পারফিউমের সুবাস কিভাবে দীর্ঘস্থায়ী করতে হয় জেনে নিন

নিজের প্রতি অন্য মানুষদেরকে আকর্ষিত করার জন্য সবথেকে প্রাচীন ও দারুন উপায় হচ্ছে সুগন্ধি বা পারফিউমের ব্যবহার। পারফিউম এর ব্যবহার শুধু যে অন্যকে নিজের প্রতি আকর্ষিত করতে হয় তা নয়, বরং নিজের কাছে নিজেকে ভালো লাগানোর জন্যও পারফিউম একটি দারুন বস্তু। ক্লান্ত শরীরে যখন অবসাদ নেমে আসে তখন একটু পারফিউমের গন্ধ শুঁকে নিলেই যেন মনটা আবার তরতাজা ফুরফুরে হয়ে যায়। পারফিউমের ভূমিকা তাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই নিজেদের পছন্দমতো পারফিউম ব্যবহার করে থাকেন।

how-to-make-perfume-fragrance-last-longer

পারফিউম স্মার্টনেস ও নিজস্ব পারসোনালিটির পরিচয় বহন করে। কর্মক্ষেত্রে পারফিউম ব্যবহার করা নিজেকে যেরকম তরতাজা ও ফ্রেশ রাখে, তেমনি আশেপাশের ব্যক্তিরাও সুঘ্রাণ উপভোগ করতে থাকে। ব্যস্ততার মাঝে একঘেয়েমি দূর করার জন্য নিজের শরীরে হালকা একটু পারফিউম স্প্রে করে নিলেই কোথা থেকে যেন রাজ্যের স্ট্যামিনা এসে দেহের উপর ভর করে। যার কারণে কাজের গতিও দ্রুততার সাথে বৃদ্ধি পায়।

শিরোনাম দেখে এতক্ষণে হয়তো বুঝে গিয়েছেন আজকের আর্টিকেলটি মূলত পারফিউম নিয়ে লেখা হবে। পারফিউম কি, পারফিউম কেন লাগাতে হয়, পারফিউম লাগানোর পর কি হয়, কোন ধরনের পারফিউম লাগানো উচিত ইত্যাদি সম্পর্কে আপনাদের সবারই কমবেশি ধারণা রয়েছে। আর্টিকেলটি তাই আর এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে   না। বরং আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হবে কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করলে শরীরে পারফিউমের সুবাস দীর্ঘক্ষন থাকবে।

পারফিউমের সুবাস স্বভাবতই দীর্ঘক্ষন শরীরে থাকবে না। একসময় না একসময় এর কার্যকর ক্ষমতা নিঃশেষ হয়ে যাবে। এবং আপনার শরীর থেকে আর পারফিউমের সুঘ্রাণ বের হবে না। এজন্য কি এখন আপনি সারা শরীরে পারফিউম মাখা শুরু করবেন?

মনে রাখবেন অতিরিক্ত পারফিউম ব্যবহারও কিন্তু আশেপাশের মানুষদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেননা সবকিছুরই একটি সীমা রয়েছে। যদি সেই সীমালংঘন করে অতিরিক্ত পারফিউম ব্যবহার করা হয় তবে কড়া গন্ধ দুর্গন্ধে পরিণত হয়ে মানুষের শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং অতিরিক্ত পারফিউম ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন শরীরের কোন কোন জায়গায় পারফিউম লাগালে এর সুবাস দীর্ঘক্ষন থাকবে।

শরীরের পালস পয়েন্টে পারফিউম ব্যবহার করলে তার সুবাস দীর্ঘক্ষন থাকবে

ব্যাপারটা বোঝার আগে জেনে নেই পালস পয়েন্ট কি এবং শরীরের কোন অংশগুলাকে পালস পয়েন্ট বলা হয়

পালস শব্দের অর্থ কি তা সকলেই জানেন। এর অর্থ হচ্ছে হৃদযন্ত্রের রক্তের আনাগোনা। অর্থাৎ পালস রেট বলতে হার্ট রেট বা এক মিনিটের মধ্যে আপনার হার্ট যতবার বিট করে তার সংখ্যা নির্দেশ করে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে পালস পয়েন্ট কেন পারফিউম ব্যবহার করলে তা দীর্ঘক্ষণ থাকবে।

এর কারণ কি?

পালস পয়েন্ট হচ্ছে শরীরের সবচেয়ে গরম স্থান। এই কারণে ওই গরম স্থানে যদি কোন আতর বা সুগন্ধি লাগানো হয় তার কার্যকরী ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হয়।। এক কথায় আমরা বলতে পারি, পালস পয়েন্ট গরম থাকে তাই এখানে পারফিউম স্প্রে করার পর তা সবসময় ছড়াতে থাকে। আশা করি ব্যাপারটা পরিষ্কার করতে পেরেছি।

এখন জেনে নেয়া যাক আমাদের শরীরের পালস পয়েন্ট গুলো কি কি

আমাদের শরীরে অনেক পালস পয়েন্ট রয়েছে। এগুলো হলোঃ
১) কানের পেছনের দিক
২) কব্জি
৩) হাঁটুর পেছনদিক
৪) গলা
৫) ঘাড়
৬) বুক
৭) ঘাড়ের জয়েন্ট ও
৮) পায়ের গোড়ালি

পালস পয়েন্ট গুলোর সবগুলোতে কি পারফিউম লাগাতে হবে? না কি যেকোনো একটা বা দুটোতে পারফিউম লাগানো উচিত
?

আসলে সব পালস পয়েন্টে একসাথে পারফিউম স্প্রে করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তাই যেকোনো একটা বা দুটো পয়েন্টে পারফিউম স্প্রে করতে হবে। সবচেয়ে ভালো ফলাফল হবে কানের পেছনে ও কাঁধের জয়েন্টে পারফিউম স্প্রে করলে। এছাড়া অনেকে পায়ের গোড়ালি বা হাটুর পেছনদিকে পারফিউম স্প্রের ব্যাপারটা জানেন না। কিন্তু তাদের জেনে রাখা ভালো যে, শরীরের নিচের অংশের পালস পয়েন্টের পারফিউম এর স্থায়িত্ব বেশি হয়। কারণ শরীরের নিচের পালস পয়েন্টগুলোর পারফিউমের সুগন্ধ ধীরে ধীরে উপর দিকে উঠে আপনাকে ঘিরে ফেলতে থাকে।

এছাড়াও পারফিউম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ দুটি তথ্য যা জেনে রাখা ভালো

১. পারফিউম ব্যবহারের পূর্বে বোতল ভুলেও ঝাকাবেন না।

২. খুব চড়া আলো বা সূর্যের আলো প্রবেশ করে এমন কোন গরম জায়গায় পারফিউমের বোতল রাখবেন না। ঠান্ডা এবং অন্ধকার কোন জায়গায় পারফিউমের বোতল যত্ন সহকারে রেখে দিবেন।

আশাকরি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা বুঝতে পেরেছেন পারফিউমের সুবাস দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য কি করতে হবে। তাহলে আজকে এখানেই বিদায় নিচ্ছি, ধন্যবাদ।

Similar Posts