করোনা ও গুজব
সারা বিশ্বে এখন ছড়িয়ে পড়েছে এক ভয়াবহ আতংক। সেই আতংকের নাম করোনা ভাইরাস। একটি ক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক প্রানী, যার এক নামই আমাদের সবাইকে বন্দী করে রেখেছে মাসের পর মাস। সারা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ছড়িয়েছে প্রায় ৩৬লক্ষ। এবং মৃত্যুর সংখ্যা ২লাখ ৷ কিন্তু এই আতংকই যেনো যথেষ্ট ছিলো না এর সাথে নতুন মাত্রা যোগ করেছে গুজব তথা ভুয়া খবর।
সোশ্যাল এবং ডিজিটাল মিডিয়া গুলোতে, বিশেষ করে ফেইসবুক এবং ইউটিউবে নানান গুজব ছড়িয়ে গেছে। কিছু তথ্য যেমন খুবই পজিটিভ আবার কিছু খুবই নেগেটিভ। নিউজের হেডলাইন গুলো অনেকটা এমন, “জানা গেলো টমেটো খেলে করোনা বাড়ে”, “আজই জেনে নিন কবে শেষ হবে এই করোনার হামলা”। কিন্তু আসলে এই ভাইরাস এমন অনিশ্চিত যে আমরা কেউই জানি না, এই রোগের ছড়াছড়ি কবে শেষ হবে।
এই ডিজিটাল যুগে আসলে সঠিক তথ্য খুজে বের করাটাও একটা চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। তথ্য প্রযুক্তির এমন এক যুগে আমরা বসবাস করছি যেখানে আগে একটা চিঠি পৌছুতে লাগতো দুই সপ্তাহ, সেখানে একটা পোস্ট সবার কাছে ছড়িয়ে যেতে লাগে দু সেকেন্ড ৷ আসলে এখানে কারোরই তেমন দোষ নেই, আতংকের এমন সময়ে যেকোনো ভালো সংবাদকে আশাবাদী ভাবে দেখাটাই খুব স্বাভাবিক। আবার খারাপ সংবাদ গুলোকেও সত্য ভেবে আগলে নেওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। তবে একটু বুঝে চললেই এই গুজব গুলো এড়ানো সম্ভব, যেভাবে আসলে আমি নিজে করে থাকি। তো আজকে এখানে আপনাদের সাথে কিছু টিপস শেয়ার করছি যার মাধ্যমে আপনারা সহজেই ভুয়া নিউজ গুলো এড়িয়ে যেতে পারবেন।
১. যেকোনো তথ্য পাওয়ার পর প্রথমে যাচাই করুন, তথ্যের উৎস কি ?
– একটা খবর পাওয়ার সাথে সাথেই প্যানিকড হয়ে সেটাকে শেয়ার করে সবার মাঝে ছড়িয়ে হুলুস্থুল কান্ড বাধাবেন না। খবর টা যেখান থেকে পেয়েছেন, আগে সেটা যাচাই করুন যে সেই সোর্স কতটা রিলায়েবল৷ কোনো পেইজ, ওয়েবসাইট বা চ্যানেল যেটাই হোক, তার প্রাতিষ্ঠানিক কাল, অন্যান্য পোস্ট দেখে শিউর হোন, আপনার পাওয়া নিউজ টি কতটা অথেন্টিক। অথবা কোনো বন্ধুর থেকে তথ্যটি পেলেও তাকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিন সে তথ্য টি সঠিক জায়গা থেকে পেয়েছে কিনা ৷ এছাড়া বিভিন্ন ফ্যাক্ট চেকিং সাইটেরও সাহায্য নিতে পারেন ।
২. স্বনামধন্য কোনো নিউজ পোর্টালে বা টিভি চ্যানেলে খুজে দেখুন এমন কোন খবর আছে কি না
– স্বনামধন্য নিউজ পেপার এবং বিশেষত টিভি চ্যানেলের বেশিরভাগ নিউজই সঠিক হয়ে থাকে৷ তবে এক্ষেত্রেও খ্যাতি এবং প্রতিষ্ঠা অনুসারে চ্যানেল বেছে নেয়া উচিত৷ নিউজের ক্ষেত্রে অনলাইন নিউজ পোর্টাল গুলোকে বিশ্বাস না করাই ভালো।
৩. যেকোনো পোস্ট বিশ্বাস করার আগে কমেন্ট সেকশনে বাকি সবার মতামত পড়ে দেখুন
– যেকোনো পোস্ট এ যেকোনো তথ্য পেলে সোজা চলে যান সেখানকার কমেন্ট সেকশনে, দেখুন মানুষের মতামত কি৷ বেশিরভাগ মানুষ এটাকে বিশ্বাস করছে কিনা। সবার লেখা পড়লেই অনেক টা ধারনা করতে পারবেন তথ্য আসলে কতখানি সত্যি। পারলে অন্যের বিভ্রান্তি কমাতে নিজের মতামত টাও জানিয়ে আসতে পারেন।
এবং সর্বশেষে, নিজের উপর বিশ্বাস করুন। প্রতিদিন টিভি এবং নিউজ পেপার পড়ে সঠিক তথ্য গুলোর আপডেট নিতে থাকুন, তাহলেই নিজেই যাচাই করতে পারবেন যে কোনটা ভুয়া এবং কোনটি না। আশা করি এই টিপস গুলো ব্যাবহার করে সবাই ভুয়া খবর এড়িয়ে চলতে পারবো এবং ঠান্ডা মাথায় সুস্থ থেকে এই ভয়াবহ করোনা মহামারীর সময় পার করতে পারবো৷
সুস্থ থাকুন, শান্ত থাকুন, বাসায় থাকুন।
ধন্যবাদ ভাই!
টিপসগুলো কাজে আসবে অবশ্যই!
ধন্যবাদ
প্রতিদিন নতুন নতুন গুজবে কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। আপনার টিপসগুলো কাজে লাগবে আশা করি।
হ্যাঁ ভাই
ফেসবুকে corona awareness এর গ্রুপগুলা থেকে প্রচুর গুজব ছড়ায়। ?
এখন যা অবস্থা। গুজবকে সত্যি আর সত্যিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। খুব কম মানুষই গুজব নিয়ে সচেতন। আর গুজব এমন একটা ব্যাপার যে মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। আশা করি সবাই গুজবে কান দেওয়া থেকে দূরে থাকবেন।