যার প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। মাইগ্রেনের সমস্যা না হওয়ার জন্য যেসকল খাবার খাওয়া উচিৎ সেগুলো হলো-

* ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (শাকসবজি, ফলমূল)
* আলু বা আলুর তৈরি খাবার
* বার্লি। (গবেষণায় জানা গেছে বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক)
* ঢেকি ছাটা চালের ভাত
* হলুদ, সবুজ, কমলা রঙের শাক সবজি
* ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার
* ভিটামিন সমৃদ্ধ ফলমূল
* তিল, আটা, বিট ( এরা প্রত্যেকেই ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ)
* আদার টুকরো বা রস (বেটে বা ব্লেন্ডারে দিয়ে রস বের করে) পানিতে মিশিয়ে দিনে দুই বার খেলে

মাইগ্রেনের ব্যাথা হলে আরাম পাওয়ার জন্য কী করা উচিত?

ঔষধ খেলে সাময়িক আরাম পেলেও ঔষধ পরিহার করা উচিৎ। কিছুটা আরামবোধ করার জন্য যা যা করা যায় তা হলো-

* ভেজা কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখলে বা ব্যাথার স্থানে কোল্ড ব্যাগ ধরে রাখলে
* অন্য কাউকে দিয়ে ১০ মিনিটের মতো ম্যাসাজ
* আঙুরের রস খাওয়া
* সামান্য ক্যাফেইন খাওয়া যেতে পারে
* নির্দিষ্ট সময় ঘুম
* খুব অল্প বা খুব বেশি আলোতে কাজ না করা
* প্রচুর জল পান করা
* তীব্র ঠান্ডা ও কড়া গরম (রোদ) এড়িয়ে চলা

আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন।

Similar Posts